Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শত্রুমুক্ত হয় বিভিন্ন জেলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

আজ ১৪ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থান হানাদারমুক্ত হয়েছিল। এক নজরে দেখে নি কোথায় কোথায় হানাদারমুক্ত হয়।

আজকের এই দিনে পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বগুড়ার এ্যাডওয়ার্ড পার্কে ওড়ে বিজয়ের পতাকা। এর আগে হানাদার বাহিনী বগুড়া শহরের দখল নিতে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কয়েক দফা আক্রমণ চালায়। কিন্তু মুক্তি সেনারা বীরত্বের সঙ্গে ওই আক্রমণ প্রতিহত করেন। এদিনেই মুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্মরণীয় করে রাখতে বীরশ্রেষ্ঠের শহীদ হওয়ার স্থানে মহানন্দা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর নাম রাখা হয়েছে শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (বীরশ্রেষ্ঠ) সেতু, মহানন্দা নদীর অপর প্রান্তে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ যোদ্ধাদের নাম ফলক, সোনামসজিদে গণকবর এবং সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে করা হয়েছে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের সমাধিসৌধ।

১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে পাক হানাদারদের হটিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে শত শত মুক্তিযোদ্ধা ভোরের আকাশ রাঙিয়ে ওঠার আগেই শীতের কুয়াশা ছিন্নভিন্ন করে ফাঁকা গুলি বর্ষণ ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে জয়পুরহাটের ডাকবাংলোতে প্রবেশ করেন। পাকিস্তানি সৈন্য বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার-আলবদররা তখন পালিয়ে বগুড়া ও ঘোড়াঘাটের দিকে ছুটে যায় জীবন বাঁচাতে। জয়পুরহাটের ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে প্রথম স্বাধীনতার বিজয় কেতন সোনালি বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খন্দকার আসাদুজ্জামান বাবলু (বাঘা বাবলু)।

৯ ডিসেম্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের সমবেত করে সিরাজগঞ্জ মুক্ত করার জন্য মুক্তি বাহিনী শপথ গ্রহণ করে। মুক্তিবাহিনীর নিজস্ব রণকৌশলে চারিদিক থেকে একযোগে আক্রমণ শুরু করে সিরাজগঞ্জ মুক্ত করার জন্যে। সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সমবেত করার জন্য সিরাজগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন ভুলু ও আমিনুল ইসলাম চৌধুরী (মুজিব বাহিনীর গেরিলা) উদ্যোগ গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকতে না পেরে ১৩ ডিসেম্বর মধ্যরাতে পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী রেলযোগে ঈশ্বরদী অভিমুখে পালিয়ে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে হাজার হাজার জনতা ও বিজয়ী মুক্তিবাহিনী জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে সিরাজগঞ্জ শহর দখল করে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার মাটিতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি পালনে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

১৯৭১ সালের আজকের এইদিনে পাকসেনারা স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে পরাজিত হলে এখানে স্বাধীনতার পতাকা উড়ানো হয় পাবনার সুজানগরে।
১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর গভীর রাতে উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমান খান সেনা মিয়ার নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সদরের তিন দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। দীর্ঘ চার ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির পর পাক হানাদার ও তাদের দোসররা ওই রাতেই তাড়াইল বাজারের দক্ষিণ দিক দিয়ে নরসুন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পরদিন ১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী জনতা তাড়াইল উপজেলা সদরে উত্তোলন করে বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা।

এদিন মুজিব বাহিনীর প্রধান ডা. মোসলেমউদ্দিনের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল ১৩ ডিসেম্বর শেষ রাতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পাকবাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ করে। এ সময় তারা পালিয়ে যায়। পরদিন ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় মোরেলগঞ্জকে শত্রæমুক্ত ঘোষণা করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুজিব বাহিনীর সদস্যরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুক্তিযুদ্ধ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ