Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জনগণ দেশকে মুক্ত করবে

স্মৃতিসৌধে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখার শপথ গ্রহণ করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলটির বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বাক স্বাধীনতা নেই, মৌলিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। আমরা বিজয় দিবসে শপথ গ্রহণ করেছি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার এবং অবশ্যই এদেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখব। অবশ্যই আমরা বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে সক্ষম হব। গতকাল বুধবার মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীতে সকাল ৯টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেতাকর্মীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবদনের পর তিনি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে শেরে বাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন।
এসময় বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে এখন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। এই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে জনগণ আবার নতুন করে শপথ গ্রহণ করছে। আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তারা অবশ্যই দেশকে মুক্ত করবে, মানুষের গণতন্ত্রকে মুক্ত করবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে এবং গণতান্ত্রিক একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে। তাই একটি নিরপেক্ষ সরকারের নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা শপথ গ্রহণ করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাতি যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলো একাত্তর সালে সেই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা তারা দেশ স্বাধীন করেছিলো। সেই দিন যে চেতনা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলো বাংলাদেশের মানুষ, সেই চেতনা ছিলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক একটি সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দুর্ভাগ্য আমাদের যে, ১৯৭৪-৭৫ সালে দেশে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলো গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর তারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে এবং গণতন্ত্রকে ধবংস করে মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ধবংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে। স্বাধীনতার চেতনাকে তারা ধবংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, ৫‘শ উপরে মানুষ গুম হয়ে গেছে, হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ তারা আজকে নিহত হয়েছে। আজকে দেশে একটা শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় প্রতারণার রাজনীতি করেছে। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেছে কিন্তু কাজে তারা স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের কাছে নীতি নৈতিকতা নেই। তারা সবসময় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সবরকম অনৈতিক কার্যকলাপ করেছে। সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে বেআইনিভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে না। বিশ্বাস করে না বলেই তারা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে অপমান করে এবং গণতন্ত্রের নেত্রীকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আজকে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণভাবে একটি ফ্যাসিবাদী স্বৈরতান্ত্রিক দলে এবং সরকারের পরিণত হয়েছে।
এর আগে সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে সকাল সাড়ে ৯টা ৫০ মিনিটে বিএনপি মহাসচিব নেতা-কর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুম্পমাল্য অর্পন করেন এবং মরহুম নেতার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।

এ সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আমিনুল হক, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান শিমুল, আকরামুল হাসানসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগরের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, কাজী আবুল বাশারসহ নেতা-কর্মীদের নিয়ে পুস্পমাল্য অর্পন করেন।
অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মাওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ইয়াসীন আলী, সাদরেজ জামান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবদুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, জাসাস শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা, জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, জিয়া পরিষদের প্রফেসর আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর এমতাজ হোসেন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ দলের পক্ষে জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ