পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে এবার কৃষকের কোনো আগ্রহ নেই। বাজার মূল্যের চেয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম হওয়ায় কৃষকরা বাজারেই ধান বিক্রি করছেন। গত ৭ নভেম্বর থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনার কথা থাকলেও কোথাও এ কার্যক্রম শুরু হয়নি। চলতি আমন মৌসুমে সরকারকে চাল দেওয়ার চুক্তি করতেও মিল মালিকরা রাজি হচ্ছে না। সরকার ৩৭ টাকা কেজি দরে ৬ লাখ টন সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে বাজারে মোটা চালের সর্ব নিম্ন মূল্য ৪৪ টাকা থেকে ৪৫ টাকা কেজি। এ অবস্থায় কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা লোকসান দিয়ে মিল মালিকরা সরকারকে চাল দিতে পারবে না। ফলে আমন মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অনেকটাই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের খাদ্য সংগ্রহ বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মিল মালিকরা বলছেন, কেজিতে ৭-৮ টাকা লোকসান দিয়ে চাল দেওয়ার জন্য খাদ্যমন্ত্রণালয় তাদের উপর যে চাপ দিচ্ছে, সেটা অন্যায় এবং এক ধরনের জুলুম। এ করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের নানা প্রণোদনা দিচ্ছেন। আর খাদ্যমন্ত্রণালয় চালকল মালিকদের উপর অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রমের সাথে একবারেই সাংঘর্ষিক।
গত বোরো মৌসুমে ২০ লাখ টন ধান চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার শেষ পর্যন্ত অর্ধেকও সংগ্রহ করতে পারেনি। চলতি আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সাড়ে ৮ লাখ টন ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত ৭ নভেম্বর থেকে সরকারের কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কথা ছিল। কিন্তু কোথাও ধান কেনা শুরু হয়নি। ধান কেনার জন্য সরকারের যে বরাদ্দ তা এখনো অনেক জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছেনি। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে চাল সংগ্রহ শুরু করার কথা। কিন্তু মিলাররা সরকারের কাছে চাল বিক্রি করার কোনো চুক্তি এখনো করেনি। ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম আগামী বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত চলবে।
চলতি আমন মৌসুমে সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২ লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৬ টাকা কেজি দরে ১ মণ ধানের দাম হয় ১০৪০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে বাজারে ১১০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় কোনো কৃষকই সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী হচ্ছে না।
নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার কাগরিয়া গ্রামের কৃষক জুয়েল মিয়া জানায়, সরকারের ধান কেনার বিষয় কিছুই জানে না। তাদের ধান তারা বাজারে নিয়ে বিক্রি করে। অনেক সময় ধানের ব্যাপারী বাড়িতে এসেও ধান কিনে নিয়ে যায়।
গত বোরো মৌসুমে সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ না করায় ২৬১ মিল মালিককে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। আগামী দুই মৌসুমের জন্য তাদের অনেকের ব্যবসায়িক লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এমন কঠোর পদক্ষেপের পরও চলতি আমন মৌসুমে সরকারের সাথে চুক্তি করতেই রাজি হচ্ছে না মিল মালিকরা। ১৫ নভেম্বর থেকে ধান ও চাল কেনা শুরু করার প্রস্তুতি থাকলেও এখন পর্যন্ত মালিকরা সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেননি।
মিল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বোরো মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি চালের দর ঠিক করে ৩৬ টাকা। সে সময় ধানের দর দেওয়া হয় ১ হাজার ৪০ টাকা। এ দরে ধান কিনে চাল তৈরি করতে খরচ হয় কেজি প্রতি ৩৯ টাকা। সেখানে মিল মালিকরা কীভাবে ৩৬ টাকায় চাল সরবরাহ করবেন? তারপরও মিল মালিকরা লোকসানে চাল সরবরাহ করেছেন। এবার সরকার দর ১ টাকা বাড়িয়ে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারে চালের সর্বনিম্ন মূল্য ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। বাজারে ধানের দামও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি। এ অবস্থায় কেজিতে প্রায় ৭ থেকে ৮ টাকা লোকসান দিয়ে মিল মালিকরা সরকারকে কীভাবে চাল দেবে।
বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও নেত্রকোণা জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি এইচ আর খান পাঠান সাকি ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে বাজারের মোটা চালের সর্বনিম্ন মূল্য ৪৪ টাকা কেজি। সেখানে সরকারকে ৩৭ টাকা কেজি ধরে কীভাবে চালকল মালিকরা চাল দেবে। বোরো মৌসুমেও সরকারকে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসান দিয়ে চালকল মালিকরা চাল দিয়েছে। কিন্তু এবার কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা লোকসান দিয়ে চাল দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আমরা এখনো সরকারের সাথে কোনো চুক্তি করিনি। তিনি বলেন, সারা দেশে ১৭ হাজার রাইস মিল আছে। এতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ আছে, তা অন্য যে কোনো বড় খাতের চেয়ে কম নয়। করোনা মহামারির এ সময়ে অনেক রাইস মিল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় যেখানে তাদের প্রণোদনার প্রয়োজন, সেখানে খাদ্যমন্ত্রণালয় লোকসান দিয়ে চাল দেওয়ার চাপ দিচ্ছে। এটা অন্যায় এবং জুলুম।
কুষ্টিয়া জেলার ম্যানুয়াল রাইস মিলের মালিক হাজি লিয়াকত হোসেন বলেন, গত মৌসুমে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা লোকসানে চাল দিতে হয়েছে। তারপরও সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা পাইনি। এবার সরকার ১ টাকা দাম বাড়িয়েছে। ১ টাকা বাড়িয়ে কোনো লাভ হবে না। মিল মালিকরা এবার এত লোকসান দিয়ে চাল দেওয়ার চুক্তি করবে বলে মনে হয় না।
নেত্রকোণা জেলা খাদ্য কর্মকর্তা জাকারিয়া মোস্তফা ইনকিলাবের জেলা সংবাদদাতা একেএম আব্দুল্লাহকে বলেন, ধান-চাল কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ এখনো তাদের কাছে আসেনি। দু’একদিনের মধ্যে বরাদ্দ চলে আসবে। বরাদ্দ পেলেই দু’তিন দিনের মধ্যে ধান কেনা শুরু করতে পারব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।