পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতু কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, এটা জনগণের করের টাকায় হয়েছে। আর জনগণের টাকায় মেগা প্রজেক্ট করে মেগা লুটপাট চলছে। ‘বিএনপি পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাবে না নিচ দিয়ে যাবে’ তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের কথায় মনে হয় যে তারা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করেছে। একজন তো বলছে, বিএনপি ওপর দিয়ে যাবে না নিচ দিয়ে? মানে এটা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি!
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মানুষের পকেট কেটে কেটে সব নেয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি মানুষ এখানে ট্যাক্স দিচ্ছে। যেখানে এক টাকা সেখানে দশ টাকা ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। ভ্যাটের পরিমাণ তিন-চার পাঁচগুণ বেড়ে গেছে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা যারা ব্যাংকে টাকা রাখতো, তারা বলছে এখন আর পারছি না। এখন আর সংসার চলছে না। এটা হলো বাস্তবতা। আপনারা গভীরভাবে দেখবেন। এখানে যেটা চলছে সেটা হলো উন্নয়নের নামে পুরোপুরিভাবে একটা লুটপাট। প্রত্যেকটা জায়গায় তারা এখন মুনাফা খোঁজে। বাড়িঘর বানাচ্ছে উড়াল সেতু বানাচ্ছে, মেগা প্রজেক্ট বানাচ্ছে। মেগা লুট করছে।
পদ্মা সেতু বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দেশের উন্নয়ন শুরুই হয়েছে বিএনপির সময়ে। উন্নয়ন বলতে গুটি কয়েক মানুষের উন্নয়ন নয়, উন্নয়ন বলতে সাধারণ জনগণের উন্নয়ন। উন্নয়নের ভিত্তি জিয়াউর রহমানের সময় শুরু হয়েছিল, সেই ভিত্তির ওপরেই এখন উন্নয়ন হচ্ছে। আজকে যে রেমিটেন্স আসছে, গার্মেন্ট শিল্প, কৃষি বিপ্লব সবই জিয়াউর রহমানের সময় শুরু হয়েছিল। এদেশকে তলাবিহিন ঝুড়ি থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, ব্রিজ নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ এটাও উন্নয়ন তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো-সাধারণ মানুষের কতটুকু উন্নয়ন হলো সেটা। তাদের জীবনযাত্রার মান কতটা পরিবর্তন হয়েছে। আজকে দারিদ্র্যের হার কি কমেছে? সাধারণ মানুষ কি সুবিধাগুলো বেশি পাচ্ছে? তারা কি চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার অবস্থা ভয়াবহ, সরকারি হাসপাতালে গেলে দেখবেন কোনো রকমের চিকিৎসার সুযোগ নেই। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন না হলে পাবেন না। শিক্ষা অবস্থা কোথায় দাঁড়িয়েছে সেটা সবাই জানেন। দুর্নীতি কী হারে বেড়েছে। এখন তাদের দলের লোকেরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাচ্ছে। যুবলীগ-ছাত্রলীগ যে হারে টাকা পাচার করেছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের কানাডা-মালয়েশিয়ায় বাড়িঘর তৈরি হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে প্রচুর টাকা পাচার হচ্ছে। প্রতি বছর যে টাকা পাচার হচ্ছে তা দিয়ে কয়েকটা পদ্মা সেতু বানানো যাবে। এই পাচারের সঙ্গে আমলারাও জড়িত। কিন্তু প্রকাশ হচ্ছে না। এখন কোন সেক্টরটা ভালো আছে?
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সব সময়ই উন্নয়নের পক্ষে। আমরা কখনও কোনো নেগেটিভ রাজনীতি করি না। সব সময় পজিটিভ পলিটিকস করি। আমরা সত্যকে সত্য, মিথ্যাকে মিথ্যা, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলি। সেটা বলতে গেলেই তাদের গায়ে লাগে।
ভাস্কর্য নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ এখন দুটো। একটা হচ্ছে মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা করা, করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা, যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছে তাদের চিকিৎসা করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে গণতন্ত্রকে মুক্ত করা। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনা ও দুর্বৃত্তায়নের ধারাবাহিক পরিণতিই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ক‚টনৈতিক স্থবিরতার প্রধান কারণ। এজন্য সবার আগে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার দিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। তাহলেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য নির্বাচিত সরকার আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে পারবে। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নৈতিক ও যৌক্তিক ভ‚মিকায় এগিয়ে আসার তিনি আহবান জানান।
তিনি বলেন, অনির্বাচিত সরকার চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভ‚মি রাখাইনে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও সরকার রাখাইনে ফেরত পাঠাতে পারেনি। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সরকারের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাও তারা প্রমাণ করতে পারেনি।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে কালো পতাকা প্রদর্শন করবে বিএনপি : সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে আগামী ২১ ডিসেম্বর সারাদেশে দলের কেন্দ্রীয়সহ মহানগর কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ অথবা কালো পোষাক পরিধান করবে বিএনপি। গতকাল অপর এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির নেয়ার এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান।
তিনি বলেন, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে আগামী ২১ ডিসেম্বর সারা দেশে কালো ব্যাজ ধারণ অথবা কালো পোষাক পরিধান এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল মহানগর ও জেলা কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
স¤প্রতি ঠাকুগাঁওসহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় বেশ কিছু বাংলাদেশী নাগরিককে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় উদ্বেগ করা মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান অনির্বিাচিত নতজানু সরকারের দুর্বল নীতির কারণে সীমান্তে হত্যা বিরামহীন ভাবে চলছে স্থায়ী কমিটি মনে করে। মানবিক অধিকার লঙ্ঘন করে এই সকল হত্যাকান্ড ঘটার পরেও সরকারের নির্বিকার ভ‚মিকা জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য নতজানু সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানানো হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির এই ভার্চুয়াল বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহুমদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের মরহুম ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুনুর রহমান, বেগম নুরজাহান ইয়াসমীন, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি আহমেদ সাজার, সাবেক সচিব শহিদুল আলম, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক খন্দকার মনিরুজ্জামানসহ কোভিডসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
২০ দলীয় জোটের নেতা ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা নুর হোসেইন কাসেমীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্থায়ী কমিটির সভায় ১০ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠিত ২৮টি পৌর সভা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের ভোট ডাকাতি নির্বাচনের নিন্দা জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।