পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ-অস্ট্রিয়া সরাসরি ফ্লাইট চলাচলে চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ঘরের বাইরে সবার মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সচেতনামূলক পদক্ষেপের সঙ্গে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন প্রয়োগ করতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার আগের বছরের একই সময়ের থেকে ১২ শতাংশ কমেছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে মাস্ক ব্যবহার নিয়ে আলোচনায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমরা দেখছি ইউরোপ-আমেরিকায় (আবার করোনাভাইরাসের) ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন, সবাই যাতে সচেতন (কেয়ারফুল) থাকি, সবাই যেন মাস্ক ইউজ করি। বাকি কি হবে- না হবে, সেটা আনসার্টেইন বিষয়। মাস্ক যদি আমরা সবাই ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা কমে আসে। এজন্য মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করতে হবে, অনেকের মধ্যে একটু শিথিল ভাব দেখা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে বাসার বাইরে সব জায়গায় সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে সরকার। অতি সংক্রামক এ ভাইরাস প্রতিদিনই মানুষের মৃত্যু ডেকে আনলেও নানা অজুহাতে এখনও অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। জনসমাগম কোনোভাবেই মাস্ক ছাড়া যাওয়া যাবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মসজিদ, জনসমাগম স্থল, বা সামনে দুর্গাপূজা আসছে, সেসব জায়গায় কোনোভাবেই কেউ যেন মাস্ক ছাড়া না যান, তা নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভা আশা প্রকাশ করেছেন, সবাই সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহারে আরেকটু বেশি মনযোগী হবেন, তাহলে আপনা-আপনি আমরা এটা থেকে একটু রক্ষা পাব। মন্ত্রিসভার নির্দেশনা হচ্ছে, সবাই যেন মাস্ক ব্যবহার করি। রোববার কমিশনার সম্মেলন ছিল জানিয়ে আনোয়ারুল বলেন, সেখানে আমরা পরিষ্কারভাবে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে আমরা বলে দিয়েছে তারা যেন ইমামদের মাধ্যমে প্রতিদিন জোহর ও মাগরিবের নামাজের পরে মাইক বা জামায়াতের সময় বলে দেয়। বাজার, মার্কেট বা গণজমায়েতে যেখানে হয়, সেসব জায়গায় যেন একটা সেøাগানের মতো থাকে- অনুগ্রহ করে মাস্ক ছাড়া কেউ প্রবেশ করবেন না। মোবাইল কোর্ট ব্যবহারের নির্দেশনা কমিশনারদের দেওয়া হয়েছে। যেভাবে যতটুকু সম্ভব মানুষকে সব জায়গায় অনুরোধ করে, মোটিভেট করে বা ফোর্স করে যদি করতে হয়, আইন প্রয়োগ করতে হলে আইনও প্রয়োগ করবে, অসুবিধা নেই।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চলাচলে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট বিচুইন দ্য অস্ট্রিয়ান ফেডারেল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড দ্য গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ শীর্ষক চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১৬ মে ভিয়েনায় বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি অনুস্বাক্ষরিত হয়। প্রস্তাবিত চুক্তিটি স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে একটি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার মূলভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। দুই দেশের মধ্যে বিমান যোগাযোগ স্থাপিত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমবাজার, শিল্প, স্বাস্থ্য খাত ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়বে। একই সঙ্গে ইউরোপ ও অন্যান্য দেশের সাথে বিমান যোগাযোগ সহজ হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভিয়েনায় অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান কার্যালয় রয়েছে। সেজন্য এটা আমাদের জন্য সেদিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। এটা সম্পূর্ণ ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের যে চুক্তি সে অনুসারে করা হয়েছে। চুক্তির মূল বিষয়টি হলো- উভয় দেশ পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইটের সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারবে। চুক্তি অনুস্বাক্ষরের তারিখে একটি সমঝোতা স্মারকের দ্বারা উভয় দেশের মনোনীত বিমান সংস্থা সপ্তাহে সাতটি যাত্রী ও কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। কোনো ধরনের বিতর্ক হয়, তাহলে নিজেরা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবে। যদি না পারে তাহলে আরবিটেশনের সাহায্য নিতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভার ৪৬ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে মন্ত্রিসভার ৫৮ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়। বৈশ্বিক মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবের বিরূপ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিদ্যমান অগ্রগতি আগের বছরের একই সময়ের তুলানায় কিছুটা ধীর হলেও আশাব্যঞ্জক। পুরো কেবিনেট ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে, যদিও গত বছরের তুলনায় বাস্তবায়ন একটু কম আছে। সেক্ষেত্রে বাস্তব অবস্থা তো সবাই বুঝতে পেরেছে। নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কোভিড-১৯ এর জন্য যে ব্যাকলক ছিল সেটা যেন খুব দ্রæত আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রিকভার করতে পারি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে। চলতি বছরের গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৩টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। ২০১৯ সালে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২৫৮টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ২৩৮টি বাস্তবায়ন হয়েছে, বাস্তবায়নের হার ৯২ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ১৬৯টি সিদ্ধান্ত হয়। এরমধ্যে ১১৬টির বাস্তবায়ন হয়েছে, বাস্তবায়নের হার ৬৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৭টি আইন জারি করা হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন আছে ৩৩টি। নীতি, কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন হয়েছে ১৭টি। এ সময়ে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রটোকল বা অনুসমর্থন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৯টি। এছাড়া মন্ত্রিসভার জন্য ২৯৭টি সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়। মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১৫টি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। জুলাই সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে মন্ত্রিসভা বৈঠক ও গৃহীত সিদ্ধান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালের থেকে এবার তুলনামূলক বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।