এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরাও
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লিঙ্গ সমতার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি
বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের মেয়ে নাদিয়া বৃটেনের প্রথম মুসলিম নারী মেয়র। লন্ডনের নতুন মুসলিম মেয়র সাদিক খানকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী হইচই চলছে। কিন্তু বৃটেনের এই পৌর নির্বাচনে হইচই ফেলে দেয়ার মতো কা- কিন্তু আরও একজন ঘটিয়েছেন। ক্যামডেন শহরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন এক বাঙালি মুসলিম নারী। তিনি নাদিয়া শাহ। বৃটেনের কোনও শহরে তিনিই প্রথম মুসলিম নারী মেয়র। বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নাদিয়ার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার খবরে খুশির হাওয়া বাংলাদেশেও ছড়িয়েছে। ক্যামডেন কাউন্সিলে সম্প্রতি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লেবার কাউন্সিলর নাদিয়া শাহকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। নাদিয়ার পিতৃপুরুষের বাস মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়। নাদিয়ীর জন্ম অবশ্য বৃটেনেই। যে শহরের মেয়র নির্বাচিত হলেন তিনি, সেই ক্যামডেনেই জন্ম। গ্রিনিচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর ব্যাঙ্কে এবং বিভিন্ন সরকারি বিভাগে কাজ করেছেন। রাজনীতি আর সামাজিক কাজের প্রতি ঝোঁক ছিলই। শেষমেষ ২০১৪ সালে সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। রিজেন্ট পার্ক আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন এবার। এই আসন থেকে আগে কাউন্সিলর ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিক। পরে হ্যাম্পস্টেড-কিলবার্ন আসন থেকে টিউলিপ সাংসদ নির্বাচিত হন। তাই ছেড়ে দেন কাউন্সিলর পদ। এক বাঙালি মহিলার ছেড়ে যাওয়া আসনে আর এক বাঙালি মহিলাই জয়ী হয়েছেন। এতে খুশি ক্যামডেনের বাঙালিরাও। টিউলিপ সিদ্দিক যেভাবে রিজেন্ট পার্ক থেকে রাজনীতি শুরু করে ওয়েস্টমিনস্টার পৌঁছে গিয়েছেন, নাদিয়া শাহও সেভাবেই বৃটিশ সংসদে পা রাখবেন। আশা নাদিয়ার পরিবারের। নাদিয়ার বাবা মোহাম্মদ নাজরুল ইসলাম ষাটের দশকে বিলেত আসেন। ব্যাঙ্কার জীবন শেষে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। নাদিয়ার মায়ের নাম আম্বিয়া ইসলাম। ব্যক্তি জীবনে নাদিয়া তিন সন্তানের জননী। নাদিয়ার স্বামী জলিল শাহ ক্যামডেন কাউন্সিলের ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত। লন্ডনের পার্লামেন্ট হিল স্কুলে শিক্ষা জীবন শুরু করেন নাদিয়া। পরে গ্রিনউইচ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে ইনভেস্টমেন্ট অ্যাডভাইজর হিসেবে ইংল্যান্ডের ন্যটওয়েস্ট ব্যাংকে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর হোম অফিস, স্থানীয় সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করেন। ২০১৪ সালে নাদিয়ার রাজনীতিতে হাতে খড়ি।
জার্মানির স্পিকার মুহতেরেম আরাস
জার্মানির ইতিহাসে প্রথম কোনো মুসলিম একটি প্রদেশের পার্লামেন্ট স্পিকার নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচিত মুহতেরেম আরাস নামে এই রাজনীতিক গ্রিন পার্টির সদস্য। সম্প্রতি জনপ্রিয় একটি অভিবাসন বিরোধী দলকে হটিয়ে বাডেন উটেমবার্গ প্রদেশে তিনি পার্লামেন্ট স্পিকার নির্বাচিত হন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমরা আজ ইতিহাস লিখেছি।’ স্থানীয় পত্রিকাগুলো জানিয়েছে, আরাস (৪০) এই বিজয়ের পর বলেন, এই বিজয় উন্মুক্ততা, সহনশীলতা এবং ঐক্যেরই ইঙ্গিত দেয়। তুরস্ক জন্মগ্রহণকারী আরাস ছোটবেলায় তার বাবা-মার সঙ্গে জার্মানির স্টুটগার্ট শহরের কাছাকাছি একটি এলাকায় বসবাস করেন। এরপর অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশুনা শেষে নিজের একটি ট্যাক্স পরামর্শক প্রতিষ্ঠান খোলেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু ১৯৯২ সালে। স্থানীয় কাউন্সিলে গ্রিন পার্টির পক্ষ থেকে দাঁড়িয়ে নির্বাচিত হন। ক্রমেই দলকে তিনি জনপ্রিয় করে তোলেন এবং বাডেন উটেমবার্গ প্রদেশ পার্লামেন্ট প্রতিনিধিত্ব করার পর্যায়ে নিয়ে যান। এবার তিনি ৯৬ জন স্থানীয় এমপির ভোটে প্রথম মুসলিম নারী স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হলেন। এমন এক পরিস্থিতিতে আরাস নির্বাচিত হলেন যখন জার্মানিতে রেলস্টেশনে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চার জনকে ছুরিকাহত করা হয়েছে; ধর্ম, অভিবাসন এবং চরমপন্থা যেখানে অব্যাহত উত্তেজনা বিরাজ করছে। জার্মানির অভিবাসন বিরোধী দলের সদস্যরা আরাসের প্রথম অধিবেশনে তাকে স্বাগত জানানোর সভায় যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এই মাসের শুরুর দিকে, অভিবাসন বিরোধ দল ‘ইসলাম দেশের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং মিনার এবং বোরখা নিষিদ্ধ’ করার ইশতেহার নিয়ে স্থানীয় নির্বাচনে রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে। য় সেলিনা শামস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।