পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শীতের শুরুতেই পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। বনের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করছে এখানে। বছরজুড়ে সুন্দরবনে পর্যটকদের আসা-যাওয়া থাকলেও বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অববাহিকায় গড়ে ওঠা এলাকায় এই মুহূর্তে চলছে পর্যটকদের ভরা মৌসুম।
করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় কেউই বনে আসতে পারেনি। এ কারণেই শীতের শুরুতে বনে পর্যটক-দর্শনার্থীদের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে বলে জানান বন কর্মকর্তারা।
এদিকে, এ বছর সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি হওয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর। ফি বছর যারা সুযোগ পেলেই থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত ভ্রমণে যান তারাও এবার ছুটছেন সুন্দরবনে। আলাপকালে কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেন, নিজ দেশে এত মনোমুগ্ধকর জায়গা থাকলেও আগে দেখা হয়নি। করোনা আবহে বিদেশে যাবার পথ বন্ধ থাকায় এবার দেশের এই অপরূপ বন দেখে সত্যিই মুগ্ধ হলাম।
অন্যসব দর্শনীয় স্থানের চেয়ে সুন্দরবন ভ্রমণ একটু আলাদা। পর্যটকরা সাধারণত লঞ্চ, স্পীডবোট, ট্রলার ও দেশি নৌকায় করে সুন্দরবন ভ্রমণ করে থাকেন। বাগেরহাটের মোংলা, শরণখোলা এবং সাতক্ষীরা জেলার নলিয়ান হয়ে নৌ-পথে সুন্দরবন ভ্রমণে যান পর্যটকেরা। সুন্দরবনের ভেতরে প্রবেশ করতে হলে দেশি-বিদেশি সব ধরনের পর্যটকদের বন বিভাগ থেকে সরকারের রাজস্ব খাতে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে অনুমতি নিতে হয়।
বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভ‚মি। নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে গড়ে ওঠা অপরূপ সুন্দরবন পর্যটকদের আকৃষ্ট করে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখে অভিভ‚ত হচ্ছেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।
সুন্দরবনের করমজল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র, হারবাড়িয়া, কোকিল মনি, কটকা, হিরন পয়েণ্ট ও বঙ্গবন্ধু চর পর্যটকদের পছন্দের জায়গা। পশুর নদী দিয়ে টুরিস্ট বোট, লঞ্চ আসতে দেখা যায় সুন্দরবনে। বিশেষ করে গত নভেম্বরের শুরু থেকেই করমজল এলাকায় পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। দেশি পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশী দর্শনার্থীরাও আসছেন নিয়মিত। সুন্দরবনকে একনজর দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় করছেন প্রচুর পর্যটক।
সুন্দরবন থেকে ফিরে ঢাকার বাসিন্দা মনির হোসেন জীবন ইনকিলাবকে বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলাম। সুন্দরবন খুলে দেয়ার খবর পেয়ে পরিবার নিয়ে ছুটে এলাম এখানে। বনে সৌন্দর্য উপভোগ করার অনুভ‚তি সত্যিই অন্যরকম। দেশে করোনা সংক্রমণ দ্বিতীয় ধাপ চলছে। তবুও ভ্রমণপিপাসুরা থেমে নেই। সব বাধা উপেক্ষা করেই তারা প্রিয় স্থানগুলোতে ঘুরছেন।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক সুন্দরবনের মধ্যে প্রবেশ করছেন। প্রতিদিন ৪০-৫০টি বোট, লঞ্চ প্রবেশ করছে। বনে পর্যটকদের আগমন আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। প্রতিদিন সামরিক বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সুন্দরবন দেখতে আসছেন।
সুন্দরবনের করমজল পর্যটকদের আকর্ষণের মূল কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, বনের মধ্যে প্রবেশ করলেই বানর ও হরিণ খুব কাছ থেকে দেখা যায়। অনেক সময় হরিণ মানুষের সন্নিকটে চলে আসে। সে কারণে মূলত মোংলা, বাগেরহাট ও খুলনা এলাকা দিয়ে সুন্দরবনের করমজলে বেশি প্রবেশ করেন পর্যটকরা। এ বছর ঢাকা, সিলেট, রংপুর ও দিনাজপুর থেকে অনেক পর্যটক এসেছেন। বন বিভাগের পক্ষ থেকে পর্যটকদের সঙ্গে আন্তরিক ব্যবহার ও সহযোগিতা করা হয়।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটক জানান, বিভিন্ন বইতে পড়া সুন্দরবন নিজেদের চোখে দেখে তাদের অনেক ভালো লেগেছে। বনের বিভিন্ন গাছপালা, কুমির, হরিণ এবং বানরসহ বিভিন্ন পশু-পাখি তারা দেখেছে।
ভ্রমণকারীরা জানান, সুন্দরবনের সৌন্দর্য দেখলে মনে হবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। গোটা সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। সুন্দরবন দেখে তারা মুগ্ধ। সুন্দরবনে আসা-যাওয়ার সুব্যবস্থা ও থাকা-খাওয়া এবং সার্বিক নিরাপত্তাসহ আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।