Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবিক্রীত ৮ কোটি টাকার চিনি

জয়পুরহাট চিনিকলে বেতন বন্ধ ৪ মাস

মো. আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের সবচেয়ে বড় চিনি শিল্প জয়পুরহাট চিনিকল। ধারণ ক্ষমতার দিক থেকেও এটি সবচেয়ে বড় চিনিকল। চিনিকলটিতে ৮ কোটি টাকার চিনি এখনও বিক্রি হয়নি। এ চিনিকলের শ্রমিকরা ৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
জানা যায়, চিনিকলে উৎপাদিত চিনির তুলনায় খোলা বাজারে আমদানি করা চিনির মূল্য কিছুটা কম। ফলে চিনি কলের ১ হাজার ৩১৮ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত অবস্থায় রয়েছে। যার দাম ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এছাড়া আড়াই কোটি টাকার ১ হাজার ১৫৭ মেট্রিক টন চিটাগুড়াও পড়ে আছে মিল চত্বরে। এ কারণে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতি বছর চিনিকলটির কোটি কোটি টাকা লোকসান ও নানা সমস্যা সমাধানে বিদেশ থেকে ‘র’ চিনি আমদানি করে রিফাইন (প্রক্রিয়াজাত) করে বাজারজাত করার পরামর্শ ব্যবসায়ী নেতাদের।
কৃষকদের পাওনা পরিশোধ থাকলেও শ্রমিকরা চার মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ঠিকমতো দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের যোগান দেয়াই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সন্তানদের প্রাইভেট পড়ানোসহ খাতা-কলম লাগছে, যা কেনার সামর্থ্যও আজ তাদের নেই। ফলে অনেকটাই হতাশায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাদের।
সর্বশেষ মৌসুমে শুধুমাত্র আখের অভাবে ৪১ দিন চিনিকলটি চালু ছিল। এ অল্প সময়েই ৫৪ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৫৩৪ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করা হয়। বর্তমানে ৪ মাসের বেতন, গ্রাচুইটি, এরিয়া বিলসহ প্রায় ১৬ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এতে চিনিকলের স্থায়ী ৫২০ জন শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক জহুরল হক জুয়েল বলেন, বেতন-ভাতা না পেয়ে প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিকরা নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। আমরাও মিল কর্তৃপক্ষসহ করপোরেশনের কাছে ধরনা দিচ্ছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
তবে প্রতি বছর চিনিকলটির কোটি কোটি টাকা লোকসান ও নানা সমস্যা সমাধানে চিনি ও খাদ্য করপোরেশনের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ‘র’ চিনি আমদানির পর রিফাইন করে বাজারজাত করলে চিনিকলটি দীর্ঘদিন চালু থাকবে। পাশাপাশি লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান জয়পুরহাট চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মো. আনোয়ারুল হক আনু।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আবু বকর বলেন, করোনা পরিস্থিতি আর চিনিকলে উৎপাদিত চিনির তুলনায় খোলা বাজারে আমদানি করা চিনির মূল্য কিছুটা কম হওয়ায় সম্ভবত আমাদের চিনিগুলো বিক্রি হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ