Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দায়িত্ব পাচ্ছে সিটি করপোরেশন

রাজধানীর পানিবদ্ধতা নিরসন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ওয়াসার কাছ থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় করা যায় সেজন্য টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিমকে কমিটির আহবায়ক এবং উপসচিব মোহাম্মদ সাঈদ উর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

টেকনিক্যাল কমিটিতে দুই সিটি করপোরেশনের চারজন করে আটজন এবং ওয়াসার চারজন প্রতিনিধিও থাকবেন। গতকাল ‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে খালসমূহ সিটি কর্পোরেশনের নিকট ন্যস্তকরণ’ সংক্রান্ত পরামর্শ সভা শেষে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, টেকনিক্যাল কমিটি এক মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দেবে এবং প্রতিবেদন পাওয়ার পর হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সভায় অংশ নেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পানি জমে দুর্ভোগ হয় নগরবাসীর। এ কারণে ঢাকা ওয়াসার সমালোচনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশন একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছে। ঢাকা ওয়াসা বিভিন্ন সময় বলেছে, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব সংস্থাটির নয়। এই প্রেক্ষিতে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে বিভিন্ন সময়।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের সভায় আলোচনা হয়েছে। আজকের মূল বিষয় ঢাকা শহরের ড্রেনেজ সিস্টেম এবং খালগুলো নিয়ে আপনারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, এগুলো সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর হবে কিনা। আমি ব্যাকগ্রাউন্ডটা আগেও বলেছি যে, আইনে যেভাবে আছে সিটি কর্পোরেশন এ কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ। ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিছন্নতা এবং সংস্কার করাসহ তারা দায়বদ্ধ। কিন্তু একটি সময় প্রেসিডেন্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াসার কাছে এই দায়িত্বটা হস্তান্তর করা হয়েছে। সেজন্য কাজটি ওয়াসা ইতিমধ্যে করে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের দুইজন মেয়র জনগণের কল্যাণে আন্তরিক। ওনারা চান এ কাজটি যদি ওনারা করেন ভালো করতে পারবেন।

পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন কাজ ওয়াসার কাছে থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ড্রেনেজ সিস্টেমটা সিটি করপোরেশনের কাছে গেলে তারা ভালো করতে পারবে। এটার জন্য নীতিগতভাবে ঐক্যমতে পৌঁছতে পেরেছি।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, যেটি আমরা চেয়েছিলাম তাই বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে একমত হয়েছি এবং এখানে যেহেতু টেকনিক্যাল অনেক ব্যাপার আছে। জনগণের পাশে থেকে জনগণের দুর্ভোগ, জলাবদ্ধতাৃসে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যে সভা হয়েছে তাতে আমরা একমত পোষণ করেছি। আমরা চেষ্টা করব জনগণকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষার জন্য। কালসীর ৬০ ফুটের খাল এখন পাঁচ ফুট পাওয়ার কথা জানিয়ে উত্তরের মেয়র বলেন, খালগুলো উদ্ধার করে দুই পাশে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেইনসহ যুগোপযোগী করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা নিরসনে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৯৮৮ সালে জনস্বার্থ প্রকৌশল বিভাগ এ দায়িত্ব (পানি নিষ্কাশন) সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা না দিয়েও ওয়াসাকে দেওয়া হয়। সেই থেকে আজ অবধি প্রায় ত্রিশ বছরের ঊর্ধ্বে ঢাকাবাসী দুর্ভোগে নিমজ্জিত ছিল। আজকের এই সিদ্ধান্তে আমরা একটা নব সূচনা করতে পারছি। আমি আশাবাদী আমরা অচিরেই ঢাকাবাসীকে এর সুফল পৌঁছে দিতে পারব।

এটি সিটি কর্পোরেশনের একটি বাড়তি দায়িত্ব হল কিনা জানতে চাইলে তাপস বলেন, ঢাকাবাসী নির্বাচনের মাধ্যমে তারা দুজন নেতাকে নির্বাচিত করেছেন। সেই ম্যান্ডেটের কারণে এই সাহস করেছি যে, ঢাকাবাসীকে এ সমস্যা থেকে সমাধান দিব। সকল প্রতিকূলতা নিয়েই এ বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছি।

তবে এখানে ঢাকা ওয়াসার কোনো ব্যর্থতা দেখেন না এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, একাজ সিটি কর্পোরেশনকে দেওয়ার জন্য অনেকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা নেয়নি। এটা আমাদের ব্যর্থতা নয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পানিবদ্ধতা-নিরসন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ