Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে অ্যামোনিয়া সার কারখানায় গ্যাস নিয়ন্ত্রণে, অসুস্থ শত শত মানুষ

প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী আনোয়ারা উপজেলার সিইউএফএল সংলগ্ন ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ডিএপি) প্ল্যান্টের অ্যামোনিয়া রিজার্ভ ট্যাংকে বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস মঙ্গলবার সকাল থেকে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জনমনে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক কাটেনি। রাতভর বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণে কারাখানা সংলগ্ন আনোয়ারা এলাকাসহ বন্দরনগরীর বিশাল এলাকায় শত শত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা বেশি কাহিল হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭০ জনের মতো অসুস্থকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অনেকে প্রাইভেট ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বার, ডিসপেনসারি এমন কি বাসাবাড়িতে চিকিৎসা নেন। এক দু:সহ দুর্বিষহ যন্ত্রণার রাত পার করেছে এই এলাকার লাখ লাখ বাসিন্দা। সোমবার রাত ১০টায় সিইইউএফএল ও কাফকো সংলগ্ন ড্যাপ কারখানার অ্যামোনিয়া ট্যাংকের পাইপে বিস্ফোরণ ঘটলে প্রবল বেগে গ্যাস নির্গত হওয়া শুরু করে। আকাশে ঘন কুয়াশার আকার ধারণ করে সে গ্যাস বাতাসের তোড়ে ছড়িয়ে পড়ে কারখানার আশপাশ থেকে শুরু করে বন্দরনগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা পতেঙ্গা, হালিশহর, বন্দর, আগ্রাবাদ, কাট্রলী সিটি গেইট পর্যন্ত। তীব্র ঝাঁঝালো আর উৎকট দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে লোকজন প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকে। অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ঘরে ঘরে শুরু হয়ে কান্নার রোল। বাতাসে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অনেকে। বিমান বন্দরে যাত্রী থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা দেশিবিদেশী জাহাজের নাবিকরাও আক্রান্ত হয়ে গ্যাসে। অনেকে গ্যাসের তীব্রতা থেকে নিজেকে রক্ষায় নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএএফ শাহীন কলেজসহ পতেঙ্গা এলাকার স্কুল কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়। রাতভর গ্যাস নির্গত হতে থাকে। সেখানে উদ্ধারকর্মীদেরও কাজ করতে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়। জানা যায় ওই ট্যাংকে গ্যাস নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পর গ্যাস নির্গত হওয়া কমে আসে। আর যাতে নতুন করে কোন বিস্ফোরণ বা লিকেজ না হয় সেজন্য সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, কারখানার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। বিসিআইসি চেয়ারম্যান ও ডিএপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিদর্শন শেষে বিস্তারিত বলতে পারবো। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটি গ্যাস লিকেজের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি ডিএপি প্ল্যান্টের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ