Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভ্যাকসিন নিশ্চয়তা মিলেনি

উৎপাদনের আগেই ধনী দেশগুলোর বুকিং

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

বিজ্ঞানের বদৌলতে বিশ্বকে যখন বলা হচ্ছে গ্লোবাল ভিলেজ; মানবাধিকারে সবার অধিকার সমান। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্বরা যখন করোনাকালে ভ্যাকসিন পেতে সবার জন্য সমান সুযোগ দেয়ার দাবি তুলছে। তখন ধনী দেশগুলো যেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘চাচা আপন জান বাঁচা’ কৌশল নিচ্ছে। গরিব দেশগুলোকে সুযোগ না দিয়েই ধনী দেশ আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ম্যাকাও, জাপান, সুইজারল্যান্ড ও ইসরাইল বেশির ভাগ ভ্যাকসিন কিনে ফেলেছে। ফাইজার, অ্যাস্ট্রোজেনেকা, গ্যামলিয়া, মডার্না ও সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী এই সংস্থা ৫৯০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম। গত সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব মতে ২৭০ ডোজই (৫১ শতাংশ) আগাম কিনে নিয়েছে ধনী এই দেশগুলো। বাকি ২৬০ কোটি ডোজের কিছু কিনেছে ভারত, চীন ও আরও কয়েকটি দেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আশঙ্কা ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা ধনী দেশগুলোর কারণে গরিব দেশগুলো বঞ্চিত হতে পারে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ ভারতের মাধ্যমে ক্রয়ের লক্ষ্যে সমঝোতা চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। প্রভাবশালী দেশগুলো ভ্যাকসিন ক্রয়ে আগাম অর্থ ঢালছেন; তখন অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারত ভায়া হয়ে ক্রয়ের উদ্যোগ বাংলাদেশের ভ্যাকসিন পাওয়ার নিশ্চয়তাকে দোলাচালে ফেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভ্যাকসিন ক্রয়ে ভারতমুখিতা টিকা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।

মহামারি করোনা থমকে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। প্রতিদিনই বাড়ছে ভয়াবহতা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব আশঙ্কায়। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচার একমাত্র মাধ্যম ভ্যাকসিন। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য এখন প্রতিষেধক ভ্যাকসিন তৈরি করা। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে এক ধরণের প্রতিযোগিতা। ভ্যাকসিন এখনো বাজারে পৌঁছায়নি।

বিজ্ঞানীরা চলতি বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে বাজারে কোনো না কোনো ভ্যাকসিন আসার ইঙ্গিত দিলেও এখনও কোনটি আসছে তা নিশ্চিত নয়। এর আগেই ধনী দেশগুলো ভ্যাকসিনের ৮০ শতাংশ বুকিং দিয়ে ফেলেছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আগেভাগেই সেই বুকিংয়ের কাজ সেরে ফেলেছে ধনী দেশগুলো। ইতোমধ্যে আমেরিকার তৈরি ফাইজার ভ্যাকসিনের ৮০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। ফাইজার ভ্যাকসিনের শেয়ার ছাড়ার ঘোষণার প্রথম দিনেই ৫৬ লাখ ডলারের শেয়ার বিক্রি বেড়েছে। এ অবস্থা শুধু ফাইজারের ক্ষেত্রেই নয়; অ্যাস্ট্রোজেনেকা, গ্যামলিয়া, মডার্না ও সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও ধনী দেশগুলো প্রায় ৮০ শতাংশ ডোজ বুকিং দিয়ে ফেলেছে। অথচ জনসংখ্যার বিচারে ওই সব ধনী দেশে গোটা বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষের বসবাস।

বেসরকারি সংস্থা অক্সফামের এক সমীক্ষায়ও বিষয়টি উঠে এসেছে। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কোটি কোটি ডোজের ভ্যাকসিন কেনার আগাম চুক্তি সেরে ফেলেছে ওই সব ধনী দেশগুলো। ফাইজার, অ্যাস্ট্রোজেনেকা, গ্যামলিয়া, মডার্না ও সিনোভ্যাক এই পাঁচটি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সংস্থা ৫৯০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম। গত সেপ্টেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী, ২৭০ ডোজই (৫১ শতাংশ) আগাম কিনে ফেলেছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ম্যাকাও, জাপান, সুইজারল্যান্ড ও ইসরাইল। বাকি ২৬০ কোটি ডোজের কিছু কিনেছে ভারত, চীন ও আরও কয়েকটি দেশ। ইতোমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ডব্লিউএইচও) আশঙ্কা করেছে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা ধনী দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়তে পারে। অথচ বিশ্ব মোড়লরা প্রতিনিয়তই গরিব দেশগুলোকে ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে বলছে। যদিও তা কথাতেই থাকছে। কারণ নিজেরাই ভ্যাকসিনের অধিকাংশ বুকিং দিয়ে রাখছে। তাই বাংলাদেশসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলো ভ্যাকসিন দৌড়ে অনেকটা পিঁছিয়ে।

সূত্র মতে, এর আগে অন্য কোনো রোগের ক্ষেত্রে এই ধরণের প্রতিযোগিতা দেখা যায়নি। ভ্যাকসিন পেতে বাংলাদেশও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনা ভাইরাসের টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে এই ভ্যাকসিন বাংলাদেশ কবে নাগাদ পাবে এ ধরণের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
যদিও বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল সবার আগে টিকা পাবার। চীন বাংলাদেশকে সে সুযোগও দিয়েছিল। কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতায় বাংলাদেশ তা গ্রহণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ গ্রহণ না করলেও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে গেছে এক সময়ে পিছিয়ে থাকা ব্রাজিল। পাশাপাশি এশিয়ার দেশ ভারত, পাকিস্তান, আরব আমিরাত। অথচ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে দেশের মানুষ সবাই ধারণা করেছিল চীনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে ট্রায়াল হলে এটি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। কিন্তু এ আশায় গুড়েবালি।

সূত্র মতে, বাংলাদেশে করোনার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেড সরকারের অর্থায়ন (কো-ফান্ডিং) চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাতে রাজি না হওয়ায় ভ্যাকসিন পাওয়ার সুযোগ সংকুচিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকার জোর দিয়ে বলছে, ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকা প্রথম সারির পাঁচটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ভ্যাকসিন পেতে অন্যান্য দেশগুলো যে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তার তুলনায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা তেমনটা দৃশ্যমান না। তারা আরও বলছেন, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ পর্যায়ে, এমন সংস্থাগুলোর ভ্যাকসিন পেতে বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে বিনিয়োগ করলেও সরকার এখনো এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এদিকে, সময়ও ফুরিয়ে আসছে।

যদিও গত ৫ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। সমঝোতা অনুযায়ী, সিরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসকে অক্সফোর্ডের তৈরি সার্স-কভ-২ এজেডডি ১২২২ (অক্সফোর্ড/এস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিন) সরবরাহ করবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভ্যাকসিন তৈরি হলে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে সিরাম ইনস্টিটিউট। দেড় কোটি মানুষ এই ভ্যাকসিন পাবে। বাংলাদেশে নিয়ে আসবে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস। যখনই এটা তৈরি হবে তখনই বাংলাদেশকে সুবিধামতো সময়ে দেবে।
এদিকে এই চুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই সিনোভ্যাক বাংলাদেশে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা বাদ দিয়েছে।

এ নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা পরিচালনার জন্য আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে সিনোভ্যাকের চুক্তি রয়েছে। সিনোভ্যাক পরীক্ষা চালাতে চায় কিনা তা জানতে আমরা আন্তর্জাতিক উদরাময় কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি)’র সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানকার কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, সিনোভ্যাক চলে যেতে চায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের বলেছি, এটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। যদি তারা পরীক্ষা করতে চায় সেক্ষেত্রে তাদের সকল খরচ বহন করতে হবে। পরীক্ষার জন্য আমরা কোনো টাকা দিতে পারব না। বিশ্বের কোনো দেশ টিকার এ ধরনের পরীক্ষা পরিচালনার জন্য কোনো কোম্পানিকে টাকা দেয়নি।
এ বিষয়ে আইসিডিডিআর,বি’র গণমাধ্যম ব্যবস্থাপক একেএম তারিফুল ইসলাম খান বলেন, সিনোভ্যাকের করোনাভাইরাস টিকার পরীক্ষার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। তবে, সিনোভ্যাক চলে যাচ্ছে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

সিনোভ্যাকই প্রথম কোম্পানি যারা বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য সরকারের অনুমতি চায়। এর প্রথম দু’টি পরীক্ষা পরিচালিত হয় চীনে। গত ২৭ আগস্ট সিনোভ্যাককে করোনাভাইরাস টিকার তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষার অনুমতি দেয় সরকার। সরকার অনুমতি দেয়ার পর পরীক্ষা পরিচালনার জন্য সরকারের কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা চায় সিনোভ্যাক। অর্থ দাবির বিষয়ে সিনোভ্যাক জানায়, প্রতিষ্ঠানটির অর্থ সঙ্কট ও বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় এই অর্থ চেয়েছে তারা।
সিনোভ্যাকের পক্ষে বাংলাদেশে ৪ হাজার ২০০ স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর ১৮ মাসব্যাপী এই পরীক্ষা পরিচালনার কথা ছিল। পরীক্ষা বাতিল নিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন বলেন, সিনোভ্যাকের চলে যাওয়া ভালো খবর নয়। এখন করোনাভাইরাস টিকার জন্য আমাদের অন্য কোম্পানির কাছে যেতে হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ডিসেম্বরে চীনের উহান নগরীতে করোনাভাইরাস ধরা পড়লেও ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে প্রথম রোগীর মৃত্যু ঘটে বলে নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ কমতির দিকে। তবে আসন্ন শীতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে এ বছরের শেষ বা পরবর্তী বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিবন্ধনের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। মানবদেহে প্রথম করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের পরীক্ষা গত মার্চ মাস থেকে শুরু হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে এখন আর দুটি বিকল্প রাস্তা আছে। একটি হলো, ‘কোভ্যাক্স’ সুবিধার অধীনে ডব্লিউএইচও এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনের (গ্যাভি) কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিনের ২০ শতাংশ বাংলাদেশ পেতে পারে। বিশ্বব্যাপী সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণে ‘কোভ্যাক্স’ ডব্লিউএইচও ও গ্যাভির নেতৃত্বে একটি গৃহীত উদ্যোগ। দ্বিতীয় বিকল্প হলো, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি বা অন্যান্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাহিদা ও সারিতে থাকা দেশগুলোর কারণে ‘কোভ্যাক্স’ সুবিধার অধীনে ভ্যাকসিন পাওয়া বেশ জটিল হবে। ‘কোভ্যাক্স’ বর্তমানে নয়টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনকে যুক্ত করেছে। ২০২১ সালের শেষ পর্যন্ত সাইন আপ করা প্রায় ১৭০টি দেশে দুই বিলিয়ন ভ্যাকসিনের শটের নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটি কাজ করছে।
এদিকে, সংস্থা বা অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য সরকারের কোনো দৃশ্যমান প্রচেষ্টা নেই। তবে, একটি তহবিলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

যদিও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার মার্কিন সংস্থা মডার্না, ফাইজার, যুক্তরাজ্যের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ভারতের বায়োটেক লিমিটেড এবং রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজিএইচএস) প্রফেসর এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত তহবিল রয়েছে। আমরা যদি প্রয়োজন দেখি তবে আমরা গ্যাভি থেকে সরবরাহ করা ভ্যাকসিনের বাইরেও কিনব... আমরা (অন্যান্য উৎস থেকে) ভ্যাকসিন কিনব।
তিনি জানান, ভ্যাকসিনের জন্য একটি প্রকল্পের আওতায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ আছে এবং সরকার নিজস্ব রাজস্ব থেকে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করেছে। এ ছাড়াও, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও তহবিল পাওয়া গেছে।

করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটির (এনটিএসি) সদস্য প্রফেসর নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার তহবিল বরাদ্দ করেছে, এটা ভালো। তবে, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে এটা অগ্রগতি কি-না, আমরা তা জানি না। তিনি বলেন, সরকার স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না। তারা বলছেন যে, যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে, আমরা কী পরিমাণে ভ্যাকসিন পেতে পারি এটা কি প্রকাশ করা হয়েছে? সরকারের তহবিল নিয়ে অলস বসে থাকা উচিত হবে না বলে জানান তিনি।

বিএসএমএমইউ’র ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের উপযুক্ত ভ্যাকসিন নির্বাচন করতে হবে। আমাদের এমন কোনো ভ্যাকসিন নেয়া উচিত হবে না, যা সংরক্ষণ ও বহন করার জন্য বিস্তৃত ব্যবস্থা প্রয়োজন।
একাধিক সম্ভাব্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারীর সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া ও সমস্ত চ্যানেল উন্মুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।



 

Show all comments
  • পারভেজ ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ২:৪৪ এএম says : 0
    একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে সাবধানে নিয়মনীতি মেনে চলাফেরা করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Enamul Maruf ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০০ এএম says : 0
    ভারতের ভ্যাকসিন করোনার চাইতেও ভয়াবহ মহামারী বয়ে আনবে
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Hasan ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০১ এএম says : 0
    চিনের সাথেই ভাল সম্পর্ক রাখা দরকার, তা না হলে ভারতের আগ্রাসন বন্ধ হবেনা।
    Total Reply(1) Reply
    • Prokash ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৯:৪১ এএম says : 0
      YOU ARE RIGHT. BOYCOTT INDIA. BANGLADESH ID BIG ECONOMY NOW.
  • তানিয়া ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০৩ এএম says : 0
    অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ভারত ভায়া হয়ে ক্রয়ের দরকার নেই। ভারত ভায়া হয়ে ক্রয়ের চেয়ে না কেনা অনেক ভালো
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজ ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০৫ এএম says : 0
    গরু, পেয়াজ, সীমান্ত হত্যা, তিস্তার পরেও কেন তাদের ভায়া হয়ে করোনার ভ্যাকসিন আনতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • রিপন ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০৬ এএম says : 0
    এক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • পথিক ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০৬ এএম says : 0
    আমাদের উপযুক্ত ভ্যাকসিন নির্বাচন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • কিরন ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০৭ এএম says : 0
    আমাদের এমন কোনো ভ্যাকসিন নেয়া উচিত হবে না, যা সংরক্ষণ ও বহন করার জন্য বিস্তৃত ব্যবস্থা প্রয়োজন।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazrul Ism ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৩৬ এএম says : 0
    ভ্যাক্সিন লাগবে না করোনা এমনিতেই চলে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Emon Bin Soleman ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৩৬ এএম says : 0
    সতর্কতার সাথে বলতে চাই,ভারতের ভ্যাকসিনে গোমূত্র আর গোবর ছাড়া কিছু নেই,অতএব সাবধান! এ ভ্যাকসিন কিছু ভারতীয় দালালদের শরীরে কার্যকর হলেও দেশের সাধারণ মানুষের শরীরে পার্শপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৩৮ এএম says : 0
    চীন থেকে নেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Prokash ১৬ নভেম্বর, ২০২০, ৯:৪২ এএম says : 0
    CHINA MUST HELP BANGLADESH
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ