Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রায়পুরের হায়দরগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার না থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে চিকিৎসাসেবা

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৫৯ পিএম

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তার নেই গত ৩০ বছর। ডাক্তারের পরিবর্তে সেখানে রোগী দেখেন এসিষ্টেন্ড মেডিক্যাল অফিসার। আবাসিক ভবন থাকলেও তিনি আসেন দেরী করে আবার ফিরে যান দুপুর ১ টার আগে। ফলে ৩টি ইউনিয়নের ৮৬ হাজার পরিবার ও মেঘনা উপকূল অঞ্চলের গরিব অসহায় রোগীরা সরকারি চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রোববার (২৯ নভেম্বর) সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে বেহাল অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যন অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ। তিনি, ডাক্তারের যোগদানসহ অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন গ্রামবাসীদের।

অন্যদিকে হায়দরগঞ্জ বাজারে প্রতি শুক্রবার প্রায় ২৮টি ফার্মেসী বন্ধ থাকায় অসহায় রোগীরা আরো দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তারা সদর হাসপাতালে আসতে আসতেই রোগীদের মৃত্যুর কোলেই ঢেলে পড়তে হয়। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ডাক্তারসহ জনবল নিয়োগ দেয়ার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সিভিলসার্জন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সচেনত মহল। গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে এমবিবিএস ডাক্তারসহ চার জনের জনবল থাকার সিদ্ধান্ত থাকলেও এ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবকাঠামো ও ডাক্তার নেই। সরকারি সিদ্ধান্ত মতে, প্রতিটি উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন এমবিবিএস ডাক্তার, একজন ফার্মাসিস্ট, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও একজন অফিস সহায়কের পদ রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এমবিবিএস ডাক্তার ও ফার্মাসিস্ট নেই।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) হায়দরগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দেখা গেছে, এমবিবিএস ডাক্তারের পদ থাকলেও ডাক্তার নেই। এ কেন্দ্রে আধুনিক অবকাঠামো, বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও আধুুনিক যন্ত্রপাতি নেই। অনুমানের ওপর নাড়ি ও জিহ্বা দেখে ওষুধ দেয়া হয়। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নতুন নিয়োগকৃত মেডিকেল অফিসারদের প্রথম যোগদান ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে হওয়ার কথা। সেখানে দুই বছর বাধ্যতামূলক থাকার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বদলি করার কথা বলা হয়েছে। অথচ এসব নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তাররা তদবির করে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ডেপুটেশনে চাকরি করছেন।

হায়দরগঞ্জের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ঘিরে ৩টি ইউনিয়নের উদমারা, চরবংশী, খাশেরহাট, চরভৈরবী, চরআবাবিল, ঝাউঢগী, হাওলাদার বাজার, আলগি বাজার, চরভাংগা, টমটম পুরান বেড়ী, জালিয়ার চর, শহর আলী মোড়, বিরমপুর ও চরভৈরবি ইউনিয়নের ৮৬ হাজার ৬৩৮ পরিবার, হায়দরগঞ্জ বাজারের ২'শ ব্যবসায়ী, প্রায় ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে ও দিনমজুর চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু গত ৩০ বছর ডাক্তার না থাকায় মানুষের দূর্ভোগ চরমে পৌঁচেছে।

হায়দরগঞ্জ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মানষ দে জানান, আমি এ কেন্দ্রে কয়েকমাস আগে যোগদান করেছি। এমবিবিএস ডাক্তার ও ফার্মাসিস্ট না থাকায় তাদের দায়িত্ব তাকে একাই পালন করতে হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। মেডিকেল অফিসার না থাকায় তাকে অতিরিক্ত চাপ নিতে হচ্ছে।

রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন জানান, একজন এমবিবিএস মহিলা ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি প্রশিক্ষণে আছেন। এ মাসেই তিনি যোগদান করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ