Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বরেন্দ্র অঞ্চলে আলু চাষে তোড়জোড় , বীজ ও সার সংকটে বিপাকে কৃষক

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ২:০২ পিএম

বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে চলছে আমন জমি খালি করার চেষ্টা। কারন খালি জমিতে ফের আবাদ হবে আলুর। যেসব জমির ধান কাটা হয়ে গেছে সেখানে শুরু হয়েছে আলুর জমি তৈরীর কাজ। মাঠ ঘুরে দেখা যায় যারা বরাবর আলু চাষ করেন তাদের পাশপাশি নতুন করে অনেকে আগ্রহী হয়েছেন এবার আলুর দাম হাফ সেঞ্চুরী করায়। কৃষক আলু আবাদের দিকে ঝুকে পড়ায় আলু বীজ সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া যারা অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে আবাদ করেন তারাও বিপাকে পড়েছেন। এ বছর জমির ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে ভূমি মালিকরা। পাশপাশি বেড়েছে আলু সংরক্ষনের জন্য ব্যবহুত বস্তার দামও।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, এ বছর বরেন্দ্র অঞ্চল (রাজশাহী, নওগা, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আলুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ হাজার ৬৭৭ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে রাজশাহীতে ৩৫ হাজার নওগায় একুশ হাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জে একহাজার দুশো পঞ্চাশ হেক্টর আর নাটোরে ৪৬৭ হেক্টর। গত মওসুমে আবাদ হয়েছিল সাড়ে আটান্ন হাজার হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি উৎপাদন ছিল ২৩৬ দশমিক ৫৯ মে:টন। ফলে আলুর মোট উৎপাদন দাড়ায় ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৪৭৯ মে:টন। এবার আলুর দাম বেশী হওয়ায় আবাদের পরিমান বাড়বে। কিন্তু শুরুতে আলু বীজের সংকট বিপাকে ফেলেছে কৃষককে। গত বছর যে এ গ্রেডের আলু বীজ ছিল ৩৭ টাকা কেজি এবার তা দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে। যেসব কৃষকের ঘরে আলু বীজ নেই তারা ভাড়া আর বেশী দামে বীজ কিনে আবাদ করবে তাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। মাঠ পয্যায়ে কৃষকরা বলেন, বেশীর ভাগ আবাদ করেন কেনা বীজ দিয়ে। গতবার যে বীজ ছিলো ৩৫ টাকা কেজি, এবার সেখানে দাম বেড়ে হয়েছে ৫৩-৫৬ টাকা কেজি। আবার এ গ্রেডের আলু বীজ গতবার যেখানে ছিলো ৩৭ টাকা, এবার সেখানে হয়েছে ৫৭-৫৮ টাকা। ফলে এবার আলুচাষে খরচ বাড়বে। এদিকে আবার সারের দামও বেড়েছে। ফলে আলুর উৎপাদন খরচ এমনিতেই বেড়ে যাবে।
কৃষি বিভাগ বলছে আবহাওয়া অুনুকুল থাকলে ফলন ভাল আর দাম বেশী থাকলে খরচ পুষিয়ে যাবে। রাজশাহীর পবা মোহনপুর ও তানোর উপজেলা ঘোরার সময় কৃষকরা ভাল মানের বীজ সংকটের কথা বলেন। তারা অভিযোগ করে বলেন বিএডিসির ডিলারদের কাছে ধরনা দিয়ে তারা বীজ পাচ্ছেনা। আবার ওসব বীজ বাঁকা পথে বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে। এসিআই, ব্র্যাক ও হীরা নামের বেসরকারী কোম্পানীর বীজেরও সংকট। তারাও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছেনা। তানোরের শ্রমিক বাজারের বিএডিসি বীজ ডিলার বেশী দামে বীজ বিক্রির বিষয় ঠিক নয় বলে জানান। তবে চাহিদা অনুযায়ী বীজ সরবরাহ পাচ্ছেনা বিএডিসি থেকে ত্রিশ মে:টন বীজের চাহিদা দিলেও মিলেছে তিন মে:টন। বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা বলেন জোতদাররা আলু চাষের জন্য জমির চাহিদা বেড়ে যাওয়া পাঁচ হাজার টাকা বিঘা জমি এখন নিচ্ছেন দশ বারো হাজার টাকা।
তানোরের গুবড়িপাড়া এলাকার আব্দুল আলিম সফল আলু চাষী হিসাবে পরিচিত তিন দশকের বেশী সময় ধরে আলু চাষ করে আসছেন। এবারো আড়াইশো বিঘা জমিতে আলু চাষের পরিকল্পনার কথা জানান। বরেন্দ্র অঞ্চল ঘোরার সময় শীতকালীন অন্যান্য শাকস্বব্জির পাশপাশি আগাম লাগানো আলুর ক্ষেতও নজর এড়ায়না। অনেকে ভাল দাম পাবার আশায় মওসুম শুরু হবার আগে আগাম আবাদ করে লাভবান হবার চেস্টা করেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। #

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ