Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

বাঁচতে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে কোভিড ঠেকানোর যুদ্ধ চলছে : ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মানুষকে সচেতন হতে হবে : ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ কেউ কথা শুনছেন না : ডা. নজরুল ইসলাম মাস্ক পরা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

সারাবিশ্বের মতো দেশেও করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু মহামারি এ ভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে নেই কোনো ভীতি-উদ্বেগ। সরকার ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ঘোষণা করেছে; স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষার প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ সেদিকে কারোই ভ্রুক্ষেপ নেই। গণপরিবহন, হাট-বাজার, বিপণিবিতান, মার্কেট, লঞ্চ-স্টিমার কোথাও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মাস্ক পড়তে মানুষকে বাধ্য করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নেমেছে; তবুও হুশ হচ্ছে না সাধারণ মানুষের। জাতি হিসেবে আমরা কি বেখেয়ালি হয়ে গেলাম? চীনের ভ্যাকসিন পরীক্ষা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফেলে ভারত থেকে ভ্যাকসিন ক্রয়ের কারণে করোনা ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনা ঠেকানোর উদ্যোগ খুবই সময়োযোগী। কিন্তু মানুষ যদি সজাগ না হন তাহলে দায় কার?

জানতে চাইলে করোনা মহামারি বিশেষজ্ঞ ও রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, এ মুহূর্তে মানুষ যেন রিলাক্স হয়ে গেছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। এ কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। এখনই মানুষ সচেতন না হলে এবং নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে শীতে করোনা ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের কারণে মানুষের সর্দি-কাশি, অ্যাজমা (হাঁপানি) বাড়ে, ব্রঙ্কাইটিস বাড়ে, সিজন চেঞ্জের জন্য কিছু ভাইরাস জ্বর হয়ে থাকে। টনসিল ফুলে যাওয়া, সাইনোসাইটিজ এগুলো করোনাভাইরাসের ছড়ানোর জন্য উর্বরভ‚মি। এ ছাড়াও পরিবেশ দূষণের কারণে এ রোগগুলো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা এমনিতেই শীতকালে বেশি। তার সঙ্গে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মানুষকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। তবে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা না খুললেও সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। অথচ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাচ্ছেন না। ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ঘোষণা দেয়া হলেও প্রায়ই দেখা যায় মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছেন।

জানতে চাইলে প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, সামনে শীত, তাই করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে। অথচ সর্বত্র গা-ছাড়া ভাব। দেশের মানুষ কোনোক্রমেই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, মাস্ক পরে না। হাত ধোয়ার চর্চা কারো নেই, শারীরিক দূরত্ব মানছে না, মানুষের মধ্যে ভীতি-আতঙ্ক কেটে গেছে। রাস্তা-ঘাটে চললে তো মনেই হয় না যে দেশে করোনা আছে। কাঁধের ওপর কাঁধ দিয়ে সবাই চলাফেরা করছে। এমনকি হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগেও একই অবস্থা। মাস্ক পড়লে শতকরা ৮০ ভাগ করোনা নিরাপদ থাকা যায়। এ জন্যই ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে। মানুষকে সচেতন হতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং সামাজিক দূরত্ব মানা না হলে দ্বিতীয় ঢেউ এ ভাইরাসটি ভয়াবহ রুপ নিতে পারে। শীত শুরুর আগেই কার্যত সেই ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু বিশ্বের উন্নত দেশগুলো করোনা থেকে নাগরিকদের নিরাপদ করতে ভ্যাকসিন সংগ্রহের দিকে ঝুঁকে পড়লেও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। মূলত চীনের ভ্যাকসিন ট্রায়াল না করে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারত থেকে কেনার আমলাতান্ত্রিক অদূরদর্শি সিদ্ধান্তই ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনিশ্চতার মধ্যেই রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে এরমধ্যেই খবর বের হয়েছে বাজারে আসার আগেই ধনীদেশগুলো সম্ভাব্য উৎপাদিত ভ্যাকসিনের শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ক্রয়ের জন্য বুকিং দিয়েছে। সিনোভ্যাক, মডের্না, ফাইজার, এস্টোেেজনেকা, গ্যানমলিয়ার ভ্যাকসিন সবার আগে আসবে। নিউইয়র্ক টাইমসের করোনাভ্যাকসিন ট্রেকারের তথ্য মতে গত ৩ নভেম্বর পর্যন্ত আরো অন্তত ১১টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন পরীক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। যেসব দেশ এরই মধ্যে ভ্যাকসিনের অর্থ দিয়ে রেখেছে তাদেরকে প্রথম ধাপেই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

মূলত, ভারত কিনবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি বিভিন্ন দেশে চূড়ান্ত ট্রায়ালে রয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি এই ভ্যাকসিন আগামী ডিসেম্বরের শুরুতে পাওয়া যাবে। গত ৫ নভেম্বর সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক সই করেছে। সেরামের কাছ থেকে ৩ কোটি ডোজ করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা সেই স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে। বেক্সিমকো ‘কোভিশিল্ড’ নামের এই ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআইয়ের অধীনে সেগুলো সরবরাহ করবে। সমঝোতা স্মারক মতে, এই ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু অন্যান্য দেশ যখন ভ্যাকসিন পেতে উদগ্রীব; তখন বাংলাদেশ কার্যত ভারতের মুখাপেক্ষি হয়ে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের ইপিআইয়ের একজন পরিচালক শামসুল হক বলেন, এই মুহূর্তে আমরা মডের্না ও ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ে ভাবছি না। কারণ, আমাদের ইপিআই কর্মসূচির অধীনে এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ ও সরবরাহ করার সামর্থ্য নেই। এগুলো ব্যয়বহুল। বরং যেসব ভ্যাকসিন আমাদের বিদ্যমান ব্যবস্থায় সংরক্ষণ করা যাবে যেগুলোর ওপর আমরা জোর দিচ্ছি।

স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক বাধ্যতামূলক ছাড়াও আরো কিছু শর্তে গণপরিবহন, মার্কেট, বিপণিবিতান খুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু গণপরিবহনে কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। রাজধানীর মার্কেটগুলোতে প্রথম দিকে স্যানিটাইটার ব্যবহার ও হাত ধোয়ানো হলে এখন সেটা নেই। গত কয়েকদিন রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায় কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মুখে মাস্ক পড়েন না অর্ধেক মানুষ। কেউ কেউ থুতনিতে মাস্ক পড়েন। সড়কে বিপুল সংখ্যাক ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রিকশা। কোথাও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।

রাজধানীর অলিগলিতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই চোখে পড়েনি। দোকানে দোকানে ভিড় করছেন মানুষ। গতকাল সকাল ১১টায় ফকিরাপুল টিএন্ডটি কলোনির কাঁচাবাজারে দেখা যায় মানুষের ভিড়। নিউমার্কেটে, মার্কেটে প্রচন্ড ভিড়। কেউ সামাজিক দূরত্ব কেউই মানছেন না। বাজারের ভেতরে মোদি দোকানগুলোতে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। ওই দোকানের বাইরে একটি সাদা কাগজে লেখা স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোল চিহ্ন দেওয়া স্থানে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনুন। কিন্তু ক্রেতাদের কেউই তা মানছেন না। তারা গা ঘেষে দাঁড়িয়ে আছেন। দোকানে থাকা কর্মচারি মুখে কোনো মাস্ক নেই। বাজারের প্রায় সব দোকানেই একই চিত্র। বাজারের চিত্র দেখে বুঝা মুশকিল যে দেশে করোনাভাইরাস নামে ভয়াবহ কোনো সংক্রমণ ব্যাধি আছে। এখানে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কোনো দৃশ্যই দেখা যায়নি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব বলেন, এখনো দেশে করোনার প্রথম তরঙ্গই শেষ হয়নি। এর মধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে সংক্রমণ বেড়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে আমরা চেষ্টা করিনি, তা বলব না। কিন্তু, আমাদের চেষ্টা ছিল খুবই দুর্বল। কার্যকর চেষ্টা ছিল না। সেটা জনগণের পক্ষ থেকেও না, সরকারের পক্ষ থেকেও না। সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে সেটার বাস্তবায়ন আর হয় না। এখানে শুধু সরকারের বিষয়টি দেখলে হবে না। জনগণকেও আমরা সচেতন করতে পারিনি। সেখান থেকে ব্যর্থতা দুই পক্ষেরই রয়েছে। ফলে এই যে জনগণ মাস্ক পরছে না, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না এর ব্যর্থতা উভয়েরই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে দেখা যায়, করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছিল। ১ নভেম্বরে রোগী শনাক্ত হয় ১৫৬৮ জন, ২ নভেম্বর ১৭৩৬ জন, ৩ নভেম্বর ১৬৫৯ জন, ৪ নভেম্বর ১৫১৭ জন আর ৫ নভেম্বর ১৮৪২ জন। গত ৫৬ দিনের মধ্যে একদিনে শনাক্ত হওয়া রোগীর মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। আবারও নতুন করে গতকাল বুধবার একদিনে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। তিনদিন থেকে শনাক্তের হার বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাতে নতুন করে ২১১১ জন শনাক্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর আগের দুদিনের প্রত্যেকদিন শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি ছিল। এই সংখ্যা কমে এসেছিল। কিন্তু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, রোগী বাড়তে শুরু করেছে। মাস্ক পরাসহ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলেই যাচ্ছি। কিন্তু কেউ শোনে না। যার কারণে রোগী বাড়ছে।

গত সেপ্টেম্বর মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দেশে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ ঘোষণা করে বলেছিলেন, ‘ইউরোপের অনেক দেশেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। অনেক দেশ এরই মধ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার লকডাউন ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশেও আগামী শীতের সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। তাই সবাইকে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

করোনার প্রাদুর্ভাব আরো বাড়বে বলে মন্তব্য করে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরার্মশক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, কোভিড যুদ্ধ চলছে এবং চলবে। পৃথিবী থেকে কবে এই ভাইরাস বিদায় নেবে কেউ জানে না। বিশ্বের কোথায় কী হচ্ছে আমরা জানছি। সেই হিসেবে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের যুদ্ধ সামনে আছে।

২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ঢেউ কিভাবে মোকাবিলা করা হবে, তার কর্মকৌশল ঠিক করতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বলা হয়, শীতকালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এলে অর্থনীতিকে সচল রেখে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হবে। বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম ঢেউই শেষ হয়নি। দ্বিতীয় ঢেউ পরে। চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যবিভাগ এই মহামারি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষ ঘরের বাইরে যাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য হচ্ছে অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। একধরনের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ অক্টোবর করোনার নতুন ঢেউ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘এখনো করোনাভাইরাসের প্রভাব আছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরেকবার হয়তো এই করোনাভাইরাসের প্রভাব বা প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। কারণ ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আবার নতুন করে দেখা দিচ্ছে।’ এরপর করোনার পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ ২২টি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভাগকে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬ হাজার ২৭৫ জন। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ২১১১ জন। দেশে মোট শনাক্ত ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ১৮৯৩ জন সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৮ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ১১৭টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৫৯৮টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১৬ হাজার ৪৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৫ লাখ ৮৯ হাজার ৪২১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ আর করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম মারা যায় ১৮ মার্চে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, করোনা পরিস্থিতি ইম্প্রুভ করছিল। সংক্রমণের হার প্রায় ১০ এর কাছাকাছি নেমে এসেছিল। সেটা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার আগেই আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। প্রথম থেকেই আমরা মাস্ক পরার কথা বলছি। সঠিক মাস্ক পরা, কখন মাস্ক পরতে হবে সেগুলো মানানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র তার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে যারা মানছে না তাদেরকে মানাতে হবে।



 

Show all comments
  • নয়ন ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ২:৩৮ এএম says : 0
    বাঁচতে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Nazim Uddin ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:১৮ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সমস্ত মানবজাতি ও সৃষ্টি জগতকে রক্ষা করুক।।...শীতের প্রকোপ দেখা দিয়েছে, দয়া করে সবাই আরো বেশি সচেতন হোন।।
    Total Reply(0) Reply
  • Omor Usman ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:১৯ এএম says : 0
    দ্বিতীয়বারের মতো স্বাগতম করোনাভাইরাস
    Total Reply(0) Reply
  • Noor Ul Islam Islam ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২০ এএম says : 0
    আল্লাহ্‌ই একমাত্র রক্ষাকারী।
    Total Reply(0) Reply
  • Muktadir Imam ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২১ এএম says : 0
    বাংলাদেশে এটা হবেনা ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Shoibal Sami Mustafa ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২২ এএম says : 0
    Ami to vulei giyechilam corona bole kochu ache. Shobai dekhi normal life a chole giyeche.
    Total Reply(0) Reply
  • টুটুল ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৩ এএম says : 0
    Asuk, amader Allah rokhhakorben
    Total Reply(0) Reply
  • Arifur Rahman ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৭ এএম says : 0
    শীতের শুরুতে এইদেশে প্রতি বছরই অনেক মানুষের জ্বর সর্দি কাশি হতো, এখনো হচ্ছে, হবে। দ্বিতীয় ঢেউ বলে আতংক সৃষ্টি করার দরকার নাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Rashadul Islam ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৮ এএম says : 0
    আমাদের দেশের জন্য করোনার কোন ঢেউ নেই আমরা ভয় কে জয় করতে শিখেছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Sohel ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ৩:২৯ এএম says : 0
    সবাই মাস্ক ব‍্যাবহার করুন নিজে বাচুন পরিবারের সবাইকে বাচার সুযোগ করে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১৯ নভেম্বর, ২০২০, ১০:৩৬ এএম says : 0
    হাজারো আদেশ উপদেশ ভয়বীথি আক্রান্ত মৃত্যু ঘটনায় মানুষের হুস নেই। মানছেনা স্বাস্থ্যবিধি সরকারের আদেশ নিষেধ নিজকে পরিবারকে সমাজকে বিপদে পেলছে এই শৃংখলাহীন মানুষ গুলো এদের শান্তির বাণী শুনানোর দিন শেষ। এখন শৃংখলার জন‍্য চাই কঠিন কঠোরভাবে শাসন। এর বিকল্প নেই। এই একটি জায়গাই মানুষের দ্বিমত থাকবে না। করোনার দ্বিতীয়ঢেউ শুরু হয়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ নিয়ত্রনের বাহিরে গেলে সরকারের উপর সমস্ত দোষারোপ সমালোচনা বড় বড় শিরোনামহবে। লকডাইন অর্থনীতির গতি বন্ধ করে এইঅদৃশ্যশক্তির মোকাবেলা করতে পারবেননা।এটি মহাপরাক্রমশালীর পক্ষ হতে শতাব্দীর গজব আজাব। দুনিয়ার পরাশক্তিরা দিশে হারা বিজ্ঞানী বিজ্ঞানও প্রযুক্তি লন্ডবন্ড কোন মেডিক্যাল সাইন্স কাজে আসছেনা। ভয়ংকর পরিস্থিতির মাঝেই এই পকৃতির অভিশাপ গজবকে গজব মনে করছেনা বিশ্বের মানুষ। মানুষ কে সভ‍্যতাকে বাচানোর ক্লান্তিহীন গবেষণা টিকা আবিস্কারের প্রতিযোগিতা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে এই টিকায় করোনা ভাইরাস নিয়ত্রন হবে কিনা সন্দেহ প্রকাশ করছে।। অনেক গুলো কারণের মাঝেএই ভাইরাসের শারীরিক পরিবর্তনগুলো একটি। আমাদের কি করনীয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব‍্যাক্তিরা ভাইরাসের বিষয়ে বিজ্ঞ ব‍্যাক্তিরা জাতিকে সঠিকভাবে নির্দেশনা দিবেন। আশাকরি আল্লাহ্ পক্ষে থেকে আজাব গজবের মোকাবেলা করার শক্তি জমিনজুড়ে কারো নেই। সম্মিলিতভাবে আমাদেরকে আল্লাহ্ দরবারে তোওবা করতে হবে। ক্ষমা চায়তে হবে। আল্লাহ্ আমাদের হেফাজত করুনদয়া করুন ক্ষমা করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ