পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে বিপুলসংখ্যক তরুণ যুবক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। আর্থিক দুর্বিপাকে পড়া পরিবারকে সহায়তা করতে তাদের ২৮ শতাংশ পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আয় কমে গেছে ৮০ শতাংশের। আয়ের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্রও রয়েছে। এই সঙ্কটেও ১২ শতাংশের আয় বেড়েছে।
গতকাল রোববার ‘কোভিড-১৯ ও বাংলাদেশ আর্থসামাজিক পুনরুজ্জীবনে যুব এজেন্ডা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে এ তথ্য তুলে ধরে বেসরকারি সংগঠন এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ। সংগঠনটি অক্টোবর মাসে এক হাজার ১৬৩ জনের ওপর অনলাইনে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করে। ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৬৩ জন পুরুষ, ২৯৯ জন নারী এবং ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের। করোনা মহামারির কারণে প্রযুক্তিগত বৈষম্য, শিক্ষা ও দক্ষতা এবং কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে বলা হয়, নারীদের মধ্যে ৮ শতাংশ বিয়ের কারণে পড়াশোনা ছেড়েছে। আর পরিবারকে সহায়তা করার জন্য ছেড়েছে ১৩ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে এটি ৩২ শতাংশ।
দুই-তৃতীয়াংশ ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। কোভিডে তরুণ ও যুবকদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। ৯৬ শতাংশ জানিয়েছেন তারা নানা ধরনের মানসিক অবসাদে ভুগছেন। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশের অবসাদ বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। অনলাইনে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে যুক্ত নেই ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
অনুষ্ঠানের সহআয়োজক ছিল জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ, একশনএইড বাংলাদেশ, ফ্রেডরিক ইবার্ট স্টিফটুং বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, ওয়াটার এইড বাংলাদেশ এবং সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। জরিপ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির কর্মসূচি সহযোগী তামারা-ই-তাবাসসুম।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আলোচনায় অংশ নিয়ে নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন নারী ও যুব নেতৃত্ব, উদ্যোক্তা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, দলিত, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, ধারণা করা যাচ্ছে করোনাকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পলিটেকনিক, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ১০ থেকে ১৫ শতাংশের পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষ কর্মশক্তি তৈরির জন্য কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারে নিয়ে আসতে হবে। সংকটকালে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দিতে শর্ত সাপেক্ষে আগামী ছয় মাসের বেকার ভাতা দেওয়া যেতে পারে তরুণ ও যুবকদের।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক ও সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যুবসমাজের একটি অংশ শিক্ষা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন তৎপরতায় সক্রিয় রয়েছে। অপর একটি অংশ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। কেউ মাদকে যুক্ত, কেউ অবসাদে ভুগছেন। তাই অখন্ড নয়, বিভাজিতভাবেই যুবাদের দেখতে হবে এবং তাঁদের কীভাবে সক্রিয়ভাবে কর্মসংস্থানে যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনের কোর গ্রুপের সদস্য এবং সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাকালে শহর ও গ্রামের মধ্যে এবং নারী-পুরুষ-তৃতীয় লিঙ্গের মধ্যে ত্রিমাত্রিক লিঙ্গবৈষম্য দেখা দিয়েছে। এই বৈষম্যগুলো শনাক্ত করে বাজারের চাহিদার সঙ্গে দক্ষতার সমন্বয় কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে হবে।
অনুষ্ঠানে উঠে আসা আলোচনার একটি সারসংক্ষেপ করে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।