Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নুরল হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের জন্য ৪২ বিশিষ্ট নাগরিকের আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম | আপডেট : ৪:৫৮ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০

কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের জন্য প্রেসিডেন্ট বরাবর আবেদন করেছেন দেশের ৪২ বিশিষ্ট নাগরিক। আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও গুরুতর অসদাচরণের সুনির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করে এ ব্যাপারে তদন্ত চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও চেয়েছেন তারা। ৪২ নাগরিকের পক্ষে আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।

প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বরাবর লেখা আবেদনে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশনের অসদাচরণ এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন। এতে আরো বলা হয়, মহামান্য প্রেসিডেন্ট , আমাদের সশ্রদ্ধ সালাম ও শুভেচ্ছা নেবেন। আপনি অবগত আছেন যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৬(৩) অনুচ্ছেদে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল (কাউন্সিল) গঠনের বিধান রয়েছে। সংবিধানের ৯৬(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যে ক্ষেত্রে কাউন্সিল অথবা অন্য কোনো সূত্র হইতে প্রাপ্ত তথ্যে প্রেসিডেন্টের এইরূপ বুঝিবার কারণ থাকে যে কোন বিচারক ... (খ) গুরুতর অসদাচারণের জন্য দোষী হইতে পারেন, সেইক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট কাউন্সিলকে বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করিতে ও উহার তদন্ত ফল জ্ঞাপন করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারেন। আপনি আরও

অবগত আছেন যে, আমাদের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান রয়েছে। ১১৮(৫) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনারদের কর্মের শর্তাবলী প্রেসিডেন্ট আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে: তবে শর্ত থাকে যে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হইতে পারেন, সেইরূপ পদ্ধতি ও কারণ ব্যতীত কোন নির্বাচন কমিশনার অপসারিত হইবেন না। কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সদস্যগণ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্নভাবে গুরুতর অসদাচারণে লিপ্ত হয়েছেন। কমিশনের সদস্যগণ একদিকে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ। একইভাবে তাঁরা বিভিন্নভাবে আইন ও বিধিবিধানের লঙ্ঘন করে গুরুতর অসদাচরণ করে চলেছেন বলে আমরা মনে করি। আমরা আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মসহ কমিশনের গুরুতর অসদাচরণের অন্য কয়েকটি ক্ষেত্র আপনার সদয় অবগতির জন্য চিহ্নিত করছি, যার আরও বিস্তারিত বিবরণ এই আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত হল।

১.আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণ, ১.১ বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেওয়ার নামে ২ কোটি টাকার মতো আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম, ১.২ নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৪ কোটি ৮ লাখ টাকার অসদাচরণ ও অনিয়ম, ১.৩ নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনজন কমিশনারের তিনটি গাড়ি ব্যবহারজনিত
আর্থিক অসদাচরণ ও অনিয়ম। ২.০ অন্যান্য গুরুতর অসদাচারণ ও অনিয়ম ২.১ ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম, ২.২ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম, ২.৩ ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম, ২.৪ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম, ২.৫ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম, ২.৬ সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়ম।

নিম্নে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের সম্মতিক্রমে তাঁদের পক্ষে আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী (শাহদীন মালিক) বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আমাদের উত্থাপিত এবং গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত উপরিল্লিখিত তিনটি সুনির্দিষ্ট আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থসংশ্লিষ্ট গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ তদন্ত করার লক্ষ্যে আপনাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিনীত আবেদন জানাচ্ছি।

একইসাথে উপরিল্লিখিত অন্যান্য গুরুতর অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগগুলো বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য সংস্থা কর্তৃক প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এবং প্রমাণ সাপেক্ষে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে প্রেরণ করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের অভিযোগের বিষয়ে আপনাকে সামনাসামনিভাবে অবগত করার জন্য আপনার সুবিধামত সময়ে একটি সাক্ষাতের আয়োজনের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

৪২ নাগরিক হচ্ছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, ড. আকবর আলি খান, এডভোকেট সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, সেন্ট্রাল ইউমেন্স ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক পারভীন হাসান, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল
আলম মজুমদার, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আহমেদ কামাল, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড. আই খান পান্না, ড. শাহদীন মালিক, আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান মনসুর, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ ম-ল, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সি আর আবরার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, লেখক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, সাধনার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর লুবনা মরিয়ম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন, সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর অধ্যাপক, গবেষক স্বপন আদনান, ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, গোলাম
মোর্তুজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ক্লিনিকাল নিউরোসাইন্স সেন্টার, বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন-এর পরিচালক অধ্যাপক নায়লা জামান খান, নাগরিক উদ্যোগ-এর প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন।



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:২৭ পিএম says : 0
    ..........র ছেয়েও খারাপ এই .......... নুরুল হুদা
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আশরাফুল হক ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:৩৬ পিএম says : 0
    এই হুদাই কাছে মরা মানুষ কবর থেকে উঠে এসে ভোট দিতে পাওয়া গেছে
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ দুলাল মিয়া ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৩১ পিএম says : 0
    এই রকম একটি নির্বাচন কমিশন আমার বয়সে আমি দেখি নাই ইতিহাসে এই লোকটি নাম থেকে যাবে।এতে একটি খারাপ লোক পৃথিবীর কেন দেশেও নাই আসলে একটি লোকের চেহারা দেখেই সব কিছু বল যায় কিন্তু এই হুদার কেন চেহারায় ইনসান অরথাত মানুষ এই লোকটি মানুষের চেহারায় দেখতে দেখা যায় না। এই লোকটি সত্য কে মিথ্যা আবার মিথ্যা কে সত্য করে থাকে।
    Total Reply(1) Reply
    • Rakha ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৪০ পিএম says : 0
      MD Khairul Alamইনিই হলেন বাংলাদেশের বেহুদা কমিশনের প্রধান মিঃবেহুদা । যিনি দেশের সকল নির্বাচনকে টেরা চোখে সব ফকফকা দেখেন । তাও আবার নির্বাচনের আগের রাত ১২টার সময় ।
  • jamal uddin ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৩২ পিএম says : 0
    a jabot kaler sobcheya necristo ec nurul hoda, i think he doesn't have any shame. he destroyed the democracy in Bangladesh. he has to give answer to god once, be ready Mr. Nurul hoda.
    Total Reply(0) Reply
  • rakha ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:৩৯ পিএম says : 0
    MD Khairul Alam ইনিই হলেন বাংলাদেশের বেহুদা কমিশনের প্রধান মিঃবেহুদা । যিনি দেশের সকল নির্বাচনকে টেরা চোখে সব ফকফকা দেখেন । তাও আবার নির্বাচনের আগের রাত ১২টার সময় ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ