Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোগী ঘুমাতে না চাইলে দেয়া হতো ইনজেকশন

রিমান্ডে গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি এএসপি আনিসুল হত্যার তদন্ত হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে : পুলিশ সদর দফতর হাসপাতালের ৪ অংশীদার পলাতক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

বহুল সমালোচিত মাইন্ড এইড হাসপাতালের কোন রোগী ঘুমাতে না চাইলে সুই (ইনজেকশন) দেয়া হতো। রাতের বেলায় জেগে থাকা একজন রোগীর জন্য বাকি অন্যদের অসুবিধা হতে পারে বা ঘুম ভেঙে যেতে পারে বলেই জেগে থাকা রোগীকে সুই (ইনজেকশন) দিয়ে ঘুমিয়ে রাখা হতো। সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যাকান্ডে জড়িত গ্রেফতারকৃত আসামিরা রিমান্ডে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে। এমনকি আনিসুলকে মারধর করার কথাও স্বীকার করেছে জড়িতরা। আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুর ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। গতকাল বুধবার এক বার্তায় এ তথ্য জানায় পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ। এছাড়া এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশীদ।

অন্যদিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক নিয়াজ মোর্শেদকেও পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় হাসপাতালটির ৪ অংশীদারকে গতকাল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তারা হলেন-মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ আমিন ও মো. ফাতেমা খাতুন। তাদের গ্রেফতারে একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে আসামিরা মাইন্ড এইড হাসপাতালে যাওয়ার পর সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমকে মারধরের কথা স্বীকার করেছে। আনিসুলকে ধরে একটি কক্ষে নেয়ার সময় তিনি (আনিসুল) বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন, এসময় মাইন্ড এইড হাসপাতালে ৮ থেকে ৯ জন কর্মচারী মিলে মারধর করে। এক পর্যায়ে তিনি মারা যান।

ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, ঘটনার পরেই হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া হাসপাতালের মালিক ও মার্কেটিং ম্যানেজার জয়কে ১০ কর্মচারীসহ গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে অপর মালিক নিয়াজ মোর্শেদকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি প্যারালাইজড হওয়াই ওই হাসপাতালেই তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় এজহারনামীয় ১৫ আসামির মধ্যে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের মধ্যে হাসপাতালের ৪ অংশীদার (মালিক) এখনো পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

নিহত আনিসুল করিমের গাজীপুরের বাসায় গিয়ে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশী বলেছেন, এএসপি মো. আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্তা নেয়া হবে। পাশাপাশি অভিযোগপত্র দ্রুত সময়ের মধ্যে দেয়া হবে। এসময় তিনি নিহতের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানান। সে সময় গাজীপুর জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এএসপি আনিসুল হত্যার তদন্ত হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে: আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুর ঘটনা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। গতকাল বুধবার এক বার্তায় এ তথ্য জানায় পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ। এতে জানানো হয়, এএসপি শিপন হত্যাকান্ডের ঘটনায় আইজিপির নির্দেশে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে, যেন এ ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার কোনো পুনরাবৃত্তি না হয়।

প্রসঙ্গত, মানসিক সমস্যায় ভুগে গত সোমবার মাইন্ড এইড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম। ভর্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে হাসপাতালের ২য় তলার টর্চার সেলে মারধরের এক পর্যায়ে মারা যান তিনি। এরপরেই বেড়িয়ে আসতে থাকে বৈধ কাগজপত্র না নিয়ে চলা হাসপাতালটির অমানবিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এ ঘটনায় আদাবর থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ১০ জনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।#



 

Show all comments
  • Saiful Islam ১২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৩১ এএম says : 0
    অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ দুলাল মিয়া ১২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 1
    মরন আসিয়াছে মরে গেছে যেই কেন উচিলা থাকে আল্লাহ নির্দেশ। হয়তে এরা চেষ্টা করেছিল তাকে শান্ত করার জন্য যে কেন কারনে তার মৃত্যু হয়ে গেছে ।এখন উপযুক্ত খতিপুরনের ব্যবস্থা করে তার ছেলে মেয়ে দের দেয়া হউক।
    Total Reply(0) Reply
  • এস এম আকবর ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০২ এএম says : 0
    এই শোক সইবার মতো নয়। যে মানুষটা মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য নিরন্তর ছুটে বেড়িয়েছেন, যে মানুষটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনাকালে নিজ হাতে মানুষের জন্য খাবার পৌঁছে দিয়েছেন, যে মানুষটা মানবিক পুলিশ হিসেবে সবার পরিচিত। যে মানুষটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩ তম ব্যাচের মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যে মানুষটা ৩১ তম বিসিএস পুলিশ (মেধাতালিকায় প্রথম) ছিলেন। আজ সেই মানুষটাকে নির্মমভাবে বারবার আঘাত করে হত্যা করলো পিশাচের দল! চিকিৎসা নিতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসতে হ'ল। অনুভূতি প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা! নির্মমতা বন্ধ হোক। মহান আল্লাহ স্যারকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mst Mili Rahman ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৫ এএম says : 0
    অবৈধ, এটা বের করার জন্য কারো খুন হওয়া দরকার। নইলে কর্তৃপক্ষের হুস হয় না। বেহুশ অবস্থায় চলছে দেশ, সবকিছু
    Total Reply(0) Reply
  • Asheque Nafish Polash ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৫ এএম says : 0
    ঘটনা ঘটে গেলে জানা যায় হাসপাতালের লাইসেন্স নাই,ভবন ধসে পড়লে দেখা যায় রাজঊকের অনুমোদন নাই,ভেজাল খাবারে মারা গেলে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সটা ভুয়া।সব কিছু যখন পরে জানা যায় তাহলে প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষ করে টা কি!!!?
    Total Reply(0) Reply
  • Showkat Mithu ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৬ এএম says : 0
    স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সকল অধিদপ্তর চরম দূর্ণীতিগ্রস্ত
    Total Reply(0) Reply
  • আশিক ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৬ এএম says : 0
    ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচার হওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • রুহান ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৭ এএম says : 0
    এরকম মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
    Total Reply(0) Reply
  • মিনহাজ ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৭ এএম says : 0
    এই ঘটনার সাথে জড়িত সকলের ফাঁসি চাই
    Total Reply(0) Reply
  • সবুজ ১২ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৮ এএম says : 0
    এরকম নির্যাতন অনেক মানসিক হাসপাতালেই হচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ১২ নভেম্বর, ২০২০, ১১:৪৬ এএম says : 0
    There is so called several Psychiatric hospital in Dhaka. They just rent a flat and so may patients live in a small room, they don't provide bed sheet, pillow cover, they do not provide health food, bathroom's are dirty, there is not place for physical activities like playing foot ball, badminton, table tennis, no counsellor to help the patient to overcome their mental illness. No room for prayer.. Also these so called Psychiatric Hospital is very expensive.. The crime they are committing because our country is not ruled by the Law of Allah. We are facing lots of problem like due to shortage of money we cannot support our family, government is oppressing us in every way and also their supporter they also oppress us in every way as such we are now all Psychiatric Patient.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ