Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দৈনিক ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান আনোয়ারার নকল চিপস কারখানায়

৩০ হাজার টাকা জরিমানা, মালিক ওমর ফারুকের কাছ থেকে মুসলেকা

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ৮:৪০ পিএম

চট্টগ্রামের আনোয়ারার খাজা আইমণি ফুড এন্ড বেভারেজ শিফা নামে নকল চিপস তৈরীর কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হাসান চৌধুরী।
সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও পশ্চিম শোলকাটা ভগগন শাহ্ মাজারের পাশে খাজা আইমণি ফুড এন্ড বেভারেজ শিফা নামে নকল চিপস তৈরীর কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। এসময়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, অনুমোদনহীন এ কারখানা বিভিন্ন নামি দামি কোম্পানির লেবেল ব্যবহার করে নকল চিপস, জুস ও আচারসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করে আসছিল এবং বাজারজাতও করছে খাজা আইমণি ফুড এন্ড বেভারেজ শিফা। সোমবার অভিযান চালিয়ে এ কারখানাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গত ২৭ নভেম্বর দৈনিক ইককিলাব পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সোমবার বিকালে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হাসান চৌধুরী। এসময় তিনি কারখানার মালিক ওমর ফারুকের কাছ থেকে মুসলেকা নেন এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তিনি আরো বলেন, কারখানা বন্ধ রাখার জন্য মালিককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি নির্দেশ অমান্য করে তাহলে কারখানা সিলগালা করা হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গ, নোংরা পরিবেশে আটা-ময়দা ও রঙের সঙ্গে কেমিক্যাল মিশিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা হচ্ছিল শিশুদের লোভনীয় পণ্য চিপস— যার পুরোটাই নকল। আনোয়ারার ঘিঞ্জি ঘরে বানানো এসব নকল চিপস ট্রাকে করে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী-হালিশহরের এক গোডাউনে। সেখান থেকে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় চিপসগুলো সরবরাহ করা হয়। এ ধরনের চিপস খেয়ে শিশুদের অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারেন এমন অভিমত শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও পশ্চিম শোলকাটা ভগগন শাহ্ মাজারের পাশে নকল চিপসের কারখানায় তৈরি হচ্ছে চিপস, ডাল ভাজা, চানাচুরসহ বিভিন্ন পণ্য। যেখানে যারা কাজে নিয়োজিত তাদের সবাই শিশু ও নারী শ্রমিক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার ব্যস্ততম শাহ্ মোহছেন আউলিয়া হাজীগাঁও সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে চিপস তৈরির এই কারখানা। প্রশাসনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে লাইসেন্সবিহীন কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে আটা, ময়দা, রং এবং বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয় নকল চিপসসহ বিভিন্ন পণ্য। কারখানার ভেতরে শিশু ও নারী শ্রমিকরা অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে প্যাকিংয়ের কাজ করেন। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন রঙের পাত্র, সোডা, ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক অ্যামোনিয়াজাতীয় পদার্থ। শ্রমিকরা খালি গায়ে ঘাম ঝরানো শরীরে কাজ করছেন। এখানে বাহারি রকমের নামিদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে শিশু ও নারীদের দিয়ে তৈরি হচ্ছে চিপস, ডাল, মটরভাজা ও চানাচুরসহ শিশুদের লোভনীয় খাবার পণ্য। আর এসব পণ্য পাহাড়তলী হালিশহরের মো. আবদুল্লাহ্ আল মাসুদ নামে এক ব্যক্তির মেসার্স রাহা এন্টারপ্রাইজের ঠিকানায় ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয় রাতে বা দিনে। তবে এ বিষয়ে ২৫ নভেম্বর মেসার্স রাহা এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর আবদুল্লাহ্ আল মাসুদের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে চিপস কারখানায় মালিক পরিচয়ে ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তি মাসুদের ফোন থেকে প্রতিবেদককে হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের কী আছে কী নেই- সবই কি আপনাকে বলতে হবে? আপনার কিছু লাগলে এখানে এসে যোগাযোগ করেন। আমি স্থানীয় নেতা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ