Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পৌরসভা নির্বাচন

ফুলবাড়ীতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের গণসংযোগ

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২০, ২:১৬ পিএম | আপডেট : ৬:৩২ পিএম, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে রাত দিন গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দোয়া ও সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে দিচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ।
বিগত দিনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিরপেক্ষ হলেও এবারে পৌরসভা নির্বাচন দলীয় ব্যানারে হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষনার পর সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারনার পাশাপাশি দলীয় নেতাদের সন্তুষ্ট রাখতে,তৃণমূলের মতামত পাওয়ার আশায় জোর তদবির চালাচ্ছেন। পৌর এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলের মেয়র পদের সম্ভাব্য প্রার্থীর দোলা শুরু হয়েছে। অপরদিকে হাওয়ার বিপরীতে প্রচারণায় থেকেও অনেকটা দ্বিধাগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছেন বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীসহ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভয়ে আছেন মামলা ও গ্রেফতার নিয়ে। অন্যদিকে বিএনপির এ ভয় ও জামায়াত শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে ভোটযুদ্ধে জয়ের সম্ভাবনায় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের বাড়িবাড়ি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিএনপি’র একাধিক প্রার্থীসহ প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন বর্তমান মেয়রসহ ১২ জন মেয়র প্রার্থী। এর মধ্যে বর্তমান মেয়রসহ ৪জন প্রার্থী নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। অন্যান্য প্রার্থীরা শেষ মুহূর্তে ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেতাদেরকে সন্তুষ্ট করতে ব্যস্ত রয়েছেন।
গণ-সংযোগে নামা প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান মেয়র ও ফুলবাড়ী রক্ষার অরাজনৈতিক সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের আহবায়ক মুরতুজা সরকার মানিক, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, সাবেক পৌর মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা শাহজাহান আলী সরকার পুতু, পৌর বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান সরকার, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম,উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খাজা মইনুদ্দিন,সিপিবি সাধারণ সম্পাদক এস,এম নুরুজ্জামান,উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আবুল বাসার,উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শিবলী সাদিক,স্বতন্ত্র প্রার্থী দলিল লেখক আল আমিন সরকার, সাবেক পৌর মেয়র হবিবর রহমান সরকারের বড় ছেলে আব্দুল কাইয়ুম সরকার, জাতীয় পার্টির নেতা জামিল হোসেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘোষণা অনুযায়ী দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে দলীয় নেতারা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামলেও নির্দলীয় ভাবে কমর বেধে মাঠে নেমেছেন বর্তমান মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক, সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল, আল আমিন সরকার ও সাবেক পৌর মেয়র হবিবর রহমান সরকারের ছেলে আব্দুল কাইয়ুম সরকার।
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিযোগিতায় উপজেলা আওয়ামলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহজাহান আলী সরকার পুতু এগিয়ে থাকায়, নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন যুবলীগের সভাপতি খাজা মইনুদ্দিন।
অপর দিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন,জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি । কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলেই তারা প্রার্থী মনোনয়ন দিবেন। ইতিমধ্যে দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেতে ও প্রার্থী হওয়ার প্রতিযোগিতায় ৪ জন প্রার্থী মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। এরা হলেন, পৌর বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান সরকার, পৌর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাজুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আবুল বাসার ও যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক। তবে বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়,দল থেকে যাকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে অবশ্যই সে প্রার্থী সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এছাড়াও ১জন করে প্রার্থী রয়েছেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক এসএম নুরুজ্জামান ও জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা জামিল হোসেন।
বর্তমান পৌর মেয়র মুরতুজা সরকার মানিক বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যেহেতু সরকারের পরিবর্তন ঘটে না সে কারণে দলীয় কোন প্রভাবই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পড়ে না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাররা সরাসরি প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ কারণে সব দলের লোকরাই তাদের মনপুত প্রার্থীকে বেছে নেয়। তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বে অধিকাংশ ভোটার নির্দলীয় প্রার্থীকে ভোট দিয়ে এসেছে। একই কথা বলেন, তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েল। তিনি বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাররা দলমতের উর্দ্ধে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী যাচাই করেই ভোট দিয়ে থাকে। যার ফলে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে এলাকা ভিত্তিক ভোটের মাধ্যমেই প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়।
এদিকে পৌর বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল মান্নান সরকার ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাসার বলেন, ইতিপূর্বে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো নির্দলীয়ভাবে হয়েছে। সেখানে দলের পক্ষের প্রার্থী থাকলেও মনোনীত প্রার্থী ছিল না কিংবা দলীয় প্রতীকও ছিল না। কিন্তু এবারের নির্বাচনে দলীয় লোকজন দলের প্রার্থী ও দলীয় প্রতীককেই গুরুত্ব দিবে বেশি। একই কথা বলেন, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শাহজাহান আলী সরকার পুতু।
অপরদিকে ফুলবাড়ী পৌর বাজারসহ আশপাশ এলাকায় চায়ের দোকানগুলোতে চলছে আসন্ন পৌর নির্বাচনের হিসাব নিকাশ। কে হচ্ছেন আগামী দিনের ফুলবাড়ী পৌর পিতা। প্রার্থীদের পক্ষের লোকজনেরা ছুড়ে দিচ্ছেন তাদের প্রার্থীদের পক্ষে যুক্তিতর্ক। গত সোমবার রাতে ইসির বৈঠকে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন ঠিক হওয়ায় সবার দৃষ্টি এখন তফশিল ঘোষনার দিকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ