পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিজিবি-বিএসএফ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানা থাকার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য অনুরোধ করা হয়। ভারতের গুয়াহাটি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলনে এই অনুরোধ জানানো হয়েছে। দুই বাহিনীর মহাপরিচালকের যৌথ প্রেস বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজিবির অনুরোধের জবাবে বিএসএফ মহাপরিচালক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ওই সব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন (২২-২৬ ডিসেম্বর)-এ অংশগ্রহণ করেন। উক্ত সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী রাকেশ আস্থানা, আইপিএস এর নেতৃত্বে ভারতের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহন করেন। বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিক দুর্বৃত্ত কর্তৃক বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত ও মারধরের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে অধিক কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকাসমূহে রাত্রিকালীন যৌথ টহল পরিচালনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। এছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী আরও বেগবান করা, যথার্থ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সর্বদা দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের প্রশংসা করে এবং তারা প্রত্যাশা করে যে, বিজিবি এবং বিএসএফ সীমান্ত হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং অপরাধীদেরকে হত্যার পরিবর্তে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানান। সীমান্তে হত্যার ঘটনা অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে বিএসএফ মহাপরিচালক আশ্বাস প্রদান করেন। সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষা ও সহিংসতা রোধে যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে উভয় পক্ষই সীমান্তে জনসচেতনতা কর্মসূচি জোরদারকরণ, দুর্গম অঞ্চলে যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সমন্বিত টহল বৃদ্ধি করে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়।
বিজিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিজিবি মহাপরিচালক সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরণের আন্ত:সীমান্ত অপরাধ যেমন- মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদি পশু, জালমূদ্রা, স্বর্ণ চোরাচালানের ব্যাপারে উদে¦গ প্রকাশ করেন এবং এসকল অপরাধ দমনের জন্য বিএসএফ এর সহযোগিতা কামনা করেন।বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন যে, অবৈধ মাদক পাচারের ফলে উভয় দেশের যুব সমাজের মধ্যে মাদকাসক্তি মারাত্বকভাবে বেড়েছে যা উভয়ের জন্যই বিপদজনক এবং এটাকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করা দরকার।
সম্মেলনে বিজিবি প্রধান বলেন, প্রচলিত আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে ভারতীয় নাগরিক এবং বিএসএফ সদস্যরা প্রায়শই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে যা দু›টি বন্ধুত্বপূর্ণ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে- এ বিষয়ে বিজিবি মহাপরিচালক উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখতে বিএসএফের সহযোগিতা কামনা করেন। উভয় পক্ষই অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম বা সীমানা লঙ্ঘন থেকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে বিরত রাখতে সম্মত হয়েছে এবং একই সাথে উভয় বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সীমান্তের নিয়মনীতি বজায় রাখার ব্যাপারে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। গত ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনে (ভার্চুয়ালি) ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী জেলার পদ্মা নদীর ১.৩ কি.মি. নিরীহ পথের অনুরোধ বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ মহাপরিচালককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিষয়টি অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক ভারতের মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর আস্তানার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্য অনুরোধ করেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র কথা উল্লেখ করে বিএসএফ মহাপরিচালক ঐসব আস্তানার (যদি থাকে) বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। উভয় পক্ষই পূর্বে অবগত করা ছাড়া সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।