রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কুষ্টিয়ায় পরিবেশ অধিদফতরের আইন না মেনেই চলছে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ। ফলে মেশিনের তীব্র আলোতে মানুষের দৃষ্টিশক্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। শহরের যত্রতত্র শতাধিক কারখানা চালু থাকলেও কুষ্টিয়া পৌরসভা হতে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন মাত্র ৪৭জন। পরিবেশ অধিদফতরের ১৯৯৫ সালের ১২ ধারা অনুযায়ী ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ চালাতে হলে অধিদফতরের অনুমতি নিতে হয়। নির্দিষ্ট কিছু শর্তপূরণ সাপেক্ষে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ চালানোর অনুমতি দেয়া হয়। সে সবের কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি ছাড়াই বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে কুষ্টিয়ায় গড়ে তোলা হচ্ছে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সিনিয়র কনসালটেন্স (চক্ষু) ডাক্তার মঈন উদ্দীন আহমদ বলেছেন, ওয়েল্ডিং-এর সময় যে আলো বিচ্ছুরিত হয় তা ‘আল্টা ভায়েট রে’। খালি চোখে এ আলো দেখলে কিছু সময় পরে চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লালসহ তীব্র জ্বালা যন্ত্রনা করে, আলো সহ্য হয় না। একে ‘এআরসি বা ওয়েল্ডার ফ্লাস’ বলে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমান বলেছেন, ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ পরিবেশ অধিদফতরের ‘ক-কমলা’ শ্রেনি ভুক্ত। ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ চালাতে হলে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিতে হয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, ঝালাই কাজ ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপের বাইরে পরিচালনা করা যাবে না। ওয়েল্ডিং করার সময় অবশ্যই কালো কাপড়ের পর্দা বেড়া হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। তবে অনেকদিন ধরে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ মালিকগণ ছাড়পত্রের জন্য কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদফতরের অফিসে যোগাযোগ করে না। ফলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুষ্টিয়া শহরের কিছু ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ পরিবেশ অধিদফতরের আইন মানলেও অধিকাংশ ওয়ার্কশপ কোনরকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কালোকাপড়ের ঘেরা বেড়া দেয়া ছাড়াই সন্ধ্যার পর কুষ্টিয়া পৌরসভার রাস্তার ওপরেই ঝালাই কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শহরের বাবর আলী গেট হতে পৌর বাজার পর্যন্ত রেল লাইনের দক্ষিণ পাশে পৌর রাস্তার ১০০ গজের মধ্যে ৫টি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ রাস্তার ওপরেই ঝালাই কার্যক্রম চালাচ্ছে। এগুলোর কোনটিরই অনুমোদন নেই। এ ছাড়া শহরের প্রতিটি রাস্তা সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে শত শত ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ চালু আছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত লাইসেন্স ইন্সপেক্টর মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ৪৭টি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ কে ট্রেডলাইসেন্স দিয়েছি। অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ পরিবেশ অধিদফতর। নিয়ম মেনে কালো কাপড় দিয়ে ঘিরে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ চালাতে হবে। অবৈধ ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের ছাড় পত্রের প্রয়োজন আছে কিনা এবিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। কুষ্টিয়া বাবর আলী গেটের পশ্চিম পাশের রেল ধারের মসজিদ ই-নূরের সামনে অবস্থিত ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপের মালিক ইসলাম বলেছেন, আমি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছি। দোকানের জায়গা কম হওয়ায় বাইরে কাজ করতে বাধ্য হই। কালো কাপড় দিয়ে কাজ করার নিয়ম থাকলেও সব সময় হয়ে ওঠে না। কুষ্টিয়া ওজোপাডিকো লিঃ বিক্রয় ও বিতরণ-১ এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী প্রনব চন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, অনেকেই দোকান ঘরের নামে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে পরবর্তিতে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ পরিচালনা করছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করার থাকে না। তবে আমরা পরিবেশ অধিদফতরকে প্রয়োজনে সহযোগিতা করবো।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া সদর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, কুমারখালী, খোকসা ও মিরপুর উপজেলার শহর, হাট-বাজার ও গ্রামাঞ্চলে এরকম অবৈধ ওয়েল্ডিং এর কাজ চলছে। মনে হচ্ছে দেখার কেউ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।