Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

বোয়ালারীতে সিঁদ কেটে কিশোরীকে নিয়ে পালিয়েছে প্রবাসী স্ত্রীর স্বামী

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২০, ৩:৪৩ এএম

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সপ্তম শ্রেণীর এক কিশোরী ছাত্রীকে সিঁধ কেটে ঘর থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের মুজুরদিয়া গ্রামে গত শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বোয়ালমারী থানার জয়নগর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রায়হান মাতুব্বর বাদি হয়ে শনিবার রাতে বোয়ালমারী থানায় একই গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে লাভলুকে (৩৮) একক আসামি করে অপহরণ মামলার জন্য এজাহার জমা দিয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী দাদপুর ইউনিয়নের কমলেশ্বরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে শুক্রবার রাতে প্রতিদিনের ন্যায় বিছানায় ঘুমিয়েছিল। মেয়ের কক্ষের বাইরে তালা দিয়ে একই ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন বাবা-মা। বাবা-মা সকালে ঘুম থেকে উঠে মেয়ের কক্ষের দরজার তালা খুলে দেখতে পায় সে ঘরে নেই। কাঁচা ঘরে দক্ষিণ পাশে সিঁধ কাটা দেখে ধারণা করে দুর্বৃত্তরা এই সিঁধ দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তাদের মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে। চাঞ্চল্যকর এ অপহরণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে।
রবিবার দুপুরে কথা হয় কিশোরীর বাবা রায়হান মাতুব্বর সাথে। এ সময় তিনি জানান, স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায় ওই মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো ও অশালীন প্রস্তাব দিত একই গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে দুই সন্তানের জনক ও সৌদি প্রবাসী স্ত্রীর স্বামী লাভলু শেখ (৩৮)। এ ঘটনায় ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানালে; তারা বিষয়টি লাভলুর পরিবারকে অবহিত করেন। এতে লাভলু আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রীসহ পরিবারকে শায়েস্তা করার জন্য। এবার সে কেবল স্কুলে যাওয়া-আসার পথে নয়; সরাসরি ছাত্রীর বাড়ির আশেপাশে অবস্থান নিতে থাকে। এমনকি বাড়ির উপরে গিয়েও তাকে মাঝে মাঝে উত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে গত দুইমাস আগে রাতে ওই ছাত্রী টয়লেটে গেলে তার হাত ধরে টানা-হেচড়া করে শ্লীনতাহানির চেষ্টা করে বখাটে লাভলু। ওই সময় ভুক্তভোগী পরিবারটি সোচ্চার হয়েও মান-সম্মানের ভয়ে চেপে যান। এরপর গত ১৬ অক্টোবর গভীর রাতে সে সিঁদ কেটে ওই ছাত্রীর কক্ষে প্রবেশ করে চেতনা নাশক দিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায় লাভলু।
সংর্শ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, লাবলু খুব দূর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। অনেকদিন ধরেই পরিবারকিকে হেনস্তা করছে লাভলু। আমি একাধিকবার সতর্ক করলেও তাতে কোন ফল হয়নি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান ওই সদস্য।
গতকাল রবিবার দুপুরে থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুর রহমান জানান, যখন নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন চলছে ঠিক সেই মুহুর্তে এমন অপরাধ মেনে নেওয়া যায় না। সরেজমিন তদন্তপূর্বক ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জয়নগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামকে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জয়নগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জানান, এটা খুবই দূঃখ জনক ঘটনা। এজাহার পেয়েছি তদন্ত চলছে। ভীকটিমকে উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ