বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
সরকারের অপকর্মের সমালোচনা রুখতেই বিরোধীদের গুম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে যেটা প্রত্যক্ষ করছি গত এক দশক ধরে এই গুমের সংস্কৃতি দিয়ে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকছে। যেহেতু তারা জনগণ থেকে আজকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেই কারণে তারা গুমের সংস্কৃতি চালু রেখে ভয় দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের ওপর নির্যাতন করছে। উদ্দেশ্য একটাই- সরকারের যে বিভিন্ন অপকর্মগুলো রয়েছে সেই অকর্মগুলোর সমালোচনা না করা যায়, সরকারের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করলেই এর একটা ভীতি সৃষ্টি করা যায় গুম দিতে পারে। এখানে এটাই হচ্ছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রচ-ভাবে বিনষ্ট হচ্ছে।
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) বিকালে এক জরুরী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। তারা হচ্ছেন লিয়ন হক, মামুন পারভেজ তন্ময়, তৌহিদুল ইসলাম হাসিব, ফেরদৌস মজুমদার মাসুম ও সেলিম মিয়া। এই পাঁচজনকে তুলে নিয়ে গেছে সাদাপোষাকধারী ব্যক্তিরা, অনেক জায়গাতে পুলিশেরা তুলে নিয়ে গেছে। দল ও তাদের পরিবার থেকে খোঁজ করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অস্বীকার করছে যে তারা এই সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন না। যারা গুম হয়েছে তাদের পরিবার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন অবস্থায় আছে, আমরাও উদ্বিগ্ন অবস্থায় আছি।
তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছে আহবান জানাব, কোনো ব্যক্তি যদি নিখোঁজ হয় তাহলে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারের। বিশেষ করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে যাওয়ার পরে- এটা একটা অসম্ভব ব্যাপার একটা যে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়েছে তারপরে সাদা পোষাকধারী গোয়েন্দারা তাকে তুলে নিয়ে যাবে। কোন দেশে বাস করছি আমরা?
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে কি আইনের শাসন নেই, এখানে কী কোনো আপনার কোনো যে গণতন্ত্রের ন্যূনতম অধিকারগুলো ১৯৭২ সালে সংবিধানে আমাদেরকে দিয়েছে সেগুলো কী আমাদের নেতা-কর্মী-ভিন্নমত পোষণকারীদের জন্য একেবারে অনুপস্থিত হয়ে গেলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে বাস্তবতা হচ্ছে এটা- এই সরকার শুধু জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েনি তারা পুরোপুরিভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আজকে তারা রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে, করাত্ব কেের্ছ সেভাবে তারা টিকে থাকতে চায়। আমি সরকারের আহবান জানাব, অবিলম্বে গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের খুঁজে বের করা হোক, যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করা হয়েছে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হোক এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক।
গত ১২ নভেম্বর রাজধানীতে গাড়ির পোড়ানোর ঘটনা সরকারের এজেন্টদের পুরনো খেলা বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার এই যে নীল নকশা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করবার তার বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছি এবং দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের জন্যে আবার সংগ্রাম করার আহবান জানাচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজকে রাজনীতি করার জন্য যদি মানুষকে গুম হয়ে যেতে হয়, ভিন্নমত পোষণ করার জন্য যদি গুম হতে হয় তাহলে এদেশে গণতন্ত্রের লেশ মাত্র নেই। বাস্তবতা হচ্ছে যে, এদেশে কোনো নির্বাচনই হয় না। এখন নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে। জনগনের কোনো আস্থা নির্বাচনের প্রতি নেই।
এটা হয়েছে সরকারের কারণে। সরকারের বংশবদ নির্বাচন কমিশন তারা একটা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারেনি। নির্বাচন বা জনগনের ভোট দেয়ার যে অধিকার এটা রক্ষা করার দায়িত্ব শুধুমাত্র বিএনপির নয়, এদেশের সকল মানুষের। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র বন্ধ করবার যে প্রক্রিয়া তাকে বন্ধ করতে হবে এবং তা হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।