Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাণীশংকৈলে কারেন্ট পোকা দমনে ধানের মরণব্যাধি রোধে কোমর বেঁধে নেমেছে কৃষি অফিস

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ৪:৩৮ এএম

অন্ধকার রাত গ্রাম গঞ্জের হাট বাজারের দোকান পাট প্রায় বন্ধ ও বাসাবাড়ীর মানুষ জন প্রায় শুয়ে পড়ার উপক্রম। সে-সময় হঠাৎ মাইকিং সন্মানীত আমন চাষী ভাইদের জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান আবহওয়ায় কারেন্ট পোকার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আপনার ধান খেত কারেন্ট পোকা দাড়া আক্রমণ হলে সম্পূর্ণ রুপে নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং মারাতক ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে।
এছাড়া কোন রকম ফলন না পাওয়া যেতে পারে। এ জন্য কারেন্ট পোকা দমন করতে হলে আপনার ধান খেত দু-হাত পর পর ফাকাঁ করে দিয়ে অনুমোদিত কীটনাশক দাড়া ধান গাছের গোড়ায় স্প্রে করে দিন। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার বলকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে আজই যোগাযোগ করুন। প্রচারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাণীশংকৈল। এমন মাইকিং শুনে গ্রামের অনেকে আবার ঘরের বিছানা থেকে উঠে রাস্তায় দেখছে কে এত রাতে মাইকিং করছে তা দেখতে।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে ঐ এলাকাতে কারেন্ট পোকার বিস্তার ও দমন নিয়ে প্রতিবেদনের বক্তব্য চাইলে প্রত্যক্ষদর্শী হোসেনগাঁও ইউপির ক্ষুদ্রবাশঁবাড়ী এলাকার কৃষক সুমন পাটোয়ারী এসব তথ্য জানান, তিনি আরো বলেন হঠাৎ রাতে মাইকিং শুনে রাস্তায় দেখি একটি বড় কালো রংয়ের জীপ গাড়ীতে দুজন লোক বসে রয়েছে। এতে একজন মাইকে ধান খেতে কারেন্ট পোকার উপস্থিতি,এবং দমনের পরামর্শ বলে দিচ্ছেন পাশে আরেকজন বসে রয়েছেন। কাছে গিয়ে দেখা যায় বসে থাকা লোকটি হলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ,মাইকে পরামর্শ দেওয়া ব্যক্তি হলেন.উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম কারেন্ট পোকা দমনে কৃষকদের পরামর্শে দিতে দিনের পর রাতেও এভাবেই গ্রাম গঞ্জে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথসহ তার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এছাড়াও উঠান বৈঠক মহল্লা বৈঠক এবং শুক্রবার জুম্মার দিন ইমাম সাহেবের মাধ্যমে প্রত্যেক মুসল্লির হাতে পোকা আক্রমণের লক্ষণ ও দমনে স্প্রে করার নিয়মবালীর চিরকুট বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে কাশিপুর ইউনিয়নের কার্দিহাট এলাকার কৃষক দেলোয়ার জানান, তিন বিঘা ধানি জমিতে বর্ষণের পানি জমাট বেঁধে ছিল। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পরই ধানে ব্যাপক কারেন্ট পোকার আক্রমণ হয়। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ নিজে এসে ধান খেতে কিভাবে স্প্রে করতে হবে তা আমাকে দেখিয়ে দেয়। পরে আমি ধান খেতে স্প্রে করলে কারেন্ট পোকা দমন হয়ে যায়। আর কিছুদিন নাগাদ আমি ধান কাটবো ফলনও ভালো হবে বলে আমি মনে করছি।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এবার আমনে বিভিন্ন জাতের ২১ হাজার ৪ শত ৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, উপজেলা জুড়ে এবারে আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভবনা ছিল। কিন্তু ধান রোপনের পর থেকে লাগাতার ভারী বর্ষণের কারণে রের্কডবিহিন কারেন্ট পোকা আক্রমণ শুরু করে ধান খেতে। এদিকে ধান খেতে কারেন্ট পোকা দমনে কোমর বেধেঁ নামে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্টরা দিন রাত কৃষকের পাশে থেকে সঠিক পরামর্শ দেওয়ায় বর্তমানে এ উপজেলায় কারেন্ট পোকা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। কৃষকরা আশাব্যক্ত করে বলেন, আমাদের উপজেলায় কৃষি অফিসের অক্লান্ত সহায়তায় খুব শিগগির কারেন্ট পোকা একেবারে দমন হয়ে পড়বে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, কারেন্ট পোকা দমনে কৃষকদের সহায়তা দিতে আমি ও আমার অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা- কর্মচারীরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বিশেষ করে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সরেজমিনে ধান খেত পরির্দশন করে যে ধান খেত আক্রমণ হয়েছে। তবে কৃষক বুঝতে পারেনি সে-সব খেত সনাক্ত করে স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়াও যারা গরিব পর্যায়ের কৃষক তাদের কৃষি অফিসের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কীটনাশক সরবারহ করা হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ