পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের কিছু জ্ঞানপাপী মুর্খরা ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি অপচেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি) ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের সকল প্রসিদ্ধ আলেমরা একমত যে, ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। একটা মানুষকে মাটি বা পাথর দিয়ে যে কোন ভাবে হুবহু মানুষ আকারে ধারণ করলে যার ছবি বা ছায়া পড়ে তার নাম মূর্তি। তাকে মানুষ পূজা করলেও মূর্তি না করলেও মূর্তি। অথচ আমাদের দেশের কিছু জ্ঞানপাপী মুর্খরা ভাস্কর্য আর মূর্তির মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি অপচেষ্টা করছে। প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙিয়ে দেশে একের পর এক সংগঠন গড়ে তোলা হচ্ছে। আর সেই সমস্ত সংগঠনগুলো নাকি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। বাংলাদেশে ভাস্কর্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন খুব লাফালাফি শুরু করেছে। এসব ইসলাম বিরোধীরা রাস্তায় টোকাই ধরে ধরে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। কারণ তাদের তো জনসমর্থন নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আলেম ওলামাদের চেয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আর কেউ নেই। আলেম ওলামারা বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করে, সম্মান দিয়ে কথা বলে। অথচ বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙ্গিয়ে চলা মানুষগুলো আলেমদের গালাগালি করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে দেশের কয়েকজন মন্ত্রীও এই কাতারে রয়েছেন। মন্ত্রীত্বের চেয়ারে বসে জনগণের সাথে কোন ভাষায় কথা বলতে হয় সেটা শেখা উচিত।
আইএবি’র নগর সভাপতি বলেন, কোন কোন আলেম নামধারীকে দেখা যাচ্ছে সরকারি টাকা খেয়ে উল্টাপাল্টা ফতোয়া দিচ্ছেন। যদিও এতে আমরা আশ্চর্য হচ্ছি না। কারণ সরকারি টাকা খেয়ে দরবারি আলেম হওয়া আজ নতুন কোন ঘটনা নয়। সম্রাট আকবরের সময় আবুল ফজলের মতো আলেম ছিল, যার কাজই ছিল সম্রাট আকবরের পক্ষে কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা করে বিভিন্ন ফতোয় দেয়া। সম্রাট আকবর যখন সকল ধর্ম বাতিল করে দ্বীন-ই-এলাহী চালু করেছিল তখনও এ আবুল ফজল সম্রাট আকবরের দ্বীন-ই-এলাহীর পক্ষে ফতোয়া দিয়ে ছিল। বর্তমান সময়ও আবুল ফজলের কিছু অনুসারী বাংলাদেশে রয়েছে যারা সরকারের দালালি করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মূর্তির পক্ষে ফতোয়া দিতেও তাদের কলিজা কাঁপছে না। এমনকি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করছে মূর্তি এবং ভাস্ককর্য এক নয়। অথচ দেশের সকল প্রসিদ্ধ আলেমদের একমত যে, ভাস্কর্য ও মূর্তির মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। তিনি আরও বলেন, বাংলা একাডেমীর ব্যবহারিক বাংলা অভিধানেও ভাস্কর্য বলতে ভাস্কর শিল্প, প্রস্তরাদি খোদাই করে বা তা দিয়ে মূর্তি নির্মাণের কাজকে বুঝিয়েছে এবং ভাস্কর হচ্ছে প্রস্তরাদি থেকে যে মূর্তি ইত্যাদি নির্মাণ করে। আর মূর্তি হচ্ছে দেহ, আকৃতি, রূপ বা প্রতিমা।
হুঁশিয়ারি উচ্চরণ করে তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে এসব উল্টাপাল্টা ফতোয়া দিয়ে মূর্তি তো দূরের কথা ইসলাম বিরোধী কোন কাজ বরদাস্ত করা হবে না। তসলিমা নাসরীন, লতিফ সিদ্দিকীসহ আরও অনেকে ইসলাম বিরোধী হয়ে মাথা উঁচু করতে চেয়ে ছিলেন কিন্তু তারা টিকে থাকতে পারেনি। আর কেউ পারবেও না ইনশাআল্লাহ।
ভাস্কর্য-মূর্তি নির্মাণ ইসলামে হারাম বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির এবং দলের ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পৃথিবীতে আগমন হয়েছিল মূর্তিকে ধ্বংস করার জন্য। রাসুলুল্লাহ(সা.) কাবা ঘরের পাশে থাকা সব মূর্তি ধ্বংস বা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিলেন। স্মৃতি ধরে রাখতে ভাস্কর্য বা মূর্তি নির্মাণ করা ইসলামে হারাম। ভাস্কর্য এবং মূর্তি এক ও অভিন্ন, এর মাঝে কোন পার্থক্য নেই। মানুষ এটার পূজা করুক, আর না করুক ইসলামের দৃষ্টিতে কোন প্রাণীর ভাস্কর্য তৈরি করা হারাম।
গতকাল বাদ যোহর ডেমরায় অনুষ্ঠিত খেলাফত আন্দোলনের এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর আলহাজ আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, মো. হাসানুজ্জামান, মাওলানা সানাউল্লাহ ও মাওলানা বেলাল হোসাইন।
মাওলানা হামিদী আরো বলেন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মূর্তি নয়, স্থানে স্থানে মসজিদ নির্মাণ করুন। মসজিদ আল্লাহর ঘর। মানুষ সেখানে ইবাদত বন্দেগি জিকির তেলাওয়াত দোয়া করবেন। মহান আল্লাহর ইবাদত করার কারণে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে, ছাওয়াব পাবে। আর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি হলে বঙ্গবন্ধুর কবরে আজাব হবে। বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত হিতাকাঙ্খীরা কখনো ভাস্কর্য-মূর্তিকে সমর্থন করতে পারে না। এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা কাফির-মুশরিকদের মূর্তি সংস্কৃতি বরদাশ্ত করবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।