বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রায়হান হত্যা ঘটনায় ঝড় উঠেছিল সিলেট মহানগর পুলিশে কার্যক্রম নিয়ে। কিন্তু এর পূর্বে এমসি কলেজে গণধর্ষন ঘটনা সহ পরবর্তী কর্মকান্ড নিয়েও ব্যর্থতার চিত্র প্রকাশ্যে হয়ে উঠে। বিশেষ করে গণধর্ষন ঘটনাকারীদের সাথে আপোষরফার চেষ্টায় সমালোচিত হয় স্থানীয় পুলিশ। এরপর সেই আসামীদের পাকড়ায়ে বিশেষ দক্ষতা দেখায় জেলা পুলিশ ও র্যাব। জেলা পুলিশ সুপারের পেশাগত আচরন ও মানবিক বিষয় সমূহ সিলেট বাসীর নিকট আস্থা ও ভরসার অনন্য এক প্রতীক। এমতাবস্থায়ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন থানায় কর্মরত অফিসার ইনচার্জদের কর্মকান্ডে বিষিয়ে উঠেছে সাধারন মানুষের জীবন। বিশেষ করে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জর আইনের শপথে সহযোগী হয়ে উঠছেন স্থানীয় রাজনীতিক বলয়ের সুবিধাভোগী চক্রের । ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহে পরিণত হয়েছেন এ অফিসার ইনর্চাজ। এরমধ্যে দিয়ে নিজদের চেয়ার পাকাপোক্ত রাখায় ব্যস্ত তিনি। তার কারনে জেলা পুলিশের সমৃদ্ধ ইমেজে এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তারপরও তিনি বেপরোয়া, কারন তিনি সিলেটি, ক্ষমতাসীন রাজনীতিক দলের শীর্ষ নেতাদের আর্শিবাদ তার মাথায়। তাই দুষ্টের দমন নয়, বরং লালনেই তিনি করিৎকর্মা।
স্থানীয় গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদের ব্যাপারে পুলিশ কমপ্লে¦ন সেলে এক অভিযোগে এমন তথ্য তুলে ধরেছেন ব্যবসায়ী ও মোহজির প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম রফিক। গত রোববার ই-মেইল যোগে প্রেরিত অভিযোগে রফিকুল ইসলাম রফিক জানান, আইন ও আদালতে নির্দেশনা রক্ষায় অসহযোগীতার মাধ্যমে বেআইনী কার্যকলাপে জড়িত চক্রের সাথে ব্যবসা বানিজ্যে জড়িয়ে, চাঁদাবাজি সহ কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করছেন সিলেট গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদ। গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ বিএনপি-জামাত ঘনিষ্ট। তার ছাত্রজীবন, চাকুরী নিয়োগকাল বিবেচনা করলে তা প্রমাণ হবে। গ্রামের বাড়ী মৌলভীবাজার কিন্তু লেখাপড়া সহ এখন পর্যন্ত সিলেটে তিনি। আতœীয় স্বজন সহ তার জীবন ঘনিষ্ট সব কিছুই সিলেটে। সেকারনে পুলিশী চাকুরীর সুবাধে নিজস্ব পরিচয়-পরিচিতি কাজে লাগিয়ে সিলেটে গড়ে তুলেছেন তার রাজত্ব। সরকার দলীয় স্থানীয় কতিপয় লুটেরাদের সাথে হাত মিলিয়ে ব্যবসায়ীক পার্টনার ও চাঁদাবাজীর মাধ্যমে টাকার পাহাড় গড়ে তোলছেন ওসি আহাদ। আইনমান্যকারী সাধারন লোকদের অসহযোগীতা ও হয়রানী করছেন প্রতিনিয়ত। এর বিনিয়য়ে অপরাধী, বালু পাথর খেকো চক্রের ব্যবসায়ীক পার্টনার ও তাদের সাজানো ছকে চাঁদাবাজী চালিয়ে যাচ্ছেন গোয়াইনঘাট এলাকায়। আইনী পোষাকে আইনকে অসহায় করে ওসি আহাদের বেপরোয়া কর্মকান্ডে এখন নিরূপায় গোয়ানঘাটের সাধারন মানুষ। এমনকি আদালতে নির্দেশনার আদেশ দেখিয়ে সহযোগীতা প্রার্থনা করলেও নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেন তিনি। এমনকি আমাদের তাচ্ছিল্য করে বলেন, রায়ের কপি ভিজিয়ে পানি পান করেন, না পারলে উচ্চ আদালতকে বলেন, তারা যেন এসে তাদের হুকুম রক্ষা করে। কিন্তু জনশ্রুতি রয়েছে, অবৈধ এ চক্রকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করেন ওসি আহাদ। চোরাকারবারীদের নিকট থেকে মাসিক বখরা সহ আমাদের জায়গায় অবৈধভাবে পাথর ও কয়লা ডাম্পিং করে কোটি কোটি টাকার চাঁদাবাজি করছেন তিনি। কারন আদালতের নির্দেশনা আমাদের পক্ষে, পক্ষের লোকদের নিকট থেকে অবৈধ টাকা রুজি সম্ভব নয় তার, সেকারনে অবৈধ চক্রকে সহযোগীতা করে নিজকে লুটপাটে জড়িয়ে নিয়েছেন ওসি আব্দুল আহাদ। আইন ও আদালতে প্রতিকার প্রার্থীরা ওসি আহাদের নিকট কত অসহায় তার প্রমান আমরা। তারপরও রহস্যজনক কারনে সিলেট জেলায় শ্রেষ্ট ওসি নির্বাচিত হয় ওসি আব্দুল আহাদ। যদি ওসি আহাদের মতো লোক শ্রেষ্ট ওসি হয় তাহলে, শ্রেষ্ট শব্দটির অপমান ছাড়া কিছুই নয়। বেআইনী নিকৃষ্ট কাজ ও আইনী শপথের সাথে বেইমানীর পর কিভাবে শ্রেষ্ট হয় ওসি আহাদ, এই প্রশ্ন সচতেন মহলে। জনগনের জান মালের নিরাপত্তার বদলে, অবৈধ লুটেরা চক্রের সাথে আঁতাত করে ওসি আহাদ প্রতিনিয়ত আদালতের নির্দেশনা ও সাধারন মানুষের অধিকারকে তামাশায় পরিণত করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় মোহাজিরদের অধিগ্রহনকৃত জমি সীমানা চিন্থিত করে স্থাপিত সাইনবোর্ড প্রকাশ্যে ভাঙ্গিয়ে নেয়ার ঘটনায় একাধিকবার অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি ওসি আহাদ। উল্টো আমাদের বসবাসকৃত জমিতে আমাদের স্বাভাবিক কর্মকান্ড থামিয়ে চাঁদাবাজ ও অবৈধ দখলবাজ চক্রকে সহযোগীতায় ব্যস্ত বিলিয়নার ওসি আহাদ। তার কারনে মানুষ আদলতের নির্দেশনা নিয়ে অসহায় হয়ে ঘুরছে দ্বারে দ্বারে। যেখানে বাদী পক্ষ ফায়দা লাভের অধিকার সেখানে আইনী অসহযোগীতার মাধ্যমে অবৈধভাবে সুযোগ নিয়ে নিজের অর্থভান্ডার বড় করছেন ওসি আহাদ ও রাজনীতিক ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজ বাহিনী। কানাইঘাট থানায় চাকুরীকালীন সময়ে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে ৪৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের সহযোগীতায় ৪৫ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন ওসি আব্দুল আহাদ। সিলেটের আলোচিত ওসি আহাদ সহ তার সহযোগী ৮জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর। সিলেটের স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করে আইনজীবী এম মঈনুল হক বুলবুল। এছাড়া বেআইনীভাবে পুলিশ নির্ভর ক্ষমতা ব্যবহার করে জাফলং বালু নদীর বালু মহাল, মুখতুলা বাংলাবাজার বালু মহাল, বল্লাঘাট বালু মহালের বালু দেদারচ্ছে বিক্রি করেন। এমনকি জাফলং নদীর মুখতলা ষ্টেশনে বালু বোঝাই কার্গো থেকে সপ্তাহে ৫ লাখ টাকা হারে চাঁদাবাজী করে পকেটস্থ করেন ওসি আহাদ। এছাড়া প্রতি বালু ভর্তি কার্গো বিক্রি করা হয় ৫ লাখ টাকা। প্রতিদিন তিনটি বালু মহাল থেকে অন্তত ২০টি কার্গো ভর্তি বালু বিক্রি করা হয়। প্রতিটি কার্গো বিক্রিত বালু থেকে আদায় করেন ২০ ভাগ অর্থ। অথাৎ ২০টি কার্গোর মাধ্যমে বিক্রিত বালু বাবদ তার চাঁদাবাজী ১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন ওসি আব্দুল আহাদ। এছাড়া, সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে মোবাইল সহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ পূণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। চোরাচালানী চক্রের সাথে তার আঁতাত থাকায়, চোরাচালানের নিরাপদ ঘাট এখন গোয়াইনঘাট সীমান্ত এলাকা। চোরাচালানবাবদ প্রতিদিন ৩ লাখ টাকা বখরা নেন তিনি। গোয়ানঘাট এলাকায়, দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট, জাফলূম সারি ঘাট, শ্রীরপুর, বিছানকান্দি, রাতারগুল। এসব স্পট ঘিরে চোরাকারবারী ও মাদক, জুয়া সহ অপরাধীদের আস্থানা গড়ে উঠেছে। সেখান থেকেও নিয়মিত বখরা নেন তিনি। এছাড়া, ঘুরে ফিরে পুলিশের সিলেট রেঞ্জেই চাকুরী করে যাচ্ছেন এসআই পদ থেকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদা নিয়ে গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আহাদ। বিএনপি জামাতের আমলে যেমন প্রভাব খাটিয়েছেন, তেমনি বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও। দলের স্থানীয় সুবিধাভোগী লুটেরা চক্রকে বেআইনী সহযোগীতার মাধ্যমে। এসআই হিসেবে সিলেট কতোয়ালী থানা, হবিগঞ্জে, ইন্সপেক্টর হিসেবে সিলেট ডিবি পুলিশে, কানাইঘাট থানা পুলিশ পর এখন গোয়াইনঘাট থানায়। যেখানে পোষ্টিং হয়েছে সেখানেই হাত মিলিয়েছেন শাসক দলের স্থানীয় কিছু লুটপাটকারী চিন্থিত লোকদের সাথে। এদিকে কানাইঘাট থানায় দায়িত্বকালে ওসি আহাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন: সিলেটের কানাইঘাট থানার ওসির বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবিরকে প্রশ্রয় দিয়ে নিরীহ মানুষকে মিথ্যে মামলায় হয়রানী অভিযোগ উঠে। এরইপেক্ষিতে উপজেলার পারচরি পাড়া গ্রামের মো. আব্দুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে ওসি আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ তোলার পর ২০১৮ সালের ৩১ মে গাছবাড়ি এলাকায় এক মানববন্ধনে একই অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। এছাড়া কানাইঘাট থানাধীন লোভাছড়া পাথর কোয়ারী ও তৎসংলগ্ন নদী থেকে পাথর বোঝাই কার্গোতে চাঁদাবাজীর মাধ্যেমে শত কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।