বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সাজানো একটি হত্যা মামলা দিয়ে রিয়াজ নামে এক ব্যবসায়ীকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ও সাধারন ব্যক্তিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সামাজিক ও ব্যবসায়ীক বিরোধের জের ধরে একটি নিরিহ পরিবার কে হত্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার অভিযোগে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়। অপরাধ না করেও অপরাধী হয়ে জেলের ঘানি টানতে হচ্ছে তাকে।
ঘটনাটি ঘটেছে রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন গ্রামের সুফিরহাট এলাকার বশির আহম্মদের ছেলে রিয়াজ (৩২) নামে এক নিরীহ ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
জানাজায়,রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন এলাকার আব্দুল কাদেরের মেয়ে স্কুলছাত্রী কুলসুম (১০) ২০১৭ সালের মে মাসের ১৪ তারিখে হারিয়ে যায়। পরে একই বছরের মে মাসের ২০ তারিখ বিকেলে একই এলাকার মুরাদ মিয়ার ছাড়াবাড়ীতে অর্ধ গলিত অবস্থায় তার লাশ দেখতে পায়। এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে কুলসুমের মা বিবি জোবেদা বাদী হয়ে ২০১৭ সালের মে মাসের ২৪ তারিখে রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।যার নং ১২/২৪/০৫/২০১৭
প্রথমে এই হত্যা মামলায় রিয়াজ কে সন্দেহজনক ভাবে আসামী করা হলেও কতিপয় লোকের প্ররোচনায় এখন সর্বস্বান্ত রিয়াজের জীবন। টানলে ৪ মাস ১০ দিন জেলের ঘানি।
ভুক্তভোগী রিয়াজের সাথে সরাসরি কথা বলতে এই প্রতিবেদক হাজির হন ঘটনাস্থল সুফিরহাট এলাকায়। কথা হয় এলাকার নানা শ্রেনী পেশার লোকজনের সাথে।বেরিয়ে আসে কুলছুম হত্যার নানা রহস্য। মূল ঘটনাটা কি এই নিয়ে এলাকাবাসীর মতামত জানতে চাইলে সাহেদ আলী মনু,স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল গণী ও মুরাদ বলেন কুলসুম হত্যার ঘটনাটির সাথে রিয়াজ মোটেও জড়িত নয়। কি ভাবে রিয়াজ কে এই ঘটনার সাথে জড়ানো হলো তা আমরা এলাকাবাসী হতভম্ব। একজন নিরাপরাদ লোক কে জড়িয়ে হয়রানী করার কোন মানে হয়না।
এসময় কান্না জাড়িত কন্ঠে মামলার আসামী রিয়াজ জানান,দীর্ঘ এক যুগ ধরে সুফিরহাট বাজারে ওষুধের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। ব্যবসায়ীক অবস্থা ভাল দেখে স্থানীয় অন্য ওষুধ ব্যবসায়ীদের চোখের কাঁটা হয়ে দাড়ান রিয়াজ। এছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক সামান্য বিরোধ কে কেন্দ্র করে একটি মহল একটি নিরাপরাদ শিশু হত্যার মত জগণ্নতম অপরাধের সাথে নিরীহ রিয়াজ কে জড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।সামাজিক সামান্য বিরোধ থাকলেও একজন বাবা হিসেবে এই হত্যা মেনে নিতে পারেননি রিয়াজ।একজন বাবা হিসেবে তিনি কুলসুমের মত একটা মাছুম শিশু হত্যার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয় বলে বার চোখের জল পেলে নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন। ঘন্টার মত সময় ধরে কথার মাঝে শুধুই চোখের জল পেলে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে বিচার চান রিয়াজ।কে বা কাহার তাকে এই মামলায় জড়িয়ে তার জিবন ও পরিবার কে সর্বশান্ত করে দিলো,এর বিচার তিনি আল্লাহর নিকট দিয়ে রিয়াজ বলেন পবিত্র কোরআন বুকে নিয়ে বলতে পারবো আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নয়। আমাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।আমি সেখানেও বলেছি। আমি অপরাধ করিনি।
রহস্যজনক ভূমিকার কারণে রামগতি উপজেলার স্কুলছাত্রী কুলসুমের হত্যাকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এতে একটি পরিবার আজ সর্বশান্ত হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
মামলার এজহার থেকে জানাজায়,পুলিশ মুরাদ মিয়ার ছাড়াবাড়ী থেকে কুলসুমের লাশ উদ্ধার করেন রামগতি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন।বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র জানায়,কুলসুম হত্যার আসামী রিয়াজকে জড়ানোর নেপথ্যে রয়েছে ব্যবসায়ীক পূর্বশত্রুতার জের। সে কারেণই স্থানীয় প্রভাবশালী,ব্যবসায়ী ও অপরাপর কিছু লোকজন এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে।
প্রথমে পুলিশ পরে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করেন। সকল রিপোর্টে রিয়াজ এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নয় বলে রিপোর্ট প্রদান করেন সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা। এখন মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)নোয়াখালীকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন আদালত।
এলাকাবাসী ও বাজার ব্যবসায়ীদের অভিমত কুলছুম হত্যাকান্ডের সাথে রিয়াজের সম্পৃক্ততা নেই।তা পুলিশ ও সিআইডির রিপোর্টেই প্রমান করে।
সঠিক তদন্তেই বেরিয়ে আসবে আসল ঘটনা।অন্যায়ভাবে রিয়াজ কে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন লিটন চৌধুরী বলেন একটি শিশু বাচ্চার সাথে তো কারো দ্বন্দ্ব থাকতে পারেনা।রিয়াজ মুলত একজন সহজ সরল লোক। এই ঘটনার সাথে সেই জড়িত নয় বলে আমি মনে করি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (সিআইডি) আব্দুজ্জাহের বলেন আদালত থেকে এই মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি দীর্ঘ তদন্ত করে দেখেন অভিযুক্ত আসামী এই হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত নয় বলে প্রতিয়মান হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।