Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কমলনগর ও রামগতিতে খুরা রোগে এক মাসে অর্ধশত গরু ছাগলের মৃত্যু

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:৫০ পিএম

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় এক মাসে পাঁচ শতাধিক গরু-ছাগল খুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধশত গরু মারা গেছে। এতে খামারি ও সাধারণ গৃহস্থরা গবাদি পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

নভেম্বর মাসের শুরুতে রামগতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদি পশুর খুরা রোগ দেখা দেয়। ধীরে ধীরে এ রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে চরজাঙ্গালিয়া এলাকার হেলেনা আক্তারের চারটি, মো. সহিদের তিনটি, তোরাবগঞ্জ এলাকার আব্দুর রহিমের পাঁচটি, খুরশিদ আলমের দুটি, করিমের পাঁচটি, নাছিরের দুটি ও মো. ইয়াছিনের একটি গরু আক্রান্ত হয়েছে। একই অবস্থা রামগতি উপজেলাতেও। সেখানে গত এক মাসে জনতা বাজার এলাকার মো. মহিউদ্দিনের চারটি, আব্দুল মান্নানের ১১টি, আমির হোসেনের চারটি, চরডাক্তারের আব্দুজ জাহেরের পাঁচটি, কারামতিয়া এলাকার সাখাওয়াতের তিনটি, চরপোড়াগাছার বাহার উদ্দিনের চারটি, খোকনের দুটিসহ বিভিন্ন এলাকার খামারি ও কৃষকের পাঁচ শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে আমির হোসেনের একটি, এমরানের একটি, জাহেরের একটি, সহিদের একটি, হেলেনার একটি, নুরনবীর একটি, বাহার উদ্দিনের একটি ও নাছিরের একটিসহ ৫০টি গরু মারা যায়। হঠাৎ করে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় খামারি ও কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

রামগতি উপজেলার চরডাক্তার এলাকার আব্দুজ জাহের জানান, তার খামারে ১০টি গরু রয়েছে। এক মাস আগে সেগুলোকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এরপরও পাঁচটি গরু খুরা রোগে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা করানো হলেও একটি গরু মারা যায়।

কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকার খামারি আব্দুল করিম জানান, তার খামারের পাঁচটি গরুর সবই এ রোগে আক্রান্ত হয়।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, কমলনগর উপজেলায় ৫৫টি দুগ্ধ খামার। ২২টি ছাগলের, আটটি ভেড়ার ও ৩৩টি মহিষের খামার রয়েছে। এখানে গরু রয়েছে ৪০ হাজার, ছাগল ১১ হাজার, ভেড়া দেড় হাজার ও মহিষ রয়েছে এক হাজার ৩০০টি। অপরদিকে রামগতি উপজেলায় দুগ্ধ খামার ২৫২টি। ছাগলের ৩১টি, ভেড়ার ৩৫টি ও মহিষের ৮৭টি খামার রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩৩ হাজার গরু, ১১ হাজার ছাগল, এক হাজার ৮০০ ভেড়া ও চার হাজার মহিষ রয়েছে।

কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আক্তারুজ্জামান জানান, এই সময় প্রতিবছর খুরা রোগ বাড়ে। বিভিন্ন জায়গায় এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিলেও প্রতিরোধে সতর্ক রয়েছেন। এ রোগে বয়স্ক গরুর মৃত্যুহার কম হলেও আক্রান্ত বাছুরকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যায়। ওই সব কারণে কৃষকদের আর্থিক সমস্যায় পড়তে হয়। তিনি জানান, খুরা রোগ থেকে গরুকে বাঁচানোর জন্য আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা রাখতে হবে। অসুস্থ পশুর ক্ষত পটাশ ও অ্যান্টিসেপটিক মিশ্রিত পানি দিয়ে ধুতে হবে। এক লিটার পানিতে দুই চা চামচ ফিটকিরি মিশিয়ে গরুর মুখ পরিস্কার করে দিতে হবে। এছাড়া খাবার সোডা ৪০ গ্রাম এক লিটার পানিতে মিশিয়ে পায়ের ঘা পরিস্কার করে সালফালিনামাইড পাউডার লাগাতে হবে। সালফালিনামাইড বা টেট্রাসাইক্লিন অথবা উভয় ওষুধ পাঁচ থেকে সাত দিন ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া গবাদি পশুকে বছরে তিন বার প্রতিষেধক দিতে হবে।

রামগতি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে শতাধিক পশুকে খুরা রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খামারিদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সুস্থ পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ