Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আঙ্গুলের ছাপ না থাকায় পুঠিয়ার অমলের পরিবার চরম বিপাকে

পুঠিয়া (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:৫৩ এএম

পুঠিয়ার আমলের পরিবার আঙ্গুলের ছাপ না থাকায় চরম বিপাকে রয়েছে। উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের পঁচামাড়িয়া বাজার সংলগ্ন হিন্দুপাড়ায় অমলের পরিবারটির বসবাস। অ্যাডারমাটোগ্লিফিয়া বা ইমিগ্রেশন ডিলে ডিজিজ নামে বংশগত এ রোগে আক্রান্ত পরিবারটি। বিরল এ রোগটি সচরাচর দেখা যায়না বলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভিমত। বংশ পরমপরায় তাদের এ রোগটি চলে আসছে বলে অমল সরকার জানিয়েছেন। অমল সরকারের সাথে কথা বলে জানাযায়, তাঁর বাবা মৃত জগবন্ধু সরকার ও তার বাবা মৃত কৃষ্ণবন্ধু সরকারের ছিলো না আঙ্গুলের ছাপ। যেহেতু আঙ্গুলের দিকে তাকালে আর দশ জনের মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য বুঝা যায় না বা সেসময় আঙ্গুলের ছাপের কোন দরকার হয়নি তখন এ বিষয়ে কারো নজরে আসেনি বলে অমল জানায়। অমল সরকারের ৫ ভাইয়ের মধ্যে ৪ চার ভাইয়ের আঙ্গুলের ছাপ নাই। তবে এই পরিবারের মেয়েদের এ ধরনের কোন সমস্যা নেই বলে অমল জানায়। ইতি মধ্যে অমলের দুই ভাই মারা গেছেন। এর মধ্যে একজনের আঙ্গুলের ছাপ ছিলো না। বর্তমানে তার বড় ভাই নিরঞ্জন সরকার (৫৮) যশরের ভূমি অফিসে কর্মরত আছেন তার ছোট ভাই গোপেশ সরকার (৫৪) দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্সরে বিভাগে কর্মরত আছেন এবং ছোট ভাই অমল সরকার (৪৫) বাড়িতে কৃষি কাজ করেন। এই তিন ভাইয়ের হাতের আঙ্গুলের ছাপ নাই। অমল সরকারের বড় ভাই নিরঞ্জন সরকারের বড় ছেলের এ ধরনে কোন সমস্যা না থাকলেও তার ছোট ছেলে অদিত্য সরকার (১৮) ও অমল সরকারের দুই ছেলে অপু সরকার (২২) ও অনু সরকার (১৫) এর হাতের আঙ্গুলে ছাপ নাই। গত দুই দশক আগেও তাদের আঙ্গুলের ছাপ না থাকায় কোন ধরনের সমস্যার সম্মুখিন হতে হতো না। তবে বর্তমানে রায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করায় আঙ্গুলের ছাপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ কারণে পরিবারটি বিপাকে পড়েছে। ভোটার আইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইন্সে ও পাসপোট করা ও বায়োমেট্রিক হাটিরার ক্ষেত্রে আঙ্গুলের ছাপ দিতে গিয়ে তারা বিপাকে পরতে হচ্ছে তাদের। ভোটার আইডি কার্ডে আঙ্গুলের ছাপ দিতে গিয়ে প্রথম জানতে পারেন অমল তার আঙ্গুলে ছাপ নাই। পরে আঙ্গুলের ছাপ নাই লিখে ভোটার আইডি কার্ড দেওয়া হয়। এছাড়াও অনেক চেষ্টা করে ডাক্তারের সার্টিফিকেটি দেখিয়ে পাসপোর্ট করতে পারলেও এখন পর্যন্ত মোটরসাইকের ড্রাইভিং লাইন্সে করতে পারেনি তাদের কেউ। এছাড়াও তাদের হাতের আঙ্গুলের ছাপ ছাড়াও পায়ের আঙ্গুলেও ছাপ নাই বলে তিনি জানান। এধরনের বিড়ম্বনা থেকে তারা মুক্তি চায় বলে অমল সরকার জানান। আঙ্গুলে ছাপা না থাকায় তাদের কোন ধরনের শারিরিক আসুবিধা হয় কি না জানাতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের হাত কখনও ঘামে না। বছরের সবসময় তাদের হাতে ফাঁটা দাগ থাকে। তবে শীতে মধ্যে বেশি ফাঁটা দাগ দেখা যায়। এই ফাঁটা দিয়ে কখন কখন রক্ত বের হয়ে থাকে। এতে কাজ কাম করতে অনেক অসুবিধা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাক্তার নাজমা আক্তার জানান, আঙ্গুলের ছাপ নেই এমন পরিবার পুঠিয়াতে আছে আমার জানা নেই। পরে পরিবারটির কথা জানালে তিনি তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিবেন বলে জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ