বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মহাসড়ককে যানজট মুক্ত রাখতে খুব শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেড়ামারা লালন শাহ সেতু পর্যন্ত চার লেনের কাজ। এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৯ কোটি টাকা। ইতোমধ্যেই প্রকল্পটির টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটি তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বটতৈল থেকে ত্রীমোহনী মোড় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার হবে চার লেন এবং ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বটতৈল পর্যন্ত ও ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ত্রীমোহনী থেকে লালন শাহ সেতু পর্যন্ত ২ লেনের কাজ করা হবে। প্রস্তাবিত এই চার লেন সড়কে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির মুর্যাল তৈরি করা হবে বলেও জানা গেছে।
পরিকল্পনা বিভাগের এনইসি একনেক ও সমন্বয় অনুবিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান তাহমিনা তাছলীম স্বাক্ষরিত এক পত্রে জানা গেছে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই এই চার লেনের কাজ শুরু হবে।
২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর একনেক সভায় ৫৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের কুষ্টিয়া শহরাংশে চার লেনের উন্নীতকরণ প্রল্পটি উপস্থাপন করা হয়।
একই বছরের ১০ ডিসেম্বর প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়কের কুষ্টিয়া শহরাংশ চার লেনে উন্নীতকরণ শীর্ষক সম্পূর্ণ প্রকল্পটি জিওবি অর্থায়নে ৫৭৪.১৬৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৩১ জুলাই ২০১৯ থেকে ৩০ জুন ২০২২ সালের পরিবর্তে ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কুষ্টিয়া শহরাংশে চার লেনে কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল থেকে মজমপুর গেট হয়ে ত্রীমোহনী মোড় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে বৃক্ষরোপন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজের গুণগত মান রক্ষায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে মর্মে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া মহাসড়কের বটতৈল থেকে ত্রীমোহনী মোড় পর্যন্ত সড়কের দুপাশে ২০ কিলোমিটার ড্রেন ও ফুটপাতও থাকবে। সড়কের মাঝে ডিভাইডার, লাইট, ফুলের বাগান এবং মজমপুর গেটে ট্রাফিক আইল্যান্ডের পরিবর্তে থাকবে মানুষবিহীন অত্যাধুনিক অটো সিগন্যাল। এ প্রকল্পের দাপ্তরিক কাজ ইতোমধ্যেই শেষ করা হয়েছে।
এদিকে বটতৈল থেকে ত্রীমোহনী মোড় পর্যন্ত বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সড়কের কোল ঘেষে রয়েছে গাছপালা, আবাসিক বাড়ি, মার্কেট ও বহুতল ভবন। মজমপুর গেট থেকে ত্রীমোহনীর মধ্যে রয়েছে পুলিশ লাইন, জেলা ও দায়রা জজের বাসভবনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এছাড়াও বটতৈল থেকে চৌড়হাস, উপজেলা মোড়, কাষ্টমস্ মোড়, মজমপুর গেট, মঙ্গলবাড়িয়া ও ত্রীমোহনী মোড়সহ এই ১০ কিলোমিটার সড়কের কোল ঘেষে রয়েছে কয়েক হাজার দোকান, আবাসিক ভবনসহ বেশ কিছু স্থাপনা।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক জানান, পুরো কুষ্টিয়া জেলাকে জাতীয় মহাসড়কে অর্ন্তভুক্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া সওজ বিভাগ কাজ করে আসছে। ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শেষ হয়েছে। একই সাথে কুষ্টিয়া মেহেরপুর, কুষ্টিয়া-পাকশী-দাশুরিয়া-কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়কের কাজের সাথে সাথে কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল থেকে মজমপুর গেট হয়ে ত্রীমোহনী মোড় পর্যন্ত চার লেনের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই শুরু হচ্ছে। এ জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩শ ৫ কোটি টাকা।
তিনি জানান, সড়কের পাশে বৃক্ষরোপণ, মাঝে ডিভাইডার, মোড়ে অটো সিগনাল, মজমপুর গেট মোড়ের প্রশস্ততা বৃদ্ধিসহ ১০ কিলোমিটার সড়কটি বর্তমানের ৩৪ ফিটের পরিবর্তে ৭৮ ফিটে উন্নীতকরণ করা হবে। দুপাশে ২০ কিলোমিটার ড্রেন ও ফুটপাত থাকছে। এ ছাড়া মজমপুর গেটে দুটি মনুমেন্ট থাকবে তার মধ্যে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন শাহ, কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৬ জনের মুর্যাল থাকবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিগত সরকারের সময়ে কুষ্টিয়া সব দিক থেকেই উন্নয়নে পিছিয়ে ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশেই উন্নয়ন শুরু করেছেন। এ জেলাকে এগিয়ে নিতে হলে আরও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দররকার। সে লক্ষ্যে খুব দ্রুতই এখানে ফোর লেনের কাজ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ হলে কুষ্টিয়া শহরের সৌন্দর্য্য যেমন বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি মজমপুর গেট মোড়ের মুনুমেন্টে জাতির জনকসহ ৬ জনের মুর্যাল, ডিজিটাল সিগনাল, সড়কের মাঝে ডিভাইডারে ফুলের বাগান, অত্যাধুনিক লাইটসহ নানা স্থাপনায় পুরো জেলার চিত্র পাল্টে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।