Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কনকনে ঠান্ডা হাওয়া ঘন কুয়াশায় শীতকষ্ট

অত্যধিক জলীয়বাষ্পে বাতাসে মিশ্রিত ধুলোবালি-ধোঁয়ায় দূষণমাত্রা ব্যাপক : বাড়ছে রোগব্যাধির প্রকোপ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

শৈত্যপ্রবাহের পরিধি ও তীব্রতা আরো কিছুটা কমেছে। দিনের বেলায় সূর্যালোক ও রোদের তেজ যথেষ্ট বেড়েছে। কোথাও কোথাও আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা রয়েছে। এর ফলে দিন-রাতের তাপমাত্রার পারদ বাড়তির দিকে এবং মৌসুমের বর্তমান সময়ের স্বাভাবিক শীত পড়ছে। তবে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে হিমালয়ের হিমেল হাওয়া এবং নদী অববাহিকাসহ অনেক এলাকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে।

এতে করে ঠান্ডা কনকনে বাতাসে শীতকষ্ট-দুর্ভোগে ভুগছেন বিশেষত উত্তরাঞ্চল এবং আংশিকভাবে মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। দিনমজুর, শ্রমিক, হতদরিদ্র শ্রমজীবীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে কুয়াশাপাতে বোরো চারা-বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি এবং শাক-সবজি, ফল-মূলে ছত্রাকজনিত রোগ-বালাইয়ের ব্যাপারে কৃষকদের সতর্ক করছেন কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সর্ব-উত্তরের জনপদ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও কুমিল্লায় রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৬ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে। ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়। গতকাল ঢাকার পারদ ছিল সর্বোচ্চ ২৫.৪ এবং সর্বনিম্ন ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামে যথাক্রমে ২৬ এবং ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেশিরভাগ জেলায় দিন ও রাতের পারদ স্থানভেদে গত দু’দিনে এক থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। দিনের পারদ অধিকাংশ স্থানে ২৫-২৬ ডিগ্রির আশপাশে রয়েছে।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গোপালগঞ্জ, কুমিল্লা, তেঁতুলিয়া, চুয়াডাঙ্গা, রাজারহাট এলাকাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র পড়বে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা। অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে। এরপরের ৫ দিনের শেষের দিকে রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।

বায়ুদূষণে ‘দুর্যোগময়’ অবস্থা : অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশ, বাতাসে মাত্রাতিরিক্ত হারে জলীয়বাষ্প, মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার সাথে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় বাতাসে অতিমাত্রায় ভাসছে ধুলোবালি ও ধোঁয়া। এতে করে শুষ্ক আবহাওয়ায় বিশেষত রাজধানীসহ বৃহত্তর ঢাকা, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বায়ুদূষণ বেড়েই চলেছে। বায়ুদূষণের কারণে সর্দি-কাশি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট-হাঁপানি, গলাব্যাথা, টনসিল ও ফুসফুসের জটিলতা, মাথাঘোরা, স্নায়ুবিক সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে রোগীর ভিড় বাড়ছে।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকায় বায়ুমান সূচক (একিউআই) ও বায়ুদূষণ মাত্রা (পিএম ২.৫) ছিল আইকিউএয়ার’র পর্যবেক্ষণ তথ্য মতে ২৬২। যা খুবই অস্বাস্থ্যকর। বিশে^র সর্বাপেক্ষা বায়ুদূষিত নগরের তালিকায় ঢাকা তৃতীয় অবস্থানে। আকুওয়েদার’র পর্যবেক্ষণে গতকাল ঢাকার বায়ুমান সূচক (একিউআই) ও দূষণমাত্রা ২৫৪। যা ‘দুর্যোগময় বায়ুদূষণের পর্যায়ে’। আগামী শনিবার পর্যন্ত ঢাকায় বায়ুদূষণ অব্যাহত থাকার এবং বায়ুমান সূচক ২৫০ থেকে ৩শ’তে থাকার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। বায়ুদূষণে একই নাজুক দশা চট্টগ্রামের। চট্টগ্রামে বায়ুমান সূচক (একিউআই) ও বায়ুদূষণ মাত্রা ছিল আকুওয়েদার’র পর্যবেক্ষণে ২৬০।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বাতাসে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতি আবারও বেড়ে গেছে। গতকাল ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বা জলীয়বাষ্পের হার ছিল সকালে ৯৭ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৭৩ শতাংশ। যা মৌসুমের এ সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে ঊর্ধ্বে। এদিকে উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শৈত্যপ্রবাহ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ