পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কংগ্রেসের এক বছর পর অবশেষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত কমিটিতে ঠাঁই হয়েছে ২০১ জনের। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর সদস্য সংখ্যার আকারে এটি সবচেয়ে বড় কমিটি। এই কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কয়েকজন সংসদ সদস্য, শেখ ফজলুল করিম সেলিমের দুই ছেলে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, বিভিন্ন জেলা থেকে ওঠে আসা নতুন মুখ, সিসি কমিটির সদস্য ও সাবেক কমিটির বেশ কয়েকজন। কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিক।
নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন যুবলীগের গত কমিটির ক্যাসিনোকান্ডের বিতর্কিত নেতারা। পাশাপাশি বয়স ৫৫ বছরের বেশি হওয়ায় বাদ পড়েছেন ৭০ জনের বেশি। প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ রাখা হয়েছে ২৭টি। এছাড়া সংগঠনের সভাপতি তার পদধিকার বলে এই পর্ষদের সদস্য। এই ২৭টি পদের মধ্যে পাঁচটি পদ খালি রেখে বাকি পদগুলো ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেন। সংগঠনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল এই পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তাব আকারে উত্থাপন করেছিলেন। সেই প্রস্তাব গৃহিত হওয়ার পর তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
ঘোষিত কমিটিতে প্রেসিডিয়ামের সদস্য পদে এসেছেন- অ্যাডভোকেট মোমিনুর রশিদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, শেখ সোহেল উদ্দিন, ডা. খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন (এমপি), ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি, তাজউদ্দিন আহমেদ, জুয়েল আরেং (এমপি), জসিম মাতব্বর, মো. আনোয়ার হোসেন, শাহাদাত হোসেন তসলিম।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে ৫ জনকে। তারা হলেন- বিশ্বাস মতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মো. বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, রফিকুল আলম জোমাদ্দার।
সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রাখা হয়েছে ৯ জনকে। তারা হলেন- কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, মো. সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাডভোকেট মো. শামীম আল সাইফুল সোহাগ ও প্রফেসর ড. রেজাউল কবির।
সহ-সম্পাদকের পদ রাখা হয়েছে ৪১টি। এরমধ্যে ৪টি পদ খালি রেখে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পদ পেয়েছেন- মো. সাইফুল আলম সাইফুল, সাইফুল ইসলাম শাহিন পাটোয়ারী, মো. বেলাল হোসেন ফিরোজ, আবির মাহমুদ ইমরান, তোফাজ্জল হোসেন, মো. আতাউর রহমান উজ্জল, মো. মামুন আজাদ, মির্জা মো. নাসিউল আলম শুভ্র, মো. রাজু আহমেদ, গোলাম ফেরদৌস ইবরাহিম, মো. মাইদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান, আলামিনুল হক আলামিন, জামিল আহমেদ, মো. আব্দুর রহমান জীবন, নাজমুল হুদা ওয়ারেশি চঞ্চল, মো. আরিফুল ইসলাম, মো. আজিজুর রহমান সরকার, সামিউল আমিন, মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ, ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান, মো. মনিরুজ্জামান পিন্টু, মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ, জি এম ওয়াহেদ পারভেজ, মো. জয়নাল আবেদিন রিগান, ডা. মনজুরুল ইসলাম ভুইয়া রাফি, মো. নাসির উদ্দিন মিন্টু, মো. আলমগীর হোসেন শাহ জয়, কামরুল হাসান লিংকন, রাজিব আহমেদ তালুকদার, মো. বাবলুর রহমান বাবলু, একেএম মোক্তাদির রহমান শিমুল, হিমেদুর রহমান হিমেল, এহতেশামুল হাসান ভুইয়া রুমি, মো. রাশেদুল ইসলাম সাফিন, মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ, মো. আবু রায়হান রুবেল, সাইফুল ইসলাম সাইফ, ইঞ্জিনিয়ার মো. কামরুজ্জামান, মো. মনিরুজ্জামান পিন্টু, মো. মনিরুল ইসলাম আকাশ, জি এম ওয়াহেদ পারভেজ, মো. জয়লাল আবেদীন চৌধুরী রিপন, ডা. মো. মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া রাফি ও মো. নাসির উদ্দিন মিন্টু।
এছাড়া প্রচার সম্পাদক হয়েছেন জয়দেব নন্দী। দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ। আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিল্টন, অর্থ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান রাজিব, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সরোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শামীম খান, তথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুল আলম অনিক, সংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মো. ফরিদ রায়হান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীর মো. মহিউদ্দিন, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক শাহীন মালুম, ক্রীড়া সম্পাদক নিজামউদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, পরিবেশ সম্পাদক হারিস মিয়া শেখ সাগর, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আব্দুল হাই, কৃষ্টি ও সমবায় সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরী, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুক্তা আক্তার।
উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হোসেন সুমন, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ (আইটি) সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বি স্বরণ, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডা. মাহফুজুর রহমান উজ্জল, উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শেখ মো. মিছির আলী, উপ-জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. আব্দুর রহিম, উপ-পরিবেশ সম্পাদক মো. সামসুল আলম পাটোয়ারি, উপ-শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মো. ফিরোজ আল-আমিন, উপ-কৃষি ও সমবায় সম্পাদক মোল্লা রওশন জামিল রানা, উপ-মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্য, উপ মহিলা সম্পাদক সৈয়াদা সানজিদা শারমীন। ৫১টি সদস্য পদের মধ্যে পাঁচটি পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। বাকি ৪৬ পদ ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনির ছোট ভাই যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির ছেলে শেখ ফজলে ফাহিম নতুন কমিটিতে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হয়েছেন। তিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি। শেখ সেলিমের আরেক ছেলে ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নাঈমও নতুন কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন। ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীকেও সভাপতিমন্ডলীতে রাখা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে সংগঠনটির চেয়ারম্যান পদে আসেন শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। শেখ ফজলে শামস পরশ যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ মনির বড় ছেলে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে এই যুবলীগ প্রতিষ্ঠা হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়েই যাত্রা শুরু করে এই সংগঠন। ১৯৭৪ সালে যুবলীগের প্রথম কংগ্রেসে শেখ মনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত চার দশকের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতা-কর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ এখন দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
মূলত এর আগে ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন শেখ মনি ও শেখ সেলিমের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। ২০১৩ সালের প্রথম দিকে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর রশিদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি করেছিলেন। তারপর ৬ বছর নির্বিঘ্নে কাজ করে এলেও গত বছর ক্যাসিনোকান্ডে বড় ধাক্কা খান ওমর ফারুক চৌধুরী। তার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিতর্কের ঝড় উঠে। সেই সঙ্গে সমালোচনায় নাকাল হয় যুবলীগ। এরপর সংগঠনটির অনেকেই ক্যাসিনোকান্ডসহ নানা অভিযোগে কারাগারে আছেন। অনেকেই সংগঠন ত্যাগ করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল জানান, আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা কমিটি জমা দিয়েছিলাম। অনুমোদনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ভাই আমাদের কাছে সেই অনুমোদিত কমিটি হস্তান্তর করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।