Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হুমকির মুখে তিন শতাধিক পরিবার

টাঙ্গন নদীর ভাঙন

রুবাইয়া সুলতানা বানী, ঠাকুরগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

টাঙ্গন নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ২নং কোষারানীগঞ্জ ইউপির কোষাবন্দরপাড়া গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা, বাঁশঝাড়, গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ বেশকিছু বাস্তভিটা। ভাঙন ঠেকাতে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন, নদীর তীর রক্ষায় একটি প্রকল্প উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পীরগঞ্জ উপজেলার কোষারানীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, তার ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙ্গন নদীর ভাঙনে কোষাবন্দর গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার হুমকির মধ্যে রয়েছেন। কয়েক বছর ধরে নাকটি ব্রিজের সতীরঘাট থেকে কোষাবন্দর গোরস্থান পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নদীর ডান তীর ভেঙে গেছে। প্রতি বছর বর্ষায় নদীর পাড় ভাঙছে। এরই মধ্যে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা, গাছপালা, বাঁশঝাড় এবং ৭/৮টি বাড়ি নদীতে মিশে গেছে। এবারের বন্যায় তিনটি বাড়ি নদীতে চলে গেছে। শতাধিক বাড়ির মানুষ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে এমন একটা অবস্থায় এসেছে যা বলার ভাষা নেই বলে মন্তব্য বলেন ওই জনপ্রতিনিধি। তিনি আরও বলেন, এলাকার বাসিন্দারা বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকে। নদীর পাড় রক্ষা করার মতো সামর্থ্য ইউনিয়ন পরিষদের নেই। ক্ষতিগ্রস্তদের রিলিফ দিয়ে সহায়তা করা ছাড়া তারা কিছু করতে পারছেন না। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরকে জানানো হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম জানান, গত বন্যায় ওই এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনটি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের তালিকা করে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা বিধবা আহেদা বানু জানান, এবারের শেষ বন্যায় পইশানজুসহ তিনজনের বাড়ি নদীতে চলে গেছে। তার অন্যান্য ঘর নদীতে ভেঙে গেছে। একটি মাত্র মাটির ঘর অবশিষ্ট আছে। সেটিও ভাঙার পথে। এটি নদীতে চলে গেলে তার মাথা গোঁজাবার মতো আর কোনো ঠিকানা থাকবে না। মোহাম্মদ নামে এক বৃদ্ধ জানান, নদী ভাঙার কারণে স্থানীয় গোরস্থানে যাওয়া যায় না। কেউ মারা গেলে লাশ নিয়ে যেতে খুব কষ্ট হয়। দুই কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। রায়হান আলী জানান, জনপ্রতিনিধি, সরকারি দফতরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরছি কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘আমরা ভাঙন কবলিত এলাকার একহাজার মিটার জুড়ে সীমানা নির্ধারণ করে কারিগরি কমিটি করে দিয়েছি। তারা তদন্ত করছে, আশা করি নভেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট পাবো। সেই রিপোর্টের আলোকে আমরা প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। তারপর এ কাজের অর্থ বরাদ্ধ এলে কাজ শুরু হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ