Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অনলাইনে জুয়া

অ্যানড্রয়েড ফোনে ডিজিটাল মাধ্যমের অপব্যবহার রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের তরুণরা আসক্ত অপরাধ দমনে ‘জুয়া বিষয়ক’ আইন হচ্ছে : পুলিশ

খলিলুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

ক্যাসিনোর সম্রাটদের অনেকেই কারাগারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতায় প্রকাশ্যে জুয়া-হাউজি কমে গেছে। অথচ ডিজিটাল পদ্ধতির অপব্যবহার করে অ্যানড্রয়েড ফোনের মাধ্যমে জমজমাট হয়ে উঠেছে জুয়ার আসর। এটাকে নাম দেয়া হয়েছে- অনলাইন জুয়ার আসর। বিভিন্ন অ্যাপ খুলে চালানো হচ্ছে অনলাইন জুয়া। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খেলা যায়। এতে দেশের স্কুল-কলেজের ছাত্র, বেকার যুবক ও তরুণ শিক্ষার্থীরা এসব খেলায় জড়িয়ে বখে যাচ্ছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহল বশত এ খেলা শুরু করার পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, অনলাইন জুয়া সব থেকে বেশি খেলে থাকেন শিক্ষার্থীরা। অ্যাপের নিয়ম অনুযায়ী খেলার চিপস কিনতে প্রয়োজন পড়ে ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড। এখন সেটাও সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকে পড়ে অনলাইন জুয়ার দিকে। এক সময় তারা এ খেলায় আসক্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।

জানতে চাইলে সিটিটিসির ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের’ এডিসি নাজমুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অভিযোগ পেলেই সাইটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। এরই মধ্যে এ অপরাধের দায়ে অনেককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। অনলাইন জুয়াবিষয়ক একটি আইন করার প্রস্তুতি চলছে। আইন হয়ে গেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরো ভালোভাবে কাজ করা যাবে।

অনুসন্ধান করে জানা যায়, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লীগ খেলা ও মোবাইল গেমকে কেন্দ্র করে বেটিং তথা বাজি ধরা চলে। আয়োজকের ভূমিকায় থাকে একটি ওয়েবসাইট। সাইটগুলো নেট দুনিয়ায় ‘বেটিং সাইট’ নামে পরিচিত। দেশে-বিদেশি বিভিন্ন নামে বেটিং সাইট রয়েছে। ওই সাইটগুলোতে প্রথমে অ্যাকাউন্ট খুলে নিবন্ধিত হতে হয়। তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কার্ড বা অন্য কোনও মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে জুয়ায় অংশ নিতে হয়। পরে একটি চক্রের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিয়ে তা ডলারে রূপান্তরিত করে জুয়াড়িদের অ্যাকাউন্টে জমা করে। অনলাইন জুয়াড়িরা বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা আদান-প্রদান করে থাকে। সম্প্রতি অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট একটি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। ওই চক্রের সদস্য ওয়ানএক্সবেট সাইটে অ্যাকাউন্ট খোলা ও টাকা জমা দেয়ার জন্য রীতিমত ফেসবুক ও ইউটিউবে বিজ্ঞাপনও দিত। অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট জানিয়েছে, চক্রের মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কয়েক কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য রয়েছে। আর ওইসব অর্থ ক্রেডিট কার্ড ও ই-ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বেটিং সাইটের মালিকদের কাছে পাচার করা হয়। এরপর বেটিং সাইট ডলার পাবার পর জুয়াড়িদের অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ প্রদর্শন করে। এভাবেই জুয়াড়িদের হাত ধরে পাচার হচ্ছে টাকা। আবার এজেন্টদের হাত ধরে হুন্ডির মাধ্যমেও অর্থপাচার হচ্ছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশঙ্কা করছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, অনলাইন জুয়া তীর খেলা ভারতের শিলং থেকে শুরু হয়ে আসে সিলেটে। এরপর নেত্রকোনা হয়ে ঢাকায়। ‘তীর টুডে ডটকম’-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এ জুয়া। রমরমা এ জুয়ায় নিঃস্ব হয়েছে হাজারো মানুষ। পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ জানায়, ৭০ থেকে ৮০ গুণ লাভের লোভ দেখিয়ে ১ থেকে ৯৯ পর্যন্ত জুয়ার সংখ্যা বিক্রি করা হয়। একজন একাধিক সংখ্যা কিনতে পারতেন। দিনে দুবার ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এতে একজন বিজয়ী হয়ে লাভবান হলেও নিঃস্ব হয়ে পথে বসত হাজারো মানুষ। দিনমজুর, ট্রলিচালক, কয়লাশ্রমিক, ছোট ব্যবসায়ীসহ স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে জুয়ার এজেন্টরা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা চলে যায় সীমান্ত এলাকায়। সেখান থেকে টাকা হুন্ডির মাধ্যমে যায় ভারতের শিলংয়ে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, অনলাইনে জুয়া খেলে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের বিষয়টি আমার জানা নেই। এটা জেনে বলতে পারব। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে লিমিট রয়েছে। এছাড়া কি কি উদ্দেশে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে লেনদেন করা যাবে, সেটা বলে দেয়া আছে। সুতরাং, ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোনো জায়গায় হোটেল বুকিং, এয়ার টিকিট ক্রয় করা যেতে পারে। কিন্তু জুয়া খেলে ক্রেডিট কার্ডে টাকা বিদেশে পাচার করা সম্ভব নয়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ভুক্তভোগি একজন অভিভাবক জানান, তার ছেলে একটি নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। করোনা সংক্রমণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হতে হয় না। ক্লাস হয় অনলাইনে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তার ছেলে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। ওই অভিভাবক বলেন, আসক্তি এতোটাই যে, টাকার জন্য প্রথম দিকে সে তার মায়ের কাছে থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা বলে টাকা নিতো। এরপর ঘর থেকে টাকা চুরি করত। আত্মীয়-স্বজনের কাছে থেকে টাকা নিতো। এভাবে চলতে চলতে সে বড় অঙ্কের টাকা চুরি করে ধরা পড়ে। সন্দেহ হলে তার অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট দেখে আমরা বুঝতে পারি সে জুয়ায় এরই মধ্যে কয়েক লাখ টাকা খুইয়েছে।

কমলাপুরের বাসিন্দা এক শেয়ার ব্যবসায়ী জানান, তিনিও অনলাইনের জুয়ায় আসক্ত হয়ে লাখ লাখ টাকা হেরেছেন। করেনোর মধ্যে সময় কাটানোর জন্য তিনি প্রথমে ১শ’ দুশ’ টাকা করে খেলতে খেলতে আসক্ত হয়ে পড়েন। কয়েক লাখ টাকা হারার পর আমরাও সম্বিত ফিরেছে। তবে এখনও তিনি মাঝেমধ্যে খেলেন বলে স্বীকার করেছেন।

করোনাভাইরাসের মধ্যেও অনলাইনে সক্রিয় জুয়ারি সিন্ডিকেট। আর ওই সিন্ডিকেট বিভিন্ন কৌশলে মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মাধ্যমে লেনদেন হওয়া ওই টাকা দেশীয় দালালদের মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশই পাচার হচ্ছে বিদেশে। বিশেষ করে উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীরা অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন। অনলাইনে অপরাধ সংগঠিত হওয়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন অপরাধীরা।

রাজধানীর খিলক্ষেত, তেজগাঁও, নাখালপাড়া, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মালিবাগ, শান্তিনগর, কামরাঙ্গীর, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, মতিঝিল, কলাবাগান, পান্থপথ, বাংলামটর, ধানমন্ডি, বনানী, পুরান ঢাকার অলি-গলি ঘুরে দেখা গেছে, চার থেকে পাঁচজন করে গ্রুপ হয়ে মোবাইলে গেম খেলছেন। বাজি ধরে প্রতিদিন গেম খেলে থাকেন। আর গেমে পরাজিত হলে বিকাশ, রকেট, নগদের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে থাকেন তারা।

রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি টাকার জুয়া হয় মতিঝিল, উত্তরা, গুলিস্তান ও পুরান ঢাকা এলাকায়। এ ছাড়া পাড়া-মহল্লার ক্লাব ও দোকানের আড্ডায় চলছে বাজি ধরার খেলা। ক্রিকেট ও বিভিন্ন অ্যাপভিত্তিক খেলা ভালো বোঝে এমন তরুণরাই জুয়ার নেশায় পড়ছে বেশি। ১০-২০ টাকা থেকে লাখ টাকার বাজিতেও অংশ নিচ্ছে তারা।

ফার্মগেট এলাকায় একটি সেলুনে বসে জুয়া খেলার অংশ নিয়েছেন এক যুবক। তিনি জানান, প্রতিদিনই তিনি অনলাইনে জুয়া খেলায় অংশ নেন। ২০, ৫০, ১০০, ৫০০ ও হাজার টাকার বাজি ধরেন। হেরে গেলে বিকাশের মাধ্যমে তা পরিশোধ করেন তিনি।

করিম নামের আরেক জুয়াড়ি বলেন, অনলাইনে জুয়ার বাজির নানা ধরন রয়েছে। মোবাইল ফোনেও বড় অঙ্কের বাজি হয়। বাজির টাকা তৃতীয় ব্যক্তি বা মিডিয়ার কাছে বিকাশে পাঠাতে হয়। পরে যে বাজি জেতে তাকে টাকা দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় ওই পক্ষ ১০ শতাংশ কমিশন পায়। পুরান ঢাকা ও উত্তরা এলাকায় এমন বেশ কিছু মিডিয়া রয়েছে যারা জুয়ার টাকা বহনে বাহক হিসেবে ব্যবহৃত হন।

একাধিক সূত্র জানায়, ‘বেট৩৬৫ ডটকম’ নামে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ওয়েবসাইটে সব ধরনের খেলার আপডেটের পাশাপাশি বাজি ধরার প্রস্তাব দেয়া হয়। সেখানেও পড়ে বাজির হিড়িক। ‘বেট৩৬৫ লাইভ’ নামে এসেছে মোবাইল ফোনের অ্যাপ ভার্সন, যেখানে তরুণ-তরুণীরা দেদারছে জুয়া খেলছে। আরো কিছু সাইটে গেমিং কেন্দ্রীক অনলাইন জুয়া চলছে।

পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের উল্টো দিকে সারিবদ্ধভাবে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা রয়েছে। একটি অ্যাম্বুলেন্সে বসে কয়েকজন চালক মোবাইলে গেম খেলছেন। গ্রীন রোডের ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, উড়তি বয়সী তরুণ-তরুণীরা রাতের আঁধারে বসে আছেন। কয়েক গ্রুপ গ্রুপ করে মোবাইলে গেম খেলছেন। বাজি ধরে মোবাইলে তারা গেম খেলেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থেকে ক্লাস বন্ধ। তাই অলস সময় পার করতে অনলাইনে গেম খেলেন। বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বাসায় বসে তিনি গেম খেলে থাকেন। অনেক সময় বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে গেম খেলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, রাজধানীর পশ্চিম তেজতুরী বাজারের ৪০ নম্বর বাসায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করেন। করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে তার দুই সন্তান মোবাইলে গেম খেলেন। গেম খেলতে খেলতে বড় ছেলে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই সঠিক সময়ে খাওয়া-ধাওয়া করে না। পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে সে কথা বলে না। সব সময়ই মোবাইলে গেম খেলতে থাকে। এক পর্যায়ে তার ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি আসে। পরে তার ছেলের নিরাপত্তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন।

জানা গেছে, অনলাইনে জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা, সংঘর্ষ এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে। তবে দেশের কয়েকটি এলাকায় অনলাইনে জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করায় অভিযানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ জানায়, ‘বেট-৩৬৫’ নামে একটি অ্যাপসের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে দেশে এবং দেশের বাইরে চক্রের মাধ্যমে চলে জুয়া খেলা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা চললে বেশকিছু দিন ধরে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকার সাভার থানা এলাকা থেকে অনলাইন জুয়াড়ি প্লাটফর্মের এডমিন মো. সাব্বির আহমেদ কাওসার ও মো. মনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি স্মার্ট ফোন, ১৪টি সিম কার্ড ও তাদের স্মার্ট ফোনে অনলাইন জুয়া সাইট খোলা অবস্থায় জব্দ করে। এটিইউ জানায়, সাব্বির ও মনোয়ার ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ায় অংশগ্রহণ করতে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করত। আকৃষ্ট হয়ে অনেক সাধারণ লোক অনলাইন জুয়ায় অংশগ্রহণ করে সর্বশান্ত হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরিচয় গোপন করে পরস্পর যোগসাজশে অর্থপ্রাপ্তির প্রতারণা বা ঠকানোর উদ্দেশে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে অপর ব্যক্তির পরিচয় ও তথ্য সংগ্রহপূর্বক অবৈধ ই-ট্র্যানজেকশন করার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর জামতলা মোড় এলাকা থেকে অনলাইন জুয়া চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা, মোবাইল ফোনসহ জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, ‘বেট ৩৬৫’ নামে অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়ার আসর বসাতো চক্রটি। জুয়ার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টাকা আসতো। বিদেশ থেকেও জুয়াড়িরা অংশ নিতো খেলায়। এছাড়াও গত ১২ ফেব্রæয়ারি অনলাইনভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘বেট-৩৬৫’-এ জুয়া খেলার দায়ে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যবহার করে জুয়া খেলত। সেখান থেকে আয়ের ডলার, টাকায় কনভার্টের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করত একটি চক্র। মূলত মোবাইল টু মোবাইল কল ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের পরিচয় ঘটে।

সূত্র জানায়, অনলাইনভিত্তিক লুডু, ক্যারাম, তরুণদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হালের পাবজি গেইম, ফ্রি-ফায়ারসহ শতাধিক গেমে আসক্ত হচ্ছেন কিশোর-কিশোরীরা। আর এসব খেলায় বেশিরভাগ সাইট পরিচালনা করা হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। চাহিদা বাড়ায় প্রতিদিনই গজিয়ে উঠছে নতুন সাইট। গেমভিত্তিক মোবাইল অ্যাপসও আছে বলে জানা গেছে। তাই কিশোর-কিশোরীরাও এ ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এসব অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্মে নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এরই মধ্যে চক্রের অনেক সদস্য গ্রেফতার হয়েছে। বন্ধ করা হচ্ছে সাইট। যারা এখনও সক্রিয় তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তবে গত জুলাই মাসে চার হাজার জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন নামে-বেনামে জুয়ার সাইট খুলে বসে। এখনো প্রায় শতাধিক জুয়ার সাইট রয়েছে বলে জানা গেছে।



 

Show all comments
  • রানা ১১ আগস্ট, ২০২২, ৮:৩৭ পিএম says : 0
    খেলা কি কি ধরনের আমরা কি খেলতে পারবো।
    Total Reply(0) Reply
  • ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৪ এএম says : 0
    এগুলো বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • হেদায়েতুর রহমান ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
    এগুলো তরুন সমাজকে ধ্বংস করছে
    Total Reply(0) Reply
  • রায়হান ইসলাম ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৯ এএম says : 0
    এসব অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্মে নিঃস্ব হচ্ছে অনেকে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাইফুল ইসলাম ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৩৪ এএম says : 0
    অনলাইনে অপরাধ সংগঠিত হওয়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন অপরাধীরা।
    Total Reply(0) Reply
  • নুরজাহান ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫১ এএম says : 0
    রিপোর্টটি করার জন্য খলিলুর রহমান সাহেবকে ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • কামাল রাহী ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫২ এএম says : 0
    তরুণ সমাজকে বাঁচাতে হলে দেশ থেকে অনলাইনে জুয়া বন্ধে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Noyon ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:২৪ এএম says : 0
    এবার পরিবহনে নজর দেয়া হক বাংলাদেশ পরিবহন থেকে দৌনিক ২ কোটি টাকা চাঁদা নেয়া হয়
    Total Reply(0) Reply
  • Mbbs Shafiqul ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:২৫ এএম says : 0
    আবাসিক হোটেল এ মাদক পতিতা অহরহ পাওয়া যায় অনুসন্ধান করুন এবং সামাজিক অভক্ষয় এখনই রোদ করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Badal Sikdar ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:২৬ এএম says : 0
    হায়রে ব্রেন এই বুদ্দিদিয়ে টাকা কামানো বড় টারপ ব্যাপার বাট কি লাভ হলো। এই দুনিয়ায় যোর ৬০ কি৭০ বা৮০ বছর একটি লোক বেচে থাকে। এগুলি কি চিন্তা করেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • SK Shohag ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:২৭ এএম says : 0
    সরকারদলীয় প্রশাসন এমপি মন্ত্রী এরা যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দিচ্ছে নামে বেনামে অর্থ-সম্পত্তি করছে এগুলোর একটু তদারকি করুন
    Total Reply(0) Reply
  • Masud rana ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    সরকার খুব তাড়াতাড়ি জুয়া খেলা বন্ধ দিবেন আমি আসা রাখি
    Total Reply(0) Reply
  • Masud rana ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    সরকার খুব তাড়াতাড়ি জুয়া খেলা বন্ধ দিবেন আমি আসা রাখি
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুর রহিম ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:০৯ পিএম says : 0
    বাজি লাইভ নামে একটা অনলাইন বেটিং সাইট এখনও রমরমা চলছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • শিশির ১৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৫:৪৩ পিএম says : 0
    অনলাইনে জুয়া খেলা বন্ধ করা একদম সহজ কাজ। যদি বলেন কিভাবে? সেকথাও বলতে পারব‌।
    Total Reply(0) Reply
  • akash ১ জুন, ২০২১, ৮:০০ এএম says : 0
    আমিখেলতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • SOUROB ১৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৩৮ এএম says : 0
    আমি খেলতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shaju ৬ মার্চ, ২০২২, ১০:৫৫ পিএম says : 0
    আমি খেলতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Hridoy ১২ জুন, ২০২২, ২:৪৮ এএম says : 0
    জুয়া খেলতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Nur Muhammad ২৩ জুন, ২০২২, ৬:৩৫ এএম says : 0
    222333
    Total Reply(0) Reply
  • Mobaruk ১০ অক্টোবর, ২০২২, ১০:২৩ এএম says : 0
    গেইম খোলার নিয়ম
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনলাইনে জুয়া

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৮ ডিসেম্বর, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ