Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুঁজিবাজারে মন্দাভাব দুই সপ্তাহ ধরে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

টানা দুই সপ্তাহ ধরে মন্দাভাব বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক দুই সপ্তাহে ডিএসইএক্স কমেছে ৬২ পয়েন্ট। ফলে টানা পতনে বাজার মূলধন কমেছে ৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সা¤প্রতিক সময়ে কাছাকাছি সময়ে বেশ কয়েকটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের তহবিলের একটি অংশ আটকে গেছে। এতে গত দুই সপ্তাহে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমেছে। এ সময়ে বেশকিছু কোম্পানি স্পট মার্কেটে ছিল। 

চলতি ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বেক্সিমকো লিমিটেডের মুনাফা কমার কারণে কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে, যা সূচকের পতনে ভ‚মিকা রেখেছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর বাড়ার কারণে অনেকেই এ খাতে বিনিয়োগে ঝুঁকেছেন। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর বাড়া বা কমার প্রভাব সূচকে প্রতিফলিত হয় না। সব মিলিয়ে এ সময়ে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমেছে এবং তারা শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রি করেছেন বেশি, যার প্রভাব পড়েছে সার্বিক সূচকে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইএক্স ছিল ৪ হাজার ৯৪২ পয়েন্টে। ১২ নভেম্বর সপ্তাহ শেষে সূচকটি ৪ হাজার ৯০৫ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। গেল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ৪ হাজার ৯০৫ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহ শেষে সূচকটি কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৮০ পয়েন্টে। ডিএসইএক্সের পাশাপাশি এ সময়ে ডিএসইর ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০ এবং শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসও পয়েন্ট হারিয়েছে।
আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন প্রায় ৮ শতাংশ বাড়লেও গেল সপ্তাহে ডিএসইর দৈনিক গড় লেনদেন ১৪ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৭৮১ কোটি ৮২ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৯১১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৯০৯ কোটি ১০ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৪ হাজার ৫৫৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ১৯৯টির, অপরিবর্তিত ছিল ৬৩টির, আর লেনদেন হয়নি তিনটির।খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। প্রায় ১৫ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সাধারণ বীমা এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত। ৯ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্যাংক খাত। এছাড়া ৭ দশমিক ৮ শতাংশ দখলে নিয়ে প্রকৌশল খাত চতুর্থ এবং ৪ দশমিক ৮ শতাংশ দখলের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত পঞ্চম অবস্থানে ছিল।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো), গ্রামীণ ওয়ান স্কিম টু, ব্র্যাক ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
এক্সচেঞ্জটিতে গত সপ্তাহে দরবৃদ্ধিতে (সমাপনী দরের ভিত্তিতে) শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ ল্যাম্পস, আরামিট লিমিটেড, বঙ্গজ, এপেক্স ফুডস, আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড, এসিআই ফরমুলেশনস, ফার্মা এইডস, সালভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, এডিএন টেলিকম ও সাফকো স্পিনিংস মিলস লিমিটেড।
এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইতে দরপতনে শীর্ষে ছিল সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, এশিয়ান টাইগার সন্ধানী লাইফ গ্রোথ ফান্ড, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ ফান্ড, প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এসএস স্টিল লিমিটেড, ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সপ্রেস ইন্সুরেন্স ও হামিদ ফ্যাব্রিকস লিমিটেড।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স সূচক ৬০ পয়েন্ট কমে গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৮ হাজার ৪১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ১১২ কোটি ৩ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৫০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ৩১৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭২টির, কমেছে ১৭৬টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ৬৫টির বাজারদর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুঁজিবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ