Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপকূলীয় নারীদের জীবনমান উন্নয়ন

বাড়িতে পশু পালন ও সবজি চাষ

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

আশাশুনির গৃহিণীরা সংসারের কাজের ফাঁকে বাড়ির মধ্যে পশুপালন ও সবজি চাষ করে জীবনমান উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ফলে সামাজিকভাবে পরিবারকে দিন বদলের যাত্রায় সংযুক্ত করে সম্মানজনক পর্যায়ে নিতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
জানা যায়, আশাশুনি উপজেলা উপক‚লীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় লবণাক্ততায় ভরা। এখানের জীবন যাত্রা এখন লবণপানির মাছ চাষ ও কৃষি নির্ভর হলেও অনেক ভূমি এখনও পতিত থাকে। মানুষের একটি বড় অংশ কর্মহীন এবং অধিকাংশ গৃহিণীরা শুধুমাত্র গৃহস্থলী কাজ নিয়েই সময় কাটায়। এসব গৃহিণীদের মধ্যে প্রতাপনগর ইউনিয়নের নাকনা গ্রামের রঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী মলিনা এনজিও ফ্রেন্ডশিপের সহযোগিতায় বাড়ির আঙিনায় সবজিচাষ করে সংসারের চাহিদা পূরণের পরও ৫-৬ হাজার টাকার সবজি বিক্রয় করেছেন। এই টাকা থেকে ১১টি হাঁসের বাচ্চা ও ২টি রাজহাঁস কিনে ফার্ম করেছেন। খুব শিগগিরই ছাগলের বাচ্চা হবে। সবজি ও হাঁসের ডিম বিক্রয় করে সংসার খরচ ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ যোগাচ্ছেন। একই গ্রামের নিরঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী তাপসী ফ্রেন্ডশিপের দেয়া ছাগল পোষে ২ বাচ্চা পেয়েছেন। একটি বিক্রয় করে জামাইকে স্বর্ণের আংটি দিয়েছেন। সবজি বিক্রয় করে ৭০০০ টাকা পেয়েছেন। টাকা দিয়ে ২৩টি হাঁস-মুরগি কিনেছেন। আনুলিয়া ইউনিয়নের ঘাসটিয়া গ্রামের রাজু রানী সবজি বিক্রয় করে ৯০০০ টাকা পেয়েছেন। একটি ছাগলের ৪টি বাচ্চা হয়েছে। অনুপমা রানী হালদার ১টি ছাগলের ৫টি বাচ্চা পেয়েছে। সবজি বিক্রয় করে ৫০০০ টাকা পেয়েছেন। গৃহিণীরা বলেন, আমরা সংসারে স্বামীর মুখাপেক্ষী ছিলাম। প্রয়োজনীয় কিছু পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। আজ নিজেরা আয় করছি, সংসার চালানোয় অংশীদার হয়েছি। নিজেদের প্রয়োজন মেটাচ্ছি, সন্তানদের লেখাপড়া শেখানোয় ব্যয় করছি। মেয়েরা এখন সংসারে বোঝা নয়।
জানা গেছে, ঞৎধহংরঃরড়হ ঋঁহফ চৎড়লবপঃ (অঝউ) এর মাধ্যমে এনজিও ফ্রেন্ডশিপ আনুলিয়া ও প্রতাপনগর ইউনিয়নে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট ৬টি ডিএমসি কমিটি গঠন করেছে। সকল সদস্যকে একটি করে ছাগল বা ভেড়া এবং মৌসুম ভিত্তিক উন্নতমানের ২১ প্রকারের বীজ ও ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। সদস্যরা পারিবারিক শিক্ষা প্রহণ এবং পশু পালন ও সবজি চাষ করে নিজেদের খাদ্য চাহিদা ও পুষ্টি পূরণে সক্ষম হয়েছেন। সাথে সাথে আর্থিক লাভবান হয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি এলাকার অনেক নারী স্বেচ্ছায় একাজে এগিয়ে এসছে। ফলে এলাকায় সংসার উন্নয়নে নারী জাগরণ ঘটেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ