পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমড়ো ফুলে ফুলে/নুয়ে পড়েছে লতাটা/সজনে ডাঁটায়/ভরে গেছে গাছটা/ আর আমি/ ডালের বড়ি শুকিয়ে রেখেছি।/খোকা, তুই কবে আসবি?/কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ তার বিখ্যাত কবিতা ‘মাগো, ওরা বলে’ কবিতায় তার খোকাকে বাড়িতে আসতে প্রলুব্ধ করতে চিঠিতে যে ডালের বড়ির কথা বলেছেন সেটি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার কুমড়ো বড়ি। সু-সুস¦াদু এ খাবারটি বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে রান্না করে খাওয়ার প্রচলন বহু আগের। ভোজন রসিকদের খাবারে বাড়তি স্বাদ এনে দেয় কুমড়ো বড়ি।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের শাহ শরীফ জিন্দানী (র.)-এর পূণ্যভ‚মি নওগাঁ গ্রামে বিগত প্রায় দুই দশক যাবৎ বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হচ্ছে কুমড়ো বড়ি। এ ব্যবসা করে দুই শতাধিক পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
মাষকলাই ডাল, কুমড়া আর কিছু মশলার সংমিশ্রণে তৈরি বড়ির নাম কুমড়া বড়ি। প্রধান উপাদান ডাল আর চাল কুমড়া; খাবারে আলাদা স্বাদ আনতে যার জুড়ি মেলা ভার। যেমন নাম, তেমনি খেতেও সুস্বাদু। এখানকার নারীদের ব্যস্ততা যেন এ পণ্যটি ঘিরেই। মধ্যরাত থেকে ভিজিয়ে রাখা মাষকলাইয়ের ডাল ভোররাত থেকে শিলপাটায় মিহি করে বাঁটা হয়। এরপর কুটে রাখা চাল কুমড়াসহ মশলা মিশিয়ে সকাল থেকে কুমড়া বড়ি তৈরি শুরু হয়। সারা বছরই কমবেশি কুমড়া বড়ি তৈরি হলেও শীত মৌসুমে এর চাহিদা থাকে বেশি। বাজারে চাহিদা এবং ভালো দাম থাকায় অনেক পরিবারে ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা।
কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগর নওগাঁ গ্রামের আবদুল করিম ও আইযুব আলী বলেন, পাইকারি ৫৫ টাকা দরে কিনে খুচরা বাজারে ৬৫-৭০ টাকা দরে হাট-বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে। আরো বলেন, ১ বস্তা ডাল থেকে যে পরিমাণ বড়ি তৈরি হয় তাতে খরচ বাদে ৭০০-৮০০ টাকা লাভ হয়।
কুমড়া বড়ির সাথে জড়িত নারী শ্রমিক আসমা বেগম, সাবিনা খাতুন ও আয়েশা খাতুন জানান, সারাদিন কাজ করে ১৫০-২০০ টাকা মজুরি পাই। অভাবের সংসার বাড়তি আয়ের জন্য সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে কুমড়ো বড়ি তৈরি করি। এদের মত অত্র অঞ্চলের শতাধিক নারী শ্রমিক এ কাজের সঙ্গে জড়িত।
কুমড়া বড়ি উৎপাদন কারিগর আলামিন হোসেন বলেন, দীর্ঘ ১৮-২০ বছর যাবৎ এ ব্যবসা করছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে আগের চাইতে অনেক ভাল আছি। কুমড়া বড়ি সুস্বাদু হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে পুঁজি সঙ্কটে চাহিদা মতো তৈরি করতে পারছি না। অর্থের অভাবে এনজিও থেকে বেশি সুদে টাকা নিয়ে কুমড়ো বড়ি তৈরি করছি। লাভের বেশি অংশই সুদ গুনতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।