পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দিনাজপুর অঞ্চলে কৃষক থেকে দিনান্তের খেটে খাওয়া মানুষদের সুদিন ফিরে এসেছে। কয়েকমাস আগেও করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কাজের সঙ্কট প্রায় দূর হয়ে গেছে। কৃষকেরা মাঠে আর শ্রমিকরা কাজে ব্যস্ত। সকাল হলেই যে যার মত কাজে যোগ দিয়ে বিকেলে ব্যাগ ভর্তি বাজার নিয়ে ঘরে ফিরছে। খাদ্যের জন্য হাহাকার অবস্থা আর নেই।
তবে গার্মেন্টস দোকান, মুদি দোকান মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মত অনেক প্রতিষ্ঠান অর্থাভাবে কর্মচারীদের হারানো চাকরি ফিরিয়ে দিতে পারছে না। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা তাদের পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সহজ শর্তের ঋণের পাশাপাশি অর্থ লগ্নিকারী এনজিও গুলো যদি ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসে তাহলে করোনাকালীন সঙ্কট পুরোপুরি দূর হয়ে যাবে।
দিনাজপুর মূলত কৃষি নির্ভর অঞ্চল। ধানের জন্য বিখ্যাত দিনাজপুর ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলায় এখন লিচু, চা, কমলা, ভুট্টা, সয়াবিনসহ বিভিন্ন ধরনের আবাদ হচ্ছে। করোনায় একমাত্র কৃষি খাতের সাথে জড়িতরা অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েনি। ধানসহ অন্যান্য সকল উৎপাদিত পণ্যের দাম ভাল অবস্থায় থাকায় কৃষকের হাতে টাকার অভাব নেই। ফলে শহর পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায়ে ব্যক্তিগত উন্নয়ন কাজ বেশি হচ্ছে। সরকারি উন্নয়ন কাজেও গতি ফিরে এসেছে। যার কারণে শ্রমিকদের কাজের অভাব দূর হয়ে গেছে। আর কাজ হলেই টাকা পাওয়া যায়। শহরের রাস্তাঘাট এবং দোকানগুলিতে লোক সমাগমের দৃশ্যই বলে দিচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের অর্থনৈতিক সঙ্কট কেটে গেছে। তবে জেলা ও উপজেলা শহরগুলোর ব্যবসায়ীরা জানালেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে কৃষক ও খেটে মানুষদের সঙ্কট কেটে গেলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্কট কাটেনি। যার কারণে করোনাকালীন সঙ্কট পুরোপুরী কাটছে না।
এই অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য কোন বড় শিল্প নেই। দিনাজপুরে অটো রাইস মিল, পঞ্চগড়ে জাজ ডিস্টিলারিসহ কয়েকটি ফিডের মিল, জুট মিল হাতে গোনা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ব্যবসা বলতে ক্ষুদ্র ব্যবসাই মুখ্য। এর মধ্যে গার্মেন্টস, মুদি, রড-সিমেন্টের দোকান এবং মুদ্রণ ব্যবসা ছাড়া আর কোন ব্যবসা নেই বললেই চলে। এর মধ্যে স্কুল কলেজ সভা সমিতি বন্ধ থাকায় মুদ্রণ শিল্পে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দিনাজপুর মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাধারন সম্পাদক দুলাল জানালেন, কাজ এখন আগের তুলনায় ৫০ ভাগও হচ্ছে না। তিন মাস পুরোপুরী বন্ধ থাকার পর গত নভেম্বর থেকে প্রেসগুলি খোলা হলেও কাজ নাই। করোনার সময় ছাটাই করা ৫০ ভাগ শ্রমিকের মধ্যে নতুনভাবে কাউকেই কাজে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ব্যাংক বা এনজিও কেউ প্রেস ব্যবসায় শহজ শর্তে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করছে না। করোনাকালীন বিপদ কাটিয়ে উঠার জন্য সরকারের দেয়া প্রনোদনার সিকিভাগও দিনাজপুর অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা পায়নি। উল্টো খেলাপী ঋণ আদায়ে ব্যাংকগুলোর মামলায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে।
দিনাজপুরের গণেশতলা গুলশান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জহির শাহ জানালেন, সকাল হলেই গ্রামের মানুষেরা ছুটে আসছে কাপড় কিনতে। তাদের হাতে টাকা রয়েছে। কিন্তু আমরা তাদের চাহিদামত পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। কারন আমাদের হাতে টাকা নেই। শীতের কাপড় কিনে আনতে পারছি না। করোনাকালীন সরকারের দেয়া সুযোগের কোনটাই আমরা পাচ্ছি না। ট্রেডিং ব্যবসা হিসাবে নেয়া আগের ঋণ পরিশোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকেই খেলাপী হয়ে গেছে। তার মতে সরকার যদি এসএমই খাতে শহজ শর্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার জন্য সরকারি ও বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিতে উৎসাহিত করতে পারে তাহলে গ্রামের কৃষকদের মত শহরের ব্যবসায়ীরাও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আর হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঘুরে দাড়ালে লাখ লাখ নিম্নস্তরের চাকুরীজীবীরাও তাদের চাকরি ফিরে পাবে এবং নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা জীবন ফিরে পাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা জানালেন, দিনাজপুরে যতগুলো ব্যাংক রয়েছে এবং যত টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে তা ট্রেডিংয়ের উপর। যাকে সাধারণত সিসি, হাইপো বলা হয়ে থাকে। করোনার কারণে আগের এসব ঋণের অধিকাংশই খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংকগুলো কিছু ছাড় দিয়ে হলেও খেলাপি ঋণ কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ লাখ টাকার নিচের ঋণের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা জরুরী হয়ে পড়েছে। এটা করলেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।