বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশ নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ড বাহিনীর জন্য দুটি অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফী সার্ভে ভ্যাসেল ও ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল নির্মন শেষে হস্তান্তর করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে নৌবাহিনীর জরিপ জাহাজ দুটি এবং রোববার কোষ্ট গার্ডের ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন। এসব নৌযান দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপক’লীয় এলাকার সুষ্ঠু জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে নির্বিঘœ নৌ চলাচল ছাড়াও সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।
দেশের সমুদ্র বন্দর ও পোতাশ্রয় সহ সংলগ্ন এলকায় জরিপ কাজ সম্পন্নের লক্ষে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জন্য প্রথমবারে মত ক্যাটামেরন টাইপের দুটি অত্যাধুনিক হাইড্রোগ্রাফী সার্ভে ভেসেল তৈরী করল খুলনা শিপইয়ার্ড। অস্ট্রেলিয়ান নকশায় নির্মিত সার্ভে ভেসেল দুটি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত। আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি ‘ব্যুরো ভেরিটাস’এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত এসব জরিপ জাহাজ একনাগারে দীর্ঘ সময় ধরে সূক্ষ্মভাবে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে সম্পন্ন করতে সক্ষম। ‘বানৌজা দর্শক’ ও ‘বানৌজা তল্লাশী’ নামের এসব জরিপ জাহাজ-এর নির্মান শেষে সম্প্রতি নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের পরে গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী তা আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন।
এরফলে দেশের সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভ’মিকা পালনকারী নৌ বাহিনীর নিজস্ব জরিপ জাহাজের মাধ্যমে নৌপথ সম্পর্কে নিশ্চিত ধারনা নিয়েই সব ধরনের যুদ্ধ ও টহলযান পরিচালন অত্যন্ত নিরাপদ ও সহজতর হবে। এ আশা সমর বিশেষজ্ঞগনের। ৩২.৭২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮.৪০ মিটার প্রস্থ এসব জরিপ জাহাজ ৩.১৭ মিটার গভীরতা এবং ১.৬৫ মিটার ড্রাফট সম্পন্ন। পূর্ণ গতিতে চলাচলের সময় ১২৫ টন পানি অপসারন করে এসব নৌযান ঘন্টায় ১৪ নটিক্যাল মাইল বা প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলতে সক্ষম। প্রতিটি নৌযানে ৬শ অশ^ শক্তির দুটি প্রধান ইঞ্জিন ছাড়াও ৮০ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি প্রধান জেনারেটর এবং ১৬ কিলোওয়াটের ইমার্জেন্সি জেনারেটর সহ অত্যাধুনিক অন্যান্য মেশিনারীজ রয়েছে।
জরিপ কাজ পরিচালনার জন্য প্রতিটি সার্ভে ভ্যসেলে ‘মাল্টি বীম ইকো সাউন্ডার, সিঙ্গেল বীম ইকো সাউন্ডার, ডিজিপিএস রিসিভার, জিওডেটিক জিপিএস রিসিভার, সাইড স্ক্যান সোনার, সাউন্ড ভেলোসিটি প্রোফাইলার ও গ্র্যাব স্যাম্পলার’ সহ অত্যাধুনিক সব সার্ভে সরঞ্জামাদি সংযোজন করা হয়েছে।
এছাড়া খুলনা শিপইয়ার্ডে চীনের সিএসওসি’র কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ডের জন্য ৩টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল-আইপিভি নির্মান শেষে হস্তআন্তরের পরে প্রধানমন্ত্রী রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনিং করেছেন। এসব নৌযানের মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত টহল প্রদান, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, দূর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দূর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা ছাড়াও পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ কোষ্টগার্ড গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করবে।
‘বিসিজিএস সোনার বাংলা’, ‘বিসিজিএস অপরাজেয় বাংলা’ এবং ‘বিসিজিএস স্বাধীন বাংলা’ নামের এসব আইপিভি ৫১.২০ মিটার দৈর্ঘ্য, ৭.৫০ মিটার প্রস্থ, ৪.১০ মিটার গভীরতা ও ১.৯৪ মিটার ড্রাফট সম্পন্ন। ৩০০ টন পানি অপসারন করে ঘন্টায় ২৩ নট বা প্রায় ৫০ কিলোমিটার গতি সম্পন্ন এসব ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল আন্তর্জাতিক ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি চায়না ক্লাসিফিকেশন সোসাইটি এর তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে। এসব আধা সামরিক নৌযানে ২,১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২টি প্রধান ইঞ্জিন, ১০০ কিলোওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি প্রধান জেনারেটর ও অত্যাধুনিক মেশিনারিজ রয়েছে এছাড়াও সার্বিক অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় ২টি করে ৩০মিমি সেমি অটোমেটিক গান, ২টি ১৪.৫ মিমি গান, নেভিগেশন রাডার, এইচএফ, ভিএইচএফ, ন্যাভটেক্স রিসিভার সহ অত্যাধুনিক সব ইক্যুইপমেন্টস সংযোজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় পৌনে ২শকোটি টাকার দায়দেনা ও লোকশানের বোঝা নিয়ে বিরাষ্ট্রীয়করনের তালিকভ’ক্ত খুলনা শিপইয়ার্ডকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৯৯৯-এর অক্টোবরে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী কাছে হস্তান্তরের পরেই প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাড়ায়। নৌ বাহিনী দায়িত্ব গ্রহনের পরে সব পিছুটান কাটিয়ে খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে উপমহাদেশের অন্যতম নৌ নির্মান প্রতিষ্ঠানের মর্জাদা অর্জন করেছে। আইএসও সনদপ্রাপ্ত খুলনা শিপইয়ার্ড ইতোমধ্যে ছোট থেকে মধ্যম-বড় মাপের যুদ্ধজাহাজ সহ বিভিন্ন ধরনের বিশেষায়িত নৌযান ছাড়াও সরকারীÑবেসরকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য পণ্য ও জ¦ালানীবাহী নৌযান সহ কন্টেইনারবাহী জাহাজও তৈরী করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।