Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্মাণ কাজে কচ্ছপ গতি

মুন্সীগঞ্জ-কেরানীগঞ্জ রুটের মোল্লারহাট সেতু

মো. আব্দুল গনি, কেরানীগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঢাকার কেরানীগঞ্জে কোন্ডা ইউনিয়নের মোল্লারহাট সেতুর নির্মাণ কাজের কোন গতি নেই। নির্মাণ কাজের মেয়াদ প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছলেও সেতুর নির্মাণ কাজ এগুচ্ছে কচ্ছপ গতিতে। এতে নদীর দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌছেছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ সঠিক সময়ে শেষ না হওয়ায় নদীর দুই পাড়ের মানুষকে ঝুঁকি নিয়েই নিত্যদিন খেয়া পারাপারের মাধ্যমে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, টুঙ্গীবাড়ি, লৌহজং উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জ সদর এলাকার মানুষ যাতে কেরানীগঞ্জ হয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে রাজধানীর সাথে যোগাযোগ করতে পারে সেজন্য কোন্ডা ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকায় ধলেশ্বরী শাখা নদীর ওপর ২০১৮ সালের ১৮ জুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২৫২ মিটার দৈর্ঘ এবং ১০ মিটার প্রস্থের এ সেতুটির নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৪২ হাজার ২৮৪ টাকা। সুরমা এন্টরপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর।
সরেজমিনে দেখা যায়, মোল্লারহাট এলাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. ফজলুর রহমান ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি। অফিসের পাশেই নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র পড়ে আছে। সেতুর ৮টি পিলারের মধ্যে ২টি পিলারের আংশিক কাজ হয়েছে। সেখানে কচ্ছপ গতিতে ৪/৫জন নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছেন, যা মানুষের চোখে পড়ার মতো নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা জানান, এ পর্যন্ত ৪/৫ বার সেতুর ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। সেতুর দুই পাড়ের জমি অধিগ্রহণ নিয়েও জটিলতা ছিলো। এতে নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে এগুচ্ছে। এছাড়া চাহিদা মোতাবেক অর্থ বরাদ্ধ না থাকায় নির্মাণ কাজ প্রায় মুখ থুবরে পড়েছে। নদীর উভয় পাড়ের একাধিক মানুষ জানান, দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় হাউজিং কোম্পানিসহ কয়েকটি হাউজিং কোম্পানি ওইসব এলাকায় কম দামে জমি কেনার জন্য সেতুর নির্মাণ কাজে ষড়যন্ত্র করছে।
কোন্ডা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড মেম্বর ইকবাল আহমদ নিবির বলেন, মোল্লারহাট সেতুটি নির্মিত হলে কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান, টুঙ্গীবাড়ি, লৌহজং উপজেলাসহ মুন্সীগঞ্জ সদরের সাথে যোগাযোগ সহজ হবে। খুব সহজেই ওইসব এলাকার মানুষ ঢাকা শহরে যাতায়াত করতে পারবে। কেরানীগঞ্জের মানুষও কম সময়ে মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় যাতায়াত করতে পারবে।
বক্তার চরের বাসিন্দা ও ঢাকা জেলা যুবলীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ধলেশ্বরী শাখা নদীর উপর মোল্লারহাট সেতুটি কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের সাথে সেতু বন্ধন তৈরি করবে। এতে রাজধানী থেকে এই বেতকা হয়ে খুব কম সময়ে মুন্সীগঞ্জ সদরে যাওয়া যাবে।
সিরাজদীখানের বালুরচর ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি আলেক চান মুন্সী বলেন, মোল্লারহাট সেতুটি নির্মিত হলে সিরাজদীখানের ১৪টি ইউনিয়নবাসীর জন্য আশির্বাদ হবে। আমরা অল্প সময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবো। মুন্সীগঞ্জ সদরসহ টুঙ্গীবাড়ি ও লৌহজং উপজেলার মানুষজনও অতিসহজে এই সেতু দিয়ে কেরানীগঞ্জ ও রাজধানীতে যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া সড়কে চাপ কমবে। তাই আমরা দ্রæত মোল্লারহাট সেতুটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাজাহান আলী বলেন, করোনাকালীন সময় ও বর্ষার কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকে। তাছাড়া নদীর স্রোতের কারণে একটি পিলারের সমস্যা হওয়ায় সাময়িকভাবে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় এবং পানি কমে যাওয়ায় এখন সেতুর কাজ শুরু হয়েছে। সেতু নির্মাণের মেয়াদ আবারো বাড়ানো হলে দ্রুত সময়ে সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেব নাথ বলেন. মোল্লারহাট সেতুটি নির্মিত হলে এটি কেরানীগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে। সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের এই সেতুটি একটি উৎকৃষ্ট উদাহারণ। সেতুটি নির্মিত হলে সেতুর উভয় পাড়ে গড়ে ওঠবে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এতে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ