Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন জানালেন রিজভী

গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ, তার অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট দরকার। কারণ এখানে ডাক্তার যারা আছেন, তারা বলছেন যে, তাঁর উন্নত চিকিৎসা দরকার। কিন্তু সরকার নানা শর্তের বেড়াজাল তৈরি করেছে যাতে তিনি তাঁর ইচ্ছামতো চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তাঁর স্বাধীনভাবে দেশে-বিদেশে যেখানে ইচ্ছা চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে সকল বাধা অপসারণ করতে হবে। গতকাল শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে এক ভয়াবহ দুর্যোগ চলছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটা হচ্ছে আওয়ামী দুর্যোগ, আরেকটা হচ্ছে করোনা দুর্যোগ। এই দুই মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করছে এক অকল্পনীয় ক্রান্তিকাল। সেজন্য দেশে রাজনীতি নেই, গণতন্ত্র নেই, চিকিৎসা নেই, মানুষের মনে সুখ নেই, অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। দেশের জনগণ নিশিরাতের লুটেরা সরকারের যাঁতাকলে অবিরাম পিষ্ট হচ্ছে। গণতন্ত্রের নামে চলছে এক ব্যক্তির স্বৈরশাসন। এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বিনা দোষে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। তিনি এখন বাসায় থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি মুক্ত নন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উনার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সাজা স্থগিত হলে তো তাঁর ওপর কোনো বিধিনিষেধ থাকার কথা না। পার্থক্যটা হচ্ছে, শুধু হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে তাঁকে তাঁর বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী যিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ তাঁর ওপর জুলুমের যেন শেষ হচ্ছে না। সরকার দেশনেত্রীকে ভয় পায়। কারণ তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত থাকলে সরকারের লাগামহীন লুটপাট-অপকর্মে বিপত্তি ঘটবে এবং নিশিরাতের নির্বাচন করতে পারতো না। এজন্য তাঁকে এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। গণতন্ত্রের মা-কে প্রতিহিংসাপরায়ণতার অনলে হত্যা করতে চায় সরকার। তিনি অবিলম্বে তাঁর গৃহ অন্তরীণ অবস্থার অবসান চাই। সম্পূর্ণ মুক্তি চাই। দেশনেত্রীর মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটবে না। দেশবাসীর মুক্তি মিলবে না।

রিজভী বলেন, বিশ্বের দেশে দেশে জনবিচ্ছিন্ন কর্তৃত্ববাদী ভোটারবিহীন সরকারের অবস্থা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মতো। গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, সন্ত্রাস, জুয়া-জোচ্চুরি চালিয়ে রাষ্ট্রে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরী করে জনগণকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করে। এজন্য তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রাইভেট বাহিনীতে পরিণত করে জনগণকে বন্দী করে রাখার নানা কৌশল অবলম্বন করে। আইন-প্রশাসন ও আদালতকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে। সুতরাং সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে যতই নিজেদের সাফল্যগাঁথা প্রচার করুক জনগণ এসব বিশ্বাস করেনা। জনগণ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য।

তিনি বলেন,র‌্যাব-পুলিশ পরিবেষ্টিত হয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন একটি করে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর এই সংবাদ সম্মেলনের একটাই বিষয় বিএনপির বিরুদ্ধে আজগুবি, কল্পিত সব মিথ্যাচার ও কুৎসা উদগীরণ করা। মিথ্যা বলতে বলতে সত্য ভুলে গেছেন তিনি। জনগণ তাঁর কথা শুনলে টিভির চ্যানেল বদলে দেয়। তারা নিশিরাতে একটি পার্লামেন্ট বানিয়েছে। মনের মাধুরী মিশিয়ে পার্লামেন্টের বিরোধী দল বানিয়েছে। আদালত কিংবা নির্বাচন কমিশন সরকারের মাইক্রোফোন হিসেবে কাজ করছে। সব তাদের হওয়ার পরও প্রতিদিন তাদেরকে কেন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে? কেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে হচ্ছে? কেন ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলছে অব্যাহত ষড়যন্ত্র? কেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলছে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটানো? কারণ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনে বিএনপি’র যে অবদান আছে, সেটি আওয়ামী লীগের নেই। সেই অনুশোচনায় কাদের সাহেবরা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে নিশিদিন অশ্রাব্য মিথ্যাচারে লিপ্ত রয়েছেন। জনগণের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে লাভ নেই। সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে। এই সরকার বেশিদিন টিকে থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ