Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দিনাজপুরাঞ্চলে কৃষকের উঁচু মাথা

দিনাজপুর থেকে মাহফুজুল হক আনার | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

করোনা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিলেও কৃষকদের কাবু করতে পারেনি। কৃষকরা ঠিকই মাঠে কাজ করে ফলন ফলিয়েছেন। বরং করোনার প্রভাব কৃষকদের উজ্জীবিত করেছে। একটির পর একটি ফসল ফলিয়ে নিজেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এখন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারদের হাতে টাকা না থাকলেও ফসলের দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকদের হাতে এখন টাকা। শীতের শুরুতে শহরের গরম কাপড়ের দোকানদারেরা অপেক্ষা করতে থাকে কখন সকাল হবে আর গ্রাম কৃষক পরিবারেরা আসবে কাপড় কিনতে। এ অবস্থা শুরু কাপড়ের দোকানে নয় সকল পণ্যের দোকানে। এর একমাত্র কারণ কৃষকদের হাতে এখন পর্যাপ্ত টাকা।

খাদ্যে উদ্বৃত্ত দিনাজপুর জেলাকে ধানের জেলা বলা হলেও এখন এই জেলায় আম-লিচু-ভুট্টার পর স্থান করে নিয়েছে কলা, পেয়ারা, মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি। গত কয়েক বছর ধরেই দিনাজপুরে চাহিদার দ্বিগুণ ধান উৎপাদন হয়ে আসছে। এ বছরও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। অবশ্য বন্যার থাবা দিনাজপুরে না পরাটাও এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার অন্যতম কারণ।

দিনাজপুর জেলায় চালের আকারে খাদ্য চাহিদা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন। সে ক্ষেত্রে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যেই দিনাজপুরে মোটা জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। দাম তুলনামূলকভাবে ভাল পাওয়ায় কৃষকরা অত্যন্ত খুশি। সরকার আমন ধানের দর নির্ধারণ করেছে ২৭ এবং চাল ৩৭ টাকা কেজি হিসাবে। এতে বাজারে ধানের দাম ভাল। দিনাজপুরের বাজারে মোটা জাতের মধ্যে সুমন স্বর্ণ, বি আর-১১, নেপালী স্বর্ণসহ বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করেছে। অর্ধেক জমিতে আবাদ করেছে কাটারী জাতের সুগন্ধি ধান। মোটা ধান একরে ২৮ থেকে ৩০ মণ ধান পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কিছু ফলন কম হলেও অধিকাংশ এলাকায় ফলন ভাল হয়েছে। একটু শুকনো হলেই ১১’শ থেকে ১২ টাকা বস্তা অর্থাৎ সাড়ে ৫’শ থেকে ৬ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। মণে ৫০ টাকা কম নিলেই ফড়িয়ারা জমি থেকেই কাঁচা ধান কিনে যাচ্ছে। কৃষকরা আশা করছে কাটারি ও চিনিগুড়া ধান আর কিছুদিনের মধ্যেই কাটা ও মাড়াই শুরু হবে। এই সর্বনিম্ন হলেও ৩২’শ টাকা বস্তা দরে বিক্রি হবে। অর্থাৎ লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই।

অপরদিকে কলা, পেয়ারা মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের আবাদে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কৃষকেরা। দিনাজপুরের কলা পেয়ারা মাল্টা যাচ্ছে অন্যান্য জেলায়। এর আগে লিচুতে প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে কৃষকেরা। তাই করোনার এই দুঃসময়ে আর কারো মুখে হাসি না থাকলেও কৃষকের মুখে হাসি রয়েছে। এর জন্য সরকারি ক্রয়নীতি অনেকটাই সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ