বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি আব্দুল হামিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার আইনী নির্দেশ বা বাধ্যবাধকতা কিছুই নেই। এটা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়া আইনী দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত অন্যায়। জাতীয় সংগীত অধ্যাশে ১৯৭৮ এর ৫ম অনুচ্ছেদের ২য় উপধারায় রয়েছে যে, সকল স্কুল সমূহে কার্যদিবস শুরু হবে জাতীয় সংগীত পাঠের মাধ্যমে। আবার স্কুলের ব্যাখ্যায় এনসিটিবি অধ্যাদেশ : ১৯৮৩ এর অধ্যাদেশ নং ৫৭ এর ২(ই) ধারায় উল্লেখ রয়েছে “স্কুল বলতে মাদ্রাসা ছাড়া যে কোন প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাক্রম অন্তর্ভুক্ত করে।
এসব জাতীয় প্রতিষ্ঠান কোন আইন বা কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্বীকৃত হোক বা না হোক। আর মাদ্রাসার বৈশিষ্ট বলতে “ মাদ্রাসা শিক্ষা অধ্যাদেশ ১৯৭৮ এর ২ এর (এ) ধারায় বলা হয়েছে “ মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, াখিল মাদ্রাসা , আলিম মাদ্রাসা। আইনে সুস্পষ্টভাবে স্কুলের কথা বলা হয়েছে, মাদ্রাসার কথা নয়। এমনকি কলেজ, ইউনিভার্সিটির কথাও বলা নেই। যেখানে কলেজ, ইউনিভার্সিটিকে বাধ্য করা হয় না, সেখানে মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত পড়া বাধ্য করা গভীর ষড়যন্ত্র মুলক।
এছাড়া সংবিধানের ৪১ ধারায় বলা আছে যে, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম সংক্রান্ত না হইলে তাহাকে কোন ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না। অর্থাৎ ধর্মীয় চিন্তার বা আকীদার সাথে সামঞ্জস্য না হলে অংশগ্রহণ করা লাগবে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন হামদ, নাত ও ক্বাছীদা ছাড়া দ্বীন ইসলামে যে কোন ধরনের সংগীত নিষিদ্ধ। ধাতু প্রত্যায় অনুযায়ী “ সম পূর্বক গৈ ধাতু যোগে সঙ্গীত নিষ্পন্ন। গৈ ধাতু অর্থ গান করা। সংগীতের বুৎপত্তিগত অর্থ গান অন্য কথায় গীত। ব্রক্ষা, ভারত, কল্লিনাথ হনুমান এ চারজনকে সংগীতের শাস্ত্রকার বলা হয়। ভারত উপমহাদেশের সংগীতের উৎপত্তি হয়েছে হিন্দু ও বৌদ্ধদের থেকে। কেননা বাংলা ভাষা ও সংগীতের উৎস প্রাচীন চর্যাপদ।
যা ১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রি নেপালের রাজ গ্রন্থাগার থেকে এর পুথি আবিষ্কার করে।এটি মুলত প্রাপ্ত ৪৭ গানের সংকলন। খ্রিষ্টীয় নবম থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে গানগুলি রচিত। চর্যাগীতি গুলি মুখ্যত বৌদ্ধ সহ জিয়াদের সাধন পদ্ধতি মুলক গান। চর্যার পরে বাংলা সংগীতের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নাথগীতি।নাতগীতি প্রধানত ুটি ধারায় বিকাশিত হয়েছে। একটি ধারায় গোরক্ষনাথ ও তার গুরু মীননাথের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে। এছাড়া বাংলা সংগীত কলার আরেকটি নির্শন বড়– চন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন। (বাংলা পিডিয়া) সুতরাং মুসলমানদের সাথে সংগীতের কোন সম্পর্ক নেই। তা জাতীয় সংগীত হোক বা আন্তর্জাতিক সংগীত হোক, ইসলামে সংগীত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন মাজীদের সুরা লুকমান ৬নং আয়াতে বলা হয়েছে গান গাওয়া সম্পূণ হারাম ও নাজায়েজ। (সমুহ তাফসীর) হাদীস শরীফে বলা হয়েছে প্রচলিত গান গাওয়া অন্তরে মুনাফিকী বা খারাপ চিন্তা তৈরি করে। এ ছাড়াও বর্তমান জাতীয় সংগীতের আরো কয়েকটি সমস্যা এই যে, এটি বঙ্গ ভঙ্গ রদের জন্য লিখিত। যা বাংলাদেশের সাধীনতা বিরোধী। কারণ রবীন্দ্রনাথ “আমার সোনার বাংলা” গানটি লিখেছিল ১৯০৫ সালের “ বঙ্গ ভঙ্গ আন্দোলন রদ করার জন্য তৎকালীন পূর্ববঙ্গ বা বর্তমান বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে। (উইকিপিডিয়া)
এছাড়া গানে হিন্দুদের নিয়ন্ত্রনাধীন বঙ্গকে “সোনার বাংলা” আখ্যা দেয়া হয়েছে। এই বাংলাকে হিন্দুদের দেবির ন্যায় “মা” বলে সম্বোধন করা হয়েছে। কারণ হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী ুর্গা, কালি, লক্ষীসহ বিভিন্ন বেীকে “মা” বলা হয়। আবার পৃথিবী, স্বদেশ এবং মাটিকে “মা” মাতৃরুপি দেবীরুপে সম্বোধন করা হয়। যেভাবে ভারত মাতা বলা হয়। সেই অর্থে রবীন্দ্রনাথ হিন্দুদের নিয়ন্ত্রনাধীন বঙ্গকে “মা” আখ্যা দিয়ে পূর্ববঙ্গ গঠনের বিরুধিতা করেছে। এই গানটি পুরোপুরি হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সংযুক্ত যা সম্পূর্ণ শিরক। তাই মাদ্রাসায় এই সংগীত কখনই চালু করা যাবে না। মাদ্রাসাগুলোতে কুরআন-হাদীস পড়ানো হয়। যেখানকার শিক্ষা দিবস শুরু হয় শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজএবং কুরআন তেলাওতের মাধমে, সেখানে আবার জাতীয় সংগীত গাইতে হবে কেন। সুতরাং মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া প্রতিযোগিতা বাধ্যতামুলক করা হবে ইসলাম বিরোধী এবং সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট অধ্যাদেশ সমুহের বিরোধী।
সেজন্য দেশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরে উদ্দেশ্যে বলবো, জাতীয় সংগীত যেভাবে চলে আসতেছে সেভাবে আসতে দেন। উলামায়ে কেরাম এবং মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করবেন না। এর দ্বারা জাতীয় সংগীতের পক্ষে-বিপক্ষে বেশি আলোচনা হলে এই সংগীতের যে মর্যাদা আছে, তা কিন্তু আর থাকবে না। তখন দেখা যাবে যে, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও আর জাতীয় সংগীত গাইতে আগ্রহী হচ্ছে না। এর দ্বারা দেশে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।