Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রায়হান হত্যা মামলা : তদন্ত কর্মকর্তা বদল

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২০, ১২:১৫ এএম

হত্যা, মামলা
করোনার কারণে বদল হলেন রায়হান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এখন চাঞ্চল্যকর এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন সিলেট পিবিআই’র ইন্সপেক্টর আওলাদ হোসেন। গত বুধবার থেকে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় তদন্তের কাজ শুরু করেছেন তিনি।

এদিকে, রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী শেষ সাইদুর রহমানের উপর একটি প্রতারণা মামলা দায়ের হয়েছে এসএমপির কতোয়ালী থানায়। এছাড়া, নতুন উদ্যোমে ইমেজ ফেরাতে নড়েচড়ে উঠেছে এসএমপি। নবাগত কমিশনার নিশারুল আরিফ সেই পথে হাটতে শুরু করেছেন এসএমপিকে নিয়ে।
গত রোববার রাতে রায়হান হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট পিবিআই’র ইন্সপেক্টর মহিদুল ইসলামসহ পিবিআই’র দু’জন পরিদর্শক, একজন সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও দু’জন কনস্টেবল আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এ অবস্থায় একদিন পর গত মঙ্গলবার মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আওলাদ হোসেনকে। তবে এরই মধ্যে মামলার পূর্বের তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মহিদুল ইসলাম তদন্তের অগ্রগতি অনেক দূর এগিয়ে রেখেছেন। ইতোমধ্যে ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৪ জনকে গ্রেফতার ও আটক পুলিশ সদস্যদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
এদিকে, সেই রাতে রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারী শেখ সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়েছে। সৌদি রিয়াল দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সোমবার রাতে সাইদুরের বিরুদ্ধে মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন প্রাইভেটকার চালক নগরীর লন্ডনি রোডের বাসিন্দা আফজাল হোসেন আলাল।

মামলার এজাহারে উল্লেখ হয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর আসামি শেখ সাইদুর রহমান নিজেকে লেপ-তোষকের ফেরিওয়ালা সুমন বলে পরিচয়ে সৌদি আরবের রিয়াল ভাঙানোর কথা বলে। এ সময় আলালের (বাদি) কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে রিয়ালের বদলে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার কাগজ দিয়ে রিয়ালের বান্ডিল বানিয়ে প্রতারণা করেন শেখ সাইদুর। এর আগে গত গত ২৫ অক্টোবর সাইদুরকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পিবিআই।

পুুলিশ জানায়, সাইদুরের ছিনতাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ১১ অক্টোবর রাতে রায়হানকে নগরীর কাষ্টঘর থেকে ধরে নিয়ে আসে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। পরে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে গত ১১ অক্টোবর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকালে মৃত্যু হয় রায়হানের। রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃত রফিকুল ইসলামের পুত্র। নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন তিনি।

এ ঘটনায় গত ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখিয়ে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। গত ১৪ অক্টোবর মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ মামলাটির তদন্ত ন্যস্ত করা হয় পিবিআইতে। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর পরিদর্শনসহ নিহত রায়হানের বাড়িতে যান। এমনকি লাশ কবর উত্তোলন করে ২য় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়।

রায়হান আহমদ মৃত্যুর ঘটনায় অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে মহানগর পুলিশ। রায়হান হত্যা ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই আকবরকে নিয়েই মূলত জনতার আন্দোলন শুরু হয়, পরোক্ষভাবে নগর পুলিশের ব্যর্থতার বিরুদ্ধেও। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরব ভ‚মিকা পালন ছাড়া কিছুই করার ছিল না পুলিশকে। এসবের মধ্যেই এসএমপিতে যোগ দেন কমিশনার নিশারুল আরিফ। কর্মক্ষেত্রে যোগদানের আগেই ছুটে যান নিহত রায়হানের বাড়িতে তিনি। অসঙ্কোচ চিত্তে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেন পরিবারের সদস্যদের। আকবরকে ধরতে গঠন করেন বিশেষ আলাদা তিনটি টিম। এছাড়া কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন সকলকে। কোনো অন্যায় না করার হুশিঁয়ারি দেন তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ