পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে-ই জয়ী হোক না কেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করে যাবে বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভার্চুয়াল সংগীতানুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মিলার এ কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রতিবারই ঢাকায় সরাসরি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার করোনা মহামারির কারণে সরাসরি অনুষ্ঠান না করে ফেসবুকে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যিনিই জয়ী হোন না কেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এবং বিশ্বের মঙ্গলের জন্য আমাদের দুই মহান রাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করা অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বছর উদযাপিত হচ্ছে। বাংলাদেশ তার গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার বহিঃপ্রকাশের সুযোগ পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে তা করছেন।
জন এফ কেনেডিকে উদ্ধৃত করে মিলার বলেন, আমরা আমাদের দেশকে অতীত ও বর্তমানের জন্য ভালোবাসি না, আমরা ভালোবাসি ভবিষ্যতে সবাই মিলে কী করতে পারি, তার জন্য। এটি বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র-দুই দেশের জন্যই প্রযোজ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু প্রেসিডেন্ট নন, কংগ্রেসের আসন, স্টেট গভর্নর, শতাধিক স্টেট সিনেটর ও রিপ্রেজেন্টেটিভ, জাজেস, মেয়র ও ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি পদে নির্বাচন হচ্ছে। তার মতো যারা জাতীয় এই আলোচনা ও রাজনৈতিক নাটক পছন্দ করেন, তাদের জন্য ভোটের দিনটি বড়দিনের সকালে শিশুদের ঘুম থেকে ওঠার মতো। এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা ছিল বরাবরের মতোই জোরালো ও তীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত তার দেশের বিভিন্ন সময়ে প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালনকারীদের ওই পদে দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডায়াইট আইসেনহাওরের কাছে হেরে যাওয়ার পর অ্যাডলাই স্টিভেনসন বলেছিলেন, ‘একজন আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, পথে নেমে এসে আমার কেমন লাগছে? আব্রাহাম লিংকনকে নিয়ে আমার শহরের লোকজন যা বলত, তা তখন আমার মনে পড়ছিল। নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ার পর তার (আব্রাহাম লিংকন) কেমন লাগছিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি (আব্রাহাম লিংকন) বলেছিলেন, তার মনে হচ্ছিল যে ছোট্ট শিশুর মতো তার পা অন্ধকারে কোথাও আটকে গেছে। তিনি বলছিলেন, কান্না করার মতো বয়সও তার নেই। আবার এতটা আঘাত পেয়েছেন যে তিনি হাসতে পারছেন না।’
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, তিনি গত সোমবার ডেভিড ম্যাককুলারের বই ‘দি অ্যামেরিকান স্পিরিট’ পড়ছিলেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের নিয়ে চমৎকার একটি অধ্যায় আছে। ব্যতিক্রমী কিছু ছাড়া বেশির ভাগ প্রেসিডেন্ট যেভাবে তাদের দায়িত্ব নিয়ে বেশ ভালোভাবেই অভিযোগ করেছেন এবং দায়িত্ব পছন্দ না করার কথা জানিয়েছেন, তা আমার কাছে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে।
মিলার বলেন, ম্যাককুলার লিখেছেন, খুব শুরু থেকেই এমনটি হয়েছে। জর্জ ওয়াশিংটন সরকারপ্রধান হিসেবে তার স্থানে গিয়েছেন লোকজনকে নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, এই অভিষেক যাত্রা একজন অপরাধীকে মৃত্যুদÐের জন্য নিয়ে যাওয়ার মতোই।
মিলার বলেন, ওয়াশিংটনের উত্তরাধিকারী জন অ্যাডামস তার স্ত্রী অ্যাবিগেলের কাছে নিজের অভিষেকের বর্ণনা দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এটি সত্যিই এক জাঁকজমকপূর্ণ দৃশ্য ছিল। জেনারেল ওয়াশিংটনের চেহারা ছিল ওই দিনটির মতো নির্মল ও নির্মেঘ। এটিই বরং আমাকে বেশি প্রভাবিত করেছিল। আমি ভেবেছিলাম, তিনি যেন বলছেন, আমি ভালোভাবেই বাইরে এসেছি। আর আপনি ভালোভাবে ভেতরে এসেছেন। দেখুন, কোনটি বেশি আনন্দের।’
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানান, প্রেসিডেন্সি নিয়ে থমাস জেফারসনের বিখ্যাত উক্তিটি ছিল, ‘দুর্দান্ত দুর্দশা’। অ্যান্ড্রæ জেফারসন প্রেসিডেন্সিকে বলেছিলেন, ‘মর্যাদাপূর্ণ দাসত্ব। পোল্ক (জেমস কে পোল্ক) বলেছিলেন, প্রেসিডেন্সি ‘পুষ্পশয্যা’ ছিল না। আব্রাহাম লিঙ্কন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে অযোগ্য মনে করেছিলেন। ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট যখন বয়সে অত্যন্ত তরুণ তখন তার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভেন্ডের সাক্ষাৎ হয়েছিল। রুজভেল্টকে গ্রোভার ক্লিভেন্ড বলেছিলেন, ‘বালক, আমি আশা করি যে তুমি কোনো দিন প্রেসিডেন্ট হবে না।’
মিলার বলেন, হ্যারি ট্রæম্যান হোয়াইট হাউসকে ‘বিশাল সাদা কারাগার’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। জেনারেল আইসেনহাওয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে যাচ্ছেন-এমনটি দেখে হ্যারি ট্রæম্যান বলেছিলেন, তিনি এখানে বসবেন এবং তিনি বলবেন,‘এটি করো, ওটা করো’। এবং এতে কিছুই হবে না। দুর্ভাগা আইক (আইসেনহাওয়ার)-এটি ( (প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন) মোটেও সেনাবাহিনীর মতো না। তার কাছে এটি খুব হতাশাজনক মনে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, কেবল থিয়েডোর রুজভেল্ট প্রকাশ্যে তার দায়িত্বকে ভালো লাগার কথা বলেছিলেন। ‘প্রেপসিডেন্সিকে আমার মতো কেউ উপভোগ করেননি’-তিনি গর্ব করে বলেছিলেন এবং এর পক্ষে সব প্রমাণই ছিল। রুজভেল্ট বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি যখন দায়িত্ব পালন করছি, তার অর্থ হলো আমি জোর দিয়েই প্রেসিডেন্ট হয়েছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।