Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলছে সড়ক উন্নয়ন : কমছে যানচলাচল

লোকসানের মুখে টোল প্লাজার ইজারাদার

দিনাজপুর অফিস | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহৎ টোল আদায়যোগ্য সেতু দিনাজপুরের মোহনপুর সেতু। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ হয়ে ঢাকাসহ পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সড়কপথের যোগাযোগের নির্ভরযোগ্য সড়কটির আত্রাই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটিতে গত ২০০২ সাল থেকে টোল আদায় শুরু হয়। সওজ দিনাজপুর প্রতি এক বছর পরপর টোল আদায়ে বছর ভিক্তিক দরপত্র আহবান করে। ২০১৮ সালে তিন বছরের জন্য টোল আদায়ের দরপত্র আহবান করলে ইজারা পায় মেসার্স মা ট্রেডার্স, ঢাকা। গত ৯/১১/২০১৮ হতে টোল আদায় শুরু করেন প্রতিষ্ঠানটি।
ইজারাদার মেসার্স মা ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী মো. আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল জানান, প্রথমদিকে সব ঠিক থাকলেও মাত্র ৬ মাস যেতে না যেতেই সড়কটিতে ফোর লেনের কাজ শুরু হয়। রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য দু’পাশের লক্ষাধিক গাছ কর্তন ও প্রায় দেড় শতাধিক কালবার্ড-ব্রিজ ভেঙে ফেলা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হলে যানচলাচলে বিঘœ শুরু হয়। পরবর্তীতে রাস্তার দু’পাশে প্রায় তিন ফুট গর্ত করে সড়ক সংস্কার শুরু হলে যানচলাচল অর্ধেকে নেমে আসে। ভোগান্তি এড়াতে মালবাহী প্রায় সকল ট্রাক, মিনিবাস ও কার বিকল্প পথ হিসাবে পার্বতীপুর মধ্যপাড়া এবং দশমাইল হয়ে চলাচল শুরু করে। যানচলাচল অর্ধেকে নেমে আসলে ইজারাদার কর্তৃপক্ষের মাথায় হাত পড়ে। টোল আদায়ের জন্য ২৪ ঘণ্টা নিয়োগ করা কর্মচারীর বেতনের টাকা ওঠানোই মুশকিল হয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান জানান, বিধি মোতাবেক ইজারাদারকে প্রতি তিন মাস পরপর ১ কোটি ১২ লাখ ৩৩ হাজার ২শ’ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের থাবায় যানচলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। যদিও এসময়ের জন্য তিন মাসের জন্য টোল আদায় বন্ধ ঘোষণা করে। তার মতে, ২০২০ সালের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৬৭ দিনের জন্য সরকার টোল মওকুফ করার ঘোষণা দেয়। এপ্রিলের পর সীমিত আকারে যান চলাচলের অনুমতি দিলেও করোনাজনিত কারণে যানচলাচল ৪ ভাগের এক ভাগে নেমে আসে। ফলে মাত্র ৬৭ দিনের সরকারি টোল মওকুফ ইজারাদারের জন্য কোন সুফল বয়ে আনে না। ইজারার শর্ত মোতাবেক মোট ১১ কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হবে। ইতোমধ্যেই ৬ কিস্তি প্রদান করা হয়েছে। বাকি ৫ কিস্তি। ইজারাদারের মতে, যে সেতুতে প্রতিদিন আদায় হতো দেড় থেকে ২ লাখ টাকা, সেখানে আদায় হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। টোল আদায় না হলেও সরকারকে টাকা দিতেই হচ্ছে এবং হবে। এ অবস্থায় ইজারাদার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিতী চাকমা জানান, মোহনপুর সেতুর টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের সত্ত¡াধীকারী মো. আনোয়ারুল ইসলাম বাবুল এ বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন। ইতোমধ্যেই ইজারাদারের ক্ষতির বিষয়টি সড়ক ও সেতু মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। ক্ষতি বিবেচনায় ইজারার মূল্য কমানোর ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের। তার মতে, করোণার পাশাপাশি দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ সড়কের উন্নয়ন কাজের বিষয়টি পরিবহন মালিক শ্রমিক ও সাধারণ মানুষেরর পাশাপাশি সরকারের সকল মহল অবগত রয়েছে। ফলে মন্ত্রণালয় তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ইজারাদারের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় আনতে পারেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ