Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরম বিপাকে নিম্নআয়ের মানুষ

মাগুরায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি

মাগুরা থেকে সাইদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মাগুরায় চাল ও সবজিতে হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। গেল কয়েক সপ্তাহের মতোই সবজির দাম কমার কোন লক্ষণ নেই। এরই মধ্যে বেড়েছে পিয়াজের সাখে কাঁচামরিচ আর আলুর দাম। গত কয়েক সপ্তাহ আগে কাঁচামরিচের দাম সাধারণ ক্রেতাদের হাতের নাগালে ছিল। কিন্তু বর্তমানে কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে ক্রেতা দিশেহারা। সাধারণত প্রতিদিনের রান্নার কাজে কাঁচামরিচের বিকল্প নেই। তাই যত দামই সব শ্রেণির মানষ কেউ পরিমানে অল্প আবার কেউ বেশি পরিমানে কাঁচা মরিচ কিনছে। আবার দাম বেড়ে যাবার ভয়ে অনেক ক্রেতা বেশি করে কাঁচামরিচ কিনে ঘরে রাখছে।
গত সপ্তাহে যেখানে ২শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ, সেখানে বর্তমানে বাজারে ২০ টাকা বেড়ে ২৪০ টাকা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছে অতি বৃষ্টির কারণে জেলার অনেক কৃষকের কাঁচামরিচের ক্ষেত পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। খুচরা কাঁচামরিচের সংকট থাকার কারণে দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে কাঁচামরিচ ২শ’ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা। সবচেয়ে আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে মানুষ হতবাক হয়েছে।
মাগুরা পুরাতন বাজারে শাহ আলম নামে এক স্কুল শিক্ষক জানান, এক সপ্তাহ আগে সে বাজার থেকে কাঁচামরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে ছিল কিন্তু বর্তমান বাজারে কাঁচামরিচ ২৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তিনি বেসরকারি কেজি স্কুল শিক্ষক। ৮ মাস স্কুল বন্ধ থাকায় আয়ের পথ বন্ধ। তাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের বেঁচে থাকা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এদিকে, সরকার পাইকেরি বাজারে চালের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এর প্রভাব নেই খুচরা বাজারে। দাম বেধে দেওয়ার আগে বাড়তি যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছিল, সেই দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে চাল। বর্তমানে মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ টাকা থেকে ৬৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির দাম চড়া থাকায় নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। বর্তমানে বেগুন ৫০ টাকা,পটল ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, নতুন সবজি পালং শাক ৭০-৮০ টাকা, বাধা কপি ৬০ টাকা ফুল কপি ৫০ টাকা, টমোটো ৮০ টাকা, শিম ৯০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ২০-২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৪০-৪৫ টাকা। এছাড়া দেশি পেয়াজ ৮০-৯০ টাকা, রসুন ৮০-৯০ টাকা ও আদা ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকার আলুর দাম নিধারিত মূল্যে বিক্রির কথা বললেও তা মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। পাইকেরি বাজারে আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। দাম বেড়েছে ডিমের। প্রতি হালি ডিম পাইকেরি বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা। সাধারণ দোকানে ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। সবকিছুর দাম বাড়াতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলায় কর্মরত সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান জানান, মাগুরা সদরের বিভিন্ন বাজারে তাদের মনিটরিং চলছে। চলছে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান। যদি কেউ কোন পণ্য বাড়তি লাভের আশায় গোডাাইনজাত করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন উপজেলার বাজার ও হাটগুলোতে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বাজারে কোন পণ্যের সংকট নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে অস্থিতি পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে বলে জানান। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ