পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফের রেকর্ড ভেঙ্গে ৪২ বিলিয়ন ডলার মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ রিজার্ভ। গত পাঁচ মাসে সাত বার রেকর্ড করেছে রিজার্ভ। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে দশ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।
করোনার ধাক্কা সামলে উঠে ঘুরে দাড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। বিশ্বজুড়ে করোনা সঙ্কটের মধ্যেও বৈধ পথে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে আসছে। চলতি মাসের ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৮১ লাখ ৪০ কোটি ডলার মিলিয়ে চলতি বছর ২০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন একটি বছরে এত বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স আসেনি কখনও। এদিকে রেমিট্যান্স বাড়লেও আমদানি দায় পরিশোধের তেমন চাপ নেই। যে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রচুর ডলার কিনতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে প্রায় ২৬০ কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি থেকে প্রচুর ঋণ আসছে। যে কারণে রিজার্ভে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দিনশেষে রিজার্ভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ২০০ কোটি ডলার। গত পাঁচ মাসে সাত বার রেকর্ড করেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সর্বশেষ গত ২৮ অক্টোবর এই মজুত আরেকটি বিলিয়ন ডলারের ঘর টপকে ৪১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। গতবছর এসময় মজুতের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
এদিকে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু বিদেশী ঋণ ও দান অনুদানও। আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পাশাপাশি রফতানি আয় বাড়ায় রিজার্ভ নতুন মাইলফলক অতিক্রম করতে চলেছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে রেমিট্যান্সের গতিতে ছেদ তো পড়েইনি, বরং তা আরও বেড়েছে। রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের পাশপাশি বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও এআইআইবির ঋণ সহায়তাও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, মূলত করোনাভাইরাসের ধাক্কায় অর্থনীতিতে সৃষ্ট নেতিবাচক অবস্থার কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় মজুত দিন দিন বাড়ছে। গত অর্থবছরে আমদানি ব্যয় ৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে ৫৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি হয়। করোনা মহামারির ধাক্কা না থাকলে যা ৬০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি যেত। এরকম কম আমদানির প্রেক্ষাপটে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১২ শতাংশ কমে আমদানি হয়েছে ১১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। স্বাভাবিক সময় থাকলে কমপক্ষে ২ বিলিয়ন ডলার এই তিনমাসে অতিরিক্ত আমদানি খাতে ব্যয় হতো। আমদানির পাশাপাশি শিক্ষা, চিকিৎসাসহ নানা কাজে যে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হতো, তা এইসময় হয়নি। এটিও মজুত বাড়াতে ভীমিকা রাখছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান রিজার্ভ সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। রিজার্ভের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল। প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয়ের খরচ হিসাবে হাতে থাকা রিজার্ভ দিয়ে বর্তমানে দশ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশির পাঠানো অর্থ বা রেমিট্যান্স। দেশের জিডিপিতে এই রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো। এবার করোনাভাইরাস মহামারীতে মার্চ থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ওলটপালট হয়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্সও কমে গিয়েছিল। কিন্তু এপ্রিল থেকে রেমিট্যান্সে ঊর্ধ্বগতির ধারা চলছে। রেমিট্যান্সের গতি ধরে রাখতে চলতি অর্থবছরে দুই থেকে তিন শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা অব্যাহত রেখেছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আওয়ামী লীগের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের শেষদিকে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন এক বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি নেমে আসে। এরপর বিচারপতি লতিফুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন রিজার্ভে ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি। সে সময় আকুর বিল বাবদ ২০ কোটি ডলার পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তাতে রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসত। আর রিজার্ভ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ দাতাদের সহায়তা পাওয়া যাবে না- এই বিবেচনায় আকুর দেনা পুরোটা শোধ না করে অর্ধেক দেয়া হয় তখন। বাংলাদেশের ইতিহাসে ওই একবারই আকুর বিল বকেয়া রাখা হয়েছিল বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই ৯টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।