পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-উত্তরবঙ্গ সড়কে নিত্য যানজটে কাহিল হয়ে পড়ছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ। রাজধানীর আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়া হয়ে গাজীপুরের চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত ত্রিশ মিনিটের পথ যেতে লাগছে ৩ ঘণ্টা। ফলে কাজ শেষে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েও চরম ভোগান্তির মধ্যেই পড়তে হচ্ছে ওই সড়কে চলাচলকারীদের।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর জেলার দুই দিকের অংশ রীতিমত যানজটে স্থবির থাকে। গাজীপুরের কোনাবাড়ি চন্দ্রা হয়ে টঙ্গী এবং চন্দ্রা থেকে আশুলিয়া হয়ে ঢাকায় যাতায়াত মানেই নিশ্চিত বিড়ম্বনা। গত রোববার সকালে যানবাহনের গতি অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও বিকালে তার চিত্র উল্টো দেখা যায়। বিকালে ওই পথে থেমে থেমে যানজটের কবলে পড়ে হাজার হাজার যাত্রীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উত্তরবঙ্গের ২৩টি জেলার ১১৭টি রুটের পরিবহন চলাচল করে গাজীপুর জেলার দু’টি দিক দিয়ে। এ কারণে লাখ লাখ মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় গাজীপুরের যানজট। গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় ও বাইপাস এলাকায় যানজট নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কালিয়াকৈর বাজার থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার যেতে সময় লাগছে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা। কখনো কখনো তিন ঘণ্টাও আটকা পড়ে থাকতে হয়।
কালিয়াকৈর এলাকার ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাকে বলেন, চন্দ্রা ও কোনাবাড়ী এলাকার ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ার পরও শিল্পকারখানার যানবাহনের ধীর গতি ও এলোপাতাড়িভাবে চলাচলের কারণে যানজট নিয়মিত হচ্ছে। এছাড়াও রাস্তার কাজ এখনো অনেক বাকি, যার কারণে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে যানবাহনগুলোকে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ফোর লেনের কাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি এবং সংস্কারের জন্যই মূলত এই তীব্র যানজট। ফলে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে ১১৭টি রুটের বিভিন্ন যানবাহন প্রতিনিয়তই রাজধানীতে প্রবেশ করার পর মহাসড়কের ওপর চাপ পড়ে। চালকরা নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ছাড়াও ব্যস্ততম এই সড়কে ওপর গাড়ি ঘুরানো এবং সড়কের মাঝপথেই যাত্রী নামানোর ফলে তীব্র যানজট দেখা দেয়। ফলে কালিয়াকৈর বাইপাস, রেলওয়ে ওভারব্রিজ, খাড়াজোড়া, চান্দনা, পল্লীবিদ্যুৎ, সফিপুর, মৌচাক, কোনাবাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত্যই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী বাসচালক হুমায়ন কবির দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগছে কালিয়াকৈরের সফিপুর পর্যন্ত পৌঁছাতে। ভাঙাচোরা সড়কে যানবাহন চলাচল করতে বিঘœ ঘটছে। সড়কের অনেক স্থানে মেরামত কাজ চলছে। ওইসব স্থানে গাড়ি বন্ধ করে বসে থাকতে হয়।
কভার্ডভ্যান চালক গফুর মিয়া দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সড়কে বিভিন্ন স্থানে হাইওয়ে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছে না। তারা যদি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হতো না।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের ওসি নাসির দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো চান্দনা দিয়ে ঢাকার ভিতরে প্রবেশ করে এবং সওজের লোকেরা মহাসড়কের কাজ করার ফলে কোনাবাড়ী থেকে সফিপুর পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে সড়ক মেরামত করতে গিয়েও যান চলাচলে কিছুটা বিঘœ ঘটছে।
তিনি বলেন, পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করছে। এছাড়া বিকালের দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে ভোগড়া বাইপাস ও চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত থেমে থেমে ১২ কিলোমিটার পথের বিভিন্ন স্থানে যানজট সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, টঙ্গী থেকে ভোগড়া বাইপাস যেতে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা।
এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, রাস্তা সচল রাখতে সড়ক বিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত রয়েছেন। যেখানে খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের লোকজন দ্রæত সেই স্থান মেরামত করে ফেলছেন। তবে বৃষ্টির কারণে মাঝে মধ্যে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
এদিকে গাবতলী বাস টার্মিনাল ছাড়িয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে পা দিতেই আমিনবাজারে জট। তারপর হেমায়েতপুর থেকে সামনে পথে টানা ৫ কিলোমিটার যানজট। সাভারের রাস্তার পাশে এলোপাতাড়ি গাড়ি পার্কিং করে রাখায় যেন থমকে যায় বাসের চাকা।
‘অনেক হাকঁডাক শুনেছি। রাস্তার পাশে আর গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। চলাচলে আমাদের ভোগান্তি নিয়েও রাজনীতির নামে তামাশা চলে’- বেশ ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলছিলেন জেআর পরিবহনের যাত্রী মনির হোসেন। সাভারে সড়কের অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকক্ষণ থমকে থাকার পর গাড়ি চলতে শুরু করে। তারপর দুই কিলোমিটার না যেতেই সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের জট। এভাবে দিনের অর্ধেকটা সময় গাড়িতে চলে যায় বলে জানান তিনি।
যন্ত্রণার নাম ‘লক্কড়-ঝক্কড়’ গাড়ি টাঙ্গাইল বাইপাস মোড়ে বিকেল সাড়ে তিনটায় কথা হয় রংপুরের কামরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রংপুর উদ্দেশে বাসে ওঠেন। এখন এলেন এখানে। তাঁর দুই শিশুসন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি বাস থেকে নেমে পড়েছেন। টাঙ্গাইলে আত্মীয়ের বাড়িতে উঠবেন। যানজট কমলে আবার রওনা হবেন।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. আরিফুর রহমান জানান, এমনিতেই অত্যধিক গাড়ির চাপ। তার ওপর লোকাল রুটের ‘লক্কড় ঝক্কড়’ মার্কা গাড়ি দূরপাল্লায় যাতায়াত করছে। এগুলো বিকল হয়ে প্রায় যানজটের সৃষ্টি করছে বলে জানান। প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা মো. আব্দুল মান্নান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।