বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত মেয়র প্রার্থী মো. মনির উদ্দিনের বদলের অন্যকে মনোনয়নের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। পৌরসভার শিমলা বাজার এলাকায় রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘সরিষাবাড়ী পৌরসভায় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে সত্যিকার মুজিব আদর্শের নেতা হিসেবে পরিচিত মনির উদ্দিনকে বাদ দিয়ে প্রার্থী হিসেবে অন্যজনকে মনোনয়নের জন্য কথিত পুনঃবিবেচনার এ দাবিতে অনুষ্ঠিত কর্মসূচি সুধীসমাজে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, রবিবার বিকেল ৩টার দিকে শিমলা বাজার এলাকায় একটি পক্ষের ঈন্ধনে নৌকার মেয়র প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বাজারের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি রোড প্রদক্ষিণ শেষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পৌরসভার কিছু লোকসহ পার্শ্ববর্তী কামরাবাদ ইউনিয়নের লোকজন ও শিমলা বাজারের ব্যবসায়ীদের যোগদান করানো হয়। এসময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক সোহাগ সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ইয়াসিন আলম শিপন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরল ইসলাম, শিমলা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হান্নান, সনজিত কুমার, রিজভী প্রমুখ। বক্তব্য প্রদানের সময় কয়েকজন যুবক ব্যানারে সামনে রাস্তায় শুয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। এদিকে নৌকার প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সুধীমহলের মতে, মো. মনির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ দেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যার অবদান রয়েছে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মনির উদ্দিন রাজনৈতিক কারণে একাধিকবার হামলা-মামলার শিকার ও কারাবরণ করেছেন। তার অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে গত বছর জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে সফরসঙ্গী করেন। তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়াটা দলের যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত ও ত্যাগের মূল্যায়ন হয়েছে বলে তৃণমল নেতাকর্মীদের মন্তব্য। কিন্তু প্রার্থী বদলের দাবিতে কর্মসূচি নির্বাচনে মনোনিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করার মতো হীনমন্যতা দলের কিছু লোকের মধ্যেই সমূহ ঈঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। যা বিরোধীপক্ষের মধ্যে উৎসাহের কারণ বলে অনেকের ধারণা। বিগত পৌর নির্বাচনে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী ও রাজাকারের নাতি রুকুনজ্জামান রোকন মনোনয়ন পেলেও তখন ওই পক্ষটির কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। তারা তখন কোথায় ছিলেন- সচেতন পৌরবাসীর এমন প্রশ্ন। এ ব্যাপারে শিমলা বাজারের অধিবাসী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, ‘মানববন্ধনের বিষয়টি আমি শুনেছি। দল যেহেতু সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেটা তো মানতেই হয়।’ প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন আপনার পক্ষ থেকে হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘কেউ বললে বলতে পারে। আমি যেহেতু মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম, পাইনি। কী আর করার আছে।’ দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-আমিন হোসাইন শিবলু বলেন, ‘দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমাদের তাকেই স্বাগত জানানো উচিৎ। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান নেওয়ার সুযোগ নেই। কেউ এমনটা করলে, তা জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সমঝোতার ব্যবস্থা করবেন বলে বিশ্বাস।’এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘পৌর নির্বাচনে দলের মধ্যে অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, আমরা তাকে স্বাগত জানাই। কিন্তু প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবি বঞ্চিত কারো কামনা থাকতে পারে, এটা যাতে ভুল বুঝাবুঝিতে না গড়ায় সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরাও দল থেকে এ ব্যাপারটা দেখবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।